বাংলা নববর্ষ উদযাপনের সঙ্গে ধর্মের যোগসূত্র নেই


প্রকাশিত: ০১:০৬ পিএম, ১২ এপ্রিল ২০১৭

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘বাংলা নববর্ষ উদযাপনের সঙ্গে ধর্মের কোনো যোগসূত্র নেই। এটা আমাদের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য। এটা যুগ যুগ ধরে হয়ে আসছে। সব ধর্মের মানুষ একসঙ্গে বাংলা বছরের প্রথম দিন উদযাপন করে।’

নববর্ষ বরণের অনুষ্ঠান নিয়ে হেফাজতের মতো ইসলামী সংগঠনের বক্তব্যে আপত্তি জানান প্রধানমন্ত্রী। তিনি এ অনুষ্ঠান নিয়ে বিভ্রান্তি দূর করতে সবার প্রতি সতর্ক থাকারও আহ্বান জানান।

যদিও প্রধানমন্ত্রী সুপ্রিম কোর্ট থেকে ভাস্কর্য অপসারণে হেফাজতে ইসলামের মতো সংগঠনগুলোর দাবির সঙ্গে সহমত পোষণ করেছেন।

বুধবার নিজ কার্যালয়ে নরসিংদী জেলা পরিষদের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যানের শপথ অনুষ্ঠানে এমন মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী।

পহেলা বৈশাখের মঙ্গল শোভাযাত্রাসহ নানা অনুষ্ঠান ‘অনৈসলামিক ও হিন্দুয়ানি’ আখ্যা দিয়ে তা বন্ধের দাবি জানিয়ে আসছে কয়েকটি ইসলামী সংগঠন। হেফাজতে ইসলামসহ সংগঠনগুলো বর্ষবরণ অনুষ্ঠানের পাশাপাশি সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে স্থাপিত ভাস্কর্য অপসারণেও দাবি জানায়।

মঙ্গলবার গণভবনে হেফাজত আমির শাহ আহমদ শফীর নেতৃত্বে একদল ওলামার সঙ্গে বৈঠকে শেখ হাসিনা সুপ্রিম কোর্ট থেকে ভাস্কর্য অপসারণে পদক্ষেপ নেয়ার আশ্বাস দেন।

তবে একদিন বাদেই বর্ষবরণের অনুষ্ঠান নিয়ে হেফাজতের মতো সংগঠনগুলোর বক্তব্য ‘বিভ্রান্তিকর’ বলে সবাইকে সতর্ক থাকতে বলেন।

প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, পহেলা বৈশাখ বাঙালির নববর্ষ হিসেবে মুঘল আমল থেকেই পালন করা হচ্ছে। মঙ্গল শোভাযাত্রা মুঘল আমল থেকেই শুরু হয়। মঙ্গল কোনো হিন্দুয়ানি শব্দ না।’

বাংলা বছরের শেষ দিন চৈত্র সংক্রান্তিতে হালখাতা করার প্রচলনের কথাও উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।

প্রধানমন্ত্রীকে উদ্ধৃত করে প্রেস সচিব বলেন, ‘বিভ্রান্তি ছড়ানোর চেষ্টা করে অনেকে। দেশবাসীকে সতর্ক থাকতে হবে।’

নববর্ষের সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের বিভিন্ন স্থানে মঙ্গল শোভাযাত্রা বের হয়। বাংলা নববর্ষের এ অনুষ্ঠান সারাদেশে ছড়িয়ে দিতে উদ্যোগের কথা জানান সংস্কৃতিমন্ত্রী।

চারুকলার মঙ্গল শোভাযাত্রা ইউনেস্কো কর্তৃক ‘বিশ্ব অধরা সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য’ হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে গত বছর। প্রধানমন্ত্রী ইরানসহ বিভিন্ন দেশে নববর্ষ পালনের কথাও উল্লেখ করেন।

প্রেস সচিব আরও বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, এখানে ধর্মকে টেনে আনার কোনো যৌক্তিকতা নেই।’ মাছ রক্ষায় নববর্ষ উদযাপনে ইলিশ না খাওয়ার আহ্বান আবারও জানান প্রধানমন্ত্রী।

স্থানীয় সরকার ও পল্লী উন্নয়ন (এলজিআরডি) বিভাগের সচিব আবদুল মালেক শপথবাক্য অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন। এ সময় এলজিআরডি মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেন, আবদুল নাসের চৌধুরী ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সিনিয়র সচিব সুরাইয়া বেগম উপস্থিত ছিলেন।

আবদুল মতিন ভূঁইয়া গত ১৬ মার্চ নরসিংদী জেলা পরিষদ নির্বাচনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন। পহেলা ফেব্রুয়ারি সাবেক চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আসাদুজ্জামানের ইন্তেকালে পদটি শূন্য হয়।

এএসএস/এমএআর/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।