জঙ্গিবাদ রোধে সামাজিক প্রতিরোধ গড়তে হবে


প্রকাশিত: ০৯:১০ এএম, ১৫ এপ্রিল ২০১৭

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সচিব ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ বলেছেন, সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ এবং মাদককে কোনোভাবেই প্রশয় দেয়া যাবে না। জঙ্গিবাদ আমাদের দেশের মানুষ পছন্দ করে না। তাই জঙ্গি, সন্ত্রাস ও মাদকের আগ্রাসন রোধে সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।

শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘জঙ্গি, সন্ত্রাস ও মাদকের আগ্রাসন রোধে গণমাধ্যমের ভূমিকা’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। দৈনিক আমার কাগজ পত্রিকা সেমিনারের আয়োজন করে।

সেমিনারে মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন সাংবাদিক মীর আশফাকুজ্জামান। প্রবন্ধে রাজনৈতিক প্রশ্রয়ে জঙ্গিবাদ সৃষ্টি হয়েছে বলে তুলে ধরা হয়। তবে রাজনৈতিক প্রশ্রয়ে জঙ্গিবাদের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করেন ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ।

তিনি বলেন, ইসলাম ধর্ম জঙ্গিবাদের শিক্ষা দেয়নি। ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে জঙ্গিবাদের সৃষ্টি হচ্ছে। আমাদের দেশে ভুয়া চিকিৎসক, ভুয়া জ্যোতিষী রয়েছেন। তাদের সঙ্গে ধর্মের অপব্যাখ্যাকারীদের কী পার্থক্য রয়েছে? পবিত্র কোরআনে রয়েছে কাউকে হত্যা করা যাবে না। আমরা দেখছি বিভিন্ন জঙ্গি আস্তানায় বোমা পুঁতে রাখা হয়েছে। যখন তারা দেখেছে তাদের বাঁচার কোনো পথ নেই, তখন তারা আত্মঘাতী হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, ইসলামে বলা হয়েছে যারা আত্মহত্যা করবে, তাদের জানাজায় অংশ নেয়া যায় না। এই কথাগুলো যখন আমরা সমাজে তুলে ধরতে পারব, তখনই জঙ্গিবাদ নির্মূল করা সম্ভব হবে।

সেমিনারে ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া বলেন, সন্ত্রাস এবং জঙ্গিবাদ আমাদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। সন্ত্রাস জঙ্গিবাদ এবং মাদকের বিরুদ্ধে আমাদের সবার স্থান থেকে লড়াই করতে হবে।

তিনি বলেন, ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার পরে রাজনৈতিকভাবে জঙ্গিবাদকে পৃষ্ঠপোষকতা দেয়া হয়েছে। জঙ্গিবাদ একটি বৈশ্বিক সমস্যা। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতি।

গুলশান হলি আর্টিজানে হামলার পর যেসব অভিযান হয়েছে তার সবগুলো অভিযান সফল বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

বিরোধীদলীয় নেতাদের সমালোচনা করে তিনি বলেন, যারা জঙ্গিদের গ্রেফতারের বিষয় নিয়ে সমালোচনা করেন, তারা জ্ঞানপাপী। এ ধরনের কথাবার্তা জঙ্গিদের মদদ দেয়ার শামিল। জঙ্গিদের গ্রেফতারের সময় দেখা গেছে তাদের সঙ্গে সুইসাইডাল ভেস্ট থাকে, ১০ কেজি ওজনের বোমা থাকে, এক্সক্লুসিভ থাকে। যেখানে আমাদের জীবনের শঙ্কা থাকে, সেখানে আমরা জঙ্গিদের কিভাবে গ্রেফতার করতে পারি?

সেমিনারে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি মঞ্জুরুল আহসান বুলবুল বলেন, মাদকে শুধু ছাত্র-ছাত্রীরা জড়াচ্ছে না; ম্যাজিস্ট্রেট, পুলিশ কর্মকর্তা এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষককেও মাদকসহ ধরা পড়তে দেখা গেছে।

তিনি বলেন, জঙ্গিবাদে শুধু মাদরাসার ছাত্র কিংবা দরিদ্র পরিবার নয়, উচ্চ পরিবারের সদস্যরাও জঙ্গিবাদে জড়াচ্ছেন। সন্ত্রাসী, জঙ্গি মাদক ব্যবসায়ীরা যেন রাজনৈতিক প্রশ্রয় না পায় সে আহ্বান জানান তিনি।

কওমি মাদরাসাকে স্বীকৃতি দেয়ায় তিনি প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, এর মধ্যে দিয়ে কওমি মাদ্রসার শিক্ষার্থীরা বাংলা, ইংরেজি পাঠে আগ্রহী হয়ে উঠবে।

সেমিনারে আমার কাগজ পত্রিকার সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি হাজী আলাউদ্দিনের সভাপতিত্বে আলোচক হিসেবে আরও ছিলেন মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের মহাপরিচালক সালাউদ্দিন মাহমুদ, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজ প্রমুখ।

এসআই/এসআর/বিএ/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।