ফিরেছে ‘সিটিং সার্ভিস’


প্রকাশিত: ০২:৫৯ এএম, ২০ এপ্রিল ২০১৭

বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটির (বিআরটিএ) ঘোষণার পর বৃহস্পতিবার সকাল থেকে রাজধানীতে আবারো শুরু হয়েছে গণপরিবহনে ‘সিটিং সার্ভিস’।

তবে আইনত বৈধতা না থাকা এ সার্ভিসে সরকার নির্ধারিত হারে ভাড়া আদায়ের কথা থাকলেও তা মানা হচ্ছে না। বরং নিজস্ব ভাড়া তালিকা মেনেই ‘সিটিং’ বাসগুলোতে ভাড়া আদায় হচ্ছে আগের মতোই; যা কোনো কোনো ক্ষেত্রে সরকার নির্ধারিত ভাড়ার তিনগুণ পর্যন্ত হচ্ছে।

বৃহস্পতিবার সকালে সরেজমিন রাজধানীর কয়েকটি রুটে এ চিত্র দেখা গেছে।

সরকার নির্ধারিত ভাড়া অনুযায়ী প্রথম ৩ কিলোমিটারের জন্য সর্বনিম্ন ভাড়া ৭ টাকা। তবে এসব বাসে সর্বনিম্ন ভাড়া আদায় করা হচ্ছে ১০ টাকা।

বাংলামোটর থেকে মালিবাগ আবুল হোটেলের দূরত্ব ২ দশমিক ৬ কিলোমিটার। মোহাম্মদপুর (বসিলা)-ডেমরা রুটের স্বাধীন পরিবহনের বাসে সেই ভাড়া নেয়া হচ্ছে ১০ টাকা। এই ভাড়ায় একজন যাত্রীর প্রায় ৫ দশমিক ৮ কিলোমিটার ভ্রমণ করার কথা থাকলেও মানা হচ্ছে না সে নিয়ম।

একই অবস্থা সায়েদাবাদ থেকে গাজীপুরগামী বলাকা ‘স্পেশালের’। বৃহস্পতিবার সকালে এই বাসে মহাখালী থেকে মগবাজার আসতে তারা ভাড়া নেয় ২০ টাকা।

কেন সরকারের এবং বিআরটিএ নির্দেশ অমান্য করে আবারো অতিরিক্ত ভাড়া নেয়া হচ্ছে? জানতে চাইলে বলাকা স্পেশালের কন্ডাক্টর জানান, আমরা কাছের যাত্রী তুলতে চাই না। তুললে সিট পূরণ দেখানোর জন্য ২০ টাকা নেই। এই নিয়মের কারণে যারা দূরে যাবে তাদের জন্য লাভ হয়। ২০ টাকা দিয়ে যাত্রী মগবাজারে নামলেও একই ভাড়ায় তিনি কমলাপুর পর্যন্ত যেতে পারবেন।

ভাড়া নিয়ে বিড়ম্বনা থাকলেও চারদিন বন্ধ থাকার পর ‘সিটিং সার্ভিস’ ফের ঢাকার পথে নামায় যাত্রীদের মুখে কিছুটা স্বস্তিও ফিরেছে। আজ অবশ্য ভাড়া নিয়ে খুব একটা অভিযোগ করছেন না যাত্রীরা।

মাজহার সৌরভ নামে এক যাত্রী বলেন, বাস মালিকরা চাইলে সবই পারেন। বাস বন্ধ রেখে আমাদের কষ্ট দিয়ে এর প্রমাণ তারা দিয়েছেন। যেহেতু বিআরটিএ তাদের সিটিং চালানোর নির্দেশনা দিয়েছে তাই এই ভাড়া দিতে আমার কোনো অভিযোগ নেই। তবে ভাড়া ও ‘সিটিং’ বিষয়ে স্থায়ী সমাধান দরকার।

রেজওয়ান আহমেদ নূর শাব্বির নামে আরেক যাত্রী বললেন, যাত্রীদের মধ্যে অনেকেই বেশি ভাড়া দিয়ে যেতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করছেন, প্রতিবাদ করছেন না। তবে বাস একটি গণপরিবহন। গণপরিবহনের ভাড়া যদি গণমানুষের নাগালের বাইরে চলে যায় তাহলে মধ্য ও নিম্ন শ্রেণির অনেককেই বিপাকে পড়তে হবে। সরকার ও বাস মালিকদের উচিৎ ন্যূনতম লাভ নিয়ে সাধারণ মানুষের সেবায় নিয়োজিত থাকা।

৪ এপ্রিল গণপরিবহনে ‘নৈরাজ্য ও বিশৃঙ্খলা’ ঠেকাতে রাজধানীতে সিটিং সার্ভিস বন্ধের ঘোষণা দেন সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক খন্দকার এনায়েত উল্যাহ। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ১৬ এপ্রিল থেকে আংশিক বন্ধ হয় কথিত ‘সিটিং সার্ভিস’।

বাসগুলোতে সরকার নির্ধারিত ভাড়া নিতে বাধ্য করতে রোববার থেকে রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে বসেন বিআরটিএ’র ভ্রাম্যমাণ আদালত। কিন্তু ‘জরিমানার ভয়ে’ গত ৪ দিন সড়কে অধিকাংশ বাস নামাননি মালিকপক্ষ।

এতে গণপরিবহন সঙ্কটে চরম ভোগান্তিতে পড়েন সাধারণ মানুণষ।

এই সঙ্কট নিরসনে বুধবার জরুরি বৈঠকে বসে বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি (বিআরটিএ) ও পরিবহন মালিকরা।

সভায় পরবর্তী ১৫ দিন আগের নিয়মে কথিত ‘সিটিং সার্ভিস’ চালানোর সিদ্ধান্ত দেয় বিআরটিএ। সরকার নির্ধারিত তালিকা অনুযায়ী ভাড়া আদায়ের নির্দেশও দেয়া হয় ওই বৈঠক থেকে।

এআর/এনএফ/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।