বিদেশে জিম্মি করে দেশে মুক্তিপণ আদায়, আটক ১
মানবপাচার করে মুক্তিপণ আদায়কারী সংঘবদ্ধ চক্রের এক সদস্যকে আটক করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। তার নাম এম এ হান্নান ওরফে মল্লিক আব্দুল হান্নান (৩৪)।
সোমবার রাতে রাজধানীর পুরান পল্টনের সাব্বির টাওয়ারের সামনে পিবিআই ঢাকা মেট্রোর একটি বিশেষ দল অভিযান চালিয়ে তাকে আটক করে।
পিবিআই ঢাকা মেট্রোর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মিনা মাহমুদা জাগো নিউজকে বলেন, মানিকগঞ্জ জেলার শিবালয় থানার জিন্নাহ শেখ (২০) ও মুন্না (২০) জমজ ভাই। মুন্না ফকিরাপুল এলাকায় একটি প্রেসে চাকুরী করতেন। গত ৪ মার্চ সহীদুল ইসলাম ওরফে সুমনের মাধ্যমে তিনি লিবিয়া যান। ১৩ মার্চ রাতে ভাই জিন্নাহ’র মোবাইলে +৯৯০০১৬১৬০০০ নম্বর হতে ভিডিওকল আসে। ভিডিওকলে মুন্না জানায়, আমি তোর ভাই মুন্না, এখন লিবিয়া আছি। যারা আমাকে লিবিয়া এনেছে তারা চার লাখ টাকা চায়। তাদের চাহিদা মতো টাকা না দিলে আমাকে মেরে ফেলবে বলে হুমকি দিয়েছে। এ সময় ভিডিওকলে মুন্নার পাশে ২/৩ জনকে দেখা যায়। তারা মুন্নাকে টাকার জন্য মারধর করছিল।
ওই ঘটনায় জিন্নাহ বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে মতিঝিল থানার মামলা করেন (মামলা নং-৪৩, ২৮ মার্চ)। মানবপাচার প্রতিরোধ ও দমন আইনে দায়ের করা মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পায় পিবিআই, ঢাকা মেট্রো।
অতিরিক্ত বিশেষ পুলিশ সুপার বশির আহমেদের নেতৃত্বে একটি দল ওই মানবপাচারকারী চক্রের মুক্তিপণ আদায়কারী সদস্য এম এ হান্নানকে আটক করে।
জিজ্ঞাসাবাদে হান্নান জানায়, সে ছাড়াও সংঘবদ্ধ এ চক্রের সদস্য সহীদুল ইসলাম সুমন, শহীদ, নজরুল ইসলাম সুমন, রয়েল ও কাজী ইসমাইল রয়েছে। তারা সবাই পলাতক। তারা নির্ধারিত এজেন্টের মাধ্যমে বিনা টাকায় বিদেশে পাঠানোর প্রলোভন দেখিয়ে দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে লোক সংগ্রহ করে। পরে তাদের বিদেশে পাঠানো হয়। বিদেশে থাকা সিন্ডিকেটের মূলহোতা কাজী ইসমাইল তাদের আটকে রেখে দেশে থাকা আত্মীয়-স্বজনের কাছে মুক্তিপণের জন্য টাকা দাবি করে। এমনকী তাদের নির্যাতনের দৃশ্যও ভিডিওতে দেখান হয়। ওই সিন্ডিকেটের চাহিদা মতো টাকা পেলে মুক্তি দেয়া হয় অন্যথায় হত্যা করে লাশ গুম করে ফেলা হয়।
সংঘবদ্ধ এ চক্র লিবিয়া, কাতার, মালয়েশিয়াসহ আরো কয়েকটি দেশে মানবপাচার করে মুক্তিপণ আদায় করে থাকে। সিন্ডিকেটের সদস্য হান্নান, শহীদ ও রয়েল তৃণমূল পর্যায় থেকে লোক সংগ্রহ করে। পরে আঞ্চলিক নেতা সহীদুল ইসলাম সুমনের কাছে তাদের হস্তান্তর করা হয়।
নজরুল ভিসা, টিকিট, বর্ডিংপাস, ইমিগ্রেশন ইত্যাদি দেখভাল করে। বিদেশে পাড়ি দেয়ার পর কাজী ইসমাইল তাদের নিয়ন্ত্রণে নেয়। আর দেশে থাকা সুমনের মাধ্যমে মুক্তিপণের টাকা আদায় করা হয়।
জেইউ/এমএআর/পিআর