ব্যাগ নিয়ে প্রবেশে বাধা : ফিরে যাচ্ছেন অনেকেই
এখন কী করবা? কী করবো আবার, ভ্যানিটি ব্যাগ কি রাস্তায় রেখে যেতে পারব, চলো বাসায় ফিরে যাই। রাজধানীর পলাশী মোড়ে বিষণ্ন বদনে দাঁড়িয়ে থাকা এক দম্পতির মধ্যে এভাবে কথোপকথন চলছিল।
চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের কর্মকর্তা সমীর চৌধুরী অপু। স্ত্রী আলপনা চৌধুরীকে নিয়ে বৃহস্পতিবার রাতে চট্টগ্রাম থেকে রওয়া দিয়ে আজ শুক্রবার ভোরেই ঢাকায় পৌঁছান। তার স্ত্রী সিলেটের রাগিব রাবেয়া মেডিকেল কলেজের ছাত্রী।আত্মীয়ের বাসায় ব্যাগ রেখেই টিএসসি, সোহরাওয়ার্দী ও রমনা পার্ক ঘুরে বেড়ানোর উদ্দেশে বের হন।
এ প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপকালে অপু জানান, স্ত্রীর হাতের ছোট্ট ব্যাগটি নিয়ে পুলিশ ভেতরে ঢুকতে দিচ্ছে না। ব্যাগে রুমাল ও স্ত্রীর ব্যবহার্য কিছু জিনিস ছাড়া কিছ্ইু নেই।পুলিশ কর্মকর্তাকে বারবার অনুরোধ করলেও তাদের সাফ কথা - কোনো ব্যাগ যাবে না। এ কারণে তারা বাসায় ফিরে যাচ্ছেন।
শুধু অপু-আলপনা দম্পতিই নয়, বৈশাখের প্রথম দিনের সকালে খুশী মনে ঘুরতে বের হওয়া নগরবাসীর অনেকেই বিড়ম্বনার শিকার হচ্ছেন।
সরেজমিনে দেখা গেছে- শাহবাগ, নীলক্ষেত ও পলাশী মোড়সহ বিভিন্ন এলাকা দিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ব্যাগ নিয়ে কাউকে প্রবেশ করতে দিচ্ছে না পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।
পরিবার-পরিজন নিয়ে ঘুরতে বের হওয়া অনেককে দেখে গেছে তাদের ছোট্ট হাতব্যাগটি নিয়ে ভেতরে প্রবেশের জন্য পুলিশকে অনুরোধ করতে।
কিন্তু পুলিশ কাউকেই ভেতরে ঢুকতে অনুমতি দেয়নি। যারা দূর দূরান্ত থেকে ঘুরতে এসেছেন তারা কোথাও ব্যাগ রাখতে না পেরে মন খারাপ করে বাসায় ফিরে যাচ্ছেন।
আবু মিয়া নামে ৬০ বছর বয়সী এক বৃদ্ধের ছেলে টিএসসিতে চা বিক্রি করে। নিজের ও ছেলের জন্য একটি প্লাস্টিকের ব্যাগে করে বাটিভর্তি ভাত, মাছ, সবজি ও পানির বোতল নিয়ে ভেতরে ঢুকতে চাইলে বৃদ্ধকে ধমক দিয়ে সরিয়ে দেয় পুলিশ। পরে ব্যাগ ফেলে হাতে করে কৌটা ও পানির বোতল নিয়ে ভেতরে ঢুকেন তিনি।
ঘুরতে আসা রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকার বাসিন্দা আফতাব আলী বলেন, ‘নিরাপত্তার নামে পুলিশ বাড়াবাড়ি করে আনন্দটাই মাটি করে দিচ্ছে। নারীদের ছোট ভ্যানিটি ব্যাগ নিয়েও প্রবেশ করতে দিচ্ছে না। বছরের প্রথম দিনটাই মেজাজ খারাপ হচ্ছে।’
এ ব্যাপারে কর্তব্যরত এক পুলিশ কর্মকর্তা জানান, ব্যাগ নিয়ে প্রবেশ না করার বিষয়টি পুলিশ কমিশনার আগেই গণমাধ্যমের মাধ্যমে নগরবাসীকে অবহিত করেছেন। অনেককে ফিরিয়ে দিতে খারাপ লাগলেও নিরাপত্তার স্বার্থে কঠোর থাকতে বাধ্য হচ্ছেন তারা ।
এমইউ/জেডএ/এমএস