বাল্যবিবাহের বিধান শিথিল হয়নি : আইনমন্ত্রী


প্রকাশিত: ১২:১৮ পিএম, ১১ এপ্রিল ২০১৭

বাল্যবিবাহ নিরোধ আইনের বিশেষ বিধান নিয়ে যেসব আলাপ-আলোচনা হচ্ছে তা ‘নিরর্থক’ বলে মন্তব্য করেছেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়কমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক এমপি।

তিনি বলেন, আইন হচ্ছে জনগণের জন্য। তাই যখন কোনো আইন তৈরি হয় তখন তা এমনভাবে করা হয় যাতে এটা জনগণের পক্ষে পালন করা সম্ভব হয়।

তিনি বলেন, আমাদের দেশে যে বাল্যবিবাহ নিরোধ আইন তৈরি করা হয়েছে তাতে পরিষ্কারভাবে বলা আছে, ১৮ বছরের কম বয়সী কোনো মেয়েকে এবং ২১ বছরের কম বয়সী কোনো ছেলেকে বিয়ে দেয়া যাবে না বা তারা বিয়ে করতে পারবে না। এটা হচ্ছে এ আইনের মূল বিষয়। তবে জরুরি অবস্থায় যদি বিয়ের প্রয়োজন দেখা দেয় তাহলে অভিভাবকদের সম্মতি ও আদালতের অনুমতিক্রমে বিয়ে হতে পারে। তার মানে এই নয় যে ১৮ বছর ও ২১ বছরের বিয়ের বিধান শিথিল করা হয়েছে।

মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ এবং সমপর্যায়ের জুডিসিয়াল কর্মকর্তাদের ১৩৫তম রিফ্রেশার কোর্সের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, জরুরি অবস্থায় পশ্চিমা দেশে যেসব ব্যবস্থা আছে সেগুলো আমাদের দেশে কোনো ধর্মেই প্রয়োগযোগ্য নয়। এজন্য জরুরি অবস্থার ক্ষেত্রে আমাদের এমন একটি বিকল্প ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। না হলে এতে যে জটিলতা সৃষ্টি হতো সেটি নিরসন করা কঠিন হতো। সে কারণে এ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।

অনুষ্ঠানে আইনমন্ত্রী বলেন, রাষ্ট্রের অন্যতম অংশ হিসেবে বিচার বিভাগের পবিত্রতা, মর্যাদা ও স্বাধীনতা রক্ষার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকার বদ্ধপরিকর। তার সদিচ্ছায় বিচার বিভাগের উন্নয়নে সরকারের বিভিন্ন কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। বিচার বিভাগে ডিজিটাইজেশনের কাজ চলছে। একটি দক্ষ জুডিসিয়ারি গড়ে তোলার জন্য সরকার নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। এরই অংশ হিসেবে অধস্তন আদালতের ৫৪০ জন বিচারককে উন্নত প্রশিক্ষণ ও উচ্চশিক্ষা প্রদানের লক্ষ্যে অস্ট্রেলিয়ার ওয়েস্টার্ন সিডনি বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠানো হচ্ছে। গত মাসের ২৮ তারিখে এ বিষয়ে অস্ট্রেলিয়ার ওয়েস্টার্ন সিডনি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষর করা হয়েছে।

এছাড়া দেশের অধস্তন আদালতের দেড় হাজার বিচারককে প্রচলিত আইন ও আদালত ব্যবস্থাপনা বিষয়ে উচ্চতর প্রশিক্ষণ প্রদানের মাধ্যমে দক্ষতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে ভারতে পাঠানোর বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাম্প্রতিক ভারত সফরকালীন পৃথক দুটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষর করা হয়েছে।

এমওইউ অনুযায়ী, দেড় হাজার বিচারককে আগামী পাঁচ বছরে ধাপে ধাপে প্রশিক্ষণ দেবে ভারতের ভূপালে অবস্থিত ন্যাশনাল জুডিসিয়াল একাডেমি। এক্ষেত্রে প্রতিবছর ১০টি ব্যাচ এবং প্রতিটি ব্যাচে ৩০ জন করে বিচারক এ প্রশিক্ষণে অংশ নেবেন। প্রশিক্ষণের সময় হবে দুই সপ্তাহ। এ ক্ষেত্রে বিচারকদের এ প্রশিক্ষণ আমাদের বিচার বিভাগের দক্ষতা বৃদ্ধিতে যথেষ্ট ভূমিকা রাখবে।

পেটে বায়ু ঢুকিয়ে শিশু রাকিবকে হত্যায় মৃত্যুদণ্ডের পরিবর্তে দুই আসামিকে যাবজ্জীবন দেওয়া হয়েছে- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি রায় পড়ে দেখেনি। রায় বেরিয়েছে কিনা জানি না। রায় পড়ার পর সাজা কমানোর কোনো যুক্তিসংগত কারণ রয়েছে কিনা- সে বিষয়ে জানানো সম্ভব হবে।

বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক বিচারপতি খোন্দকার মূসা খালেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আইন ও বিচার বিভাগের সচিব আবু সালেহ শেখ মো. জহিরুল হকও বক্তব্য রাখেন।

এফএইচ/এমএআর/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।