রানা প্লাজা ট্র্যাজেডি : এখনও নিখোঁজদের সন্ধান পায়নি স্বজনরা


প্রকাশিত: ০৩:৪৩ এএম, ২৪ এপ্রিল ২০১৫

সাভারের রানা প্লাজা ধসের সেই মর্মান্তিক দুর্ঘটনার দুই বছর পূর্ণ হল আজ শুক্রবার। বিশ্বের সবচেয়ে বড় পোশাক কারখানা দুর্ঘটনায় নিহতের সংখ্যা সরকারি হিসেবে ১১৩৬ জন । তবে নিহতের এই সংখ্যা নিয়ে বিতর্ক যেমন রয়েছে তেমনি রয়েছে নিখোঁজের সংখ্যা নিয়ে।

রানা প্লাজা নামে ঐ ভবনের ধসের দুই বছর পর সরকারি হিসেবে বলছে এখনো পর্যন্ত ‘নিশ্চিত নিখোঁজের’ তালিকায় রয়েছে ১৩৫ জন শ্রমিকের নাম। তবে বেসরকারি হিসাবে এই সংখ্যা আরো বেশি।

সরকারি, বেসরকারি এত তৎপরতা, ডিএনএ টেস্ট- এসব কিছুর পরেও এই শ্রমিকরা এখনো নিখোঁজ রয়েছে।

সায়লা আক্তার কাজ করতেন রানা প্লাজার চতুর্থ তলায় ফ্যানটম অ্যাপারেলসে। কার্ড নম্বর ২২২। ঐ ভবনে সিনিয়র অপারেটর হিসেবে চার বছর ধরে কাজ করতেন তিনি। সায়লার বোন রেশমি বলছিলেন, ধসের সময় শায়লা রানা প্লাজাতেই ছিলেন। ঘটনার পর রানা প্লাজা, হাসপাতাল, অধরচন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয়, কবরস্থান, কোথাও বাদ রাখেননি বোনকে খুঁজতে। কিন্তু দুই বছরেও তিনি তার বোনকে খুঁজে পাননি।

রানা প্লাজার নিখোঁজ শ্রমিকদের নিয়ে কাজ করেছেন বাংলাদেশ গার্মেন্টস শ্রমিক সংহতির তাসলিমা আক্তার।

তিনি বলছিলেন, যখন লাশ হস্তান্তর করা হয়, তখন সব লাশের ডিএনএ নমুনা রাখা হয়নি। সব ডিএনএ রাখা হলে হয়তো কিছু নিখোঁজের খোঁজ পাওয়া যেতো। উদ্ধার কার্যক্রম যথাযথভাবে সম্পন্ন না হওয়া, লাশ হস্তান্তরে অব্যবস্থাপনা, একজনের লাশ আরেকজনের ভুল করে নিয়ে যাওয়া, সরকারের মনিটরিংয়ের অভাব, এসব কারণেই এত নিখোঁজের ঘটনা ঘটেছে।

তাদের গবেষণায় দেখা গেছে এখনো নিখোঁজ আছেন ১৬২ জন শ্রমিক। রানা প্লাজা দুর্ঘটনায় নিখোঁজের তালিকা তৈরিতে সরকার, সেনাবাহিনী, শ্রমিক ও মালিক সংগঠনের সদস্যদের নিয়ে কমিটি তৈরি করা হয়। পরিবারের সদস্যদের কাছ থেকে নমুনা নিয়ে মরদেহের নমুনার সাথে মেলানো হয়।

বাংলাদেশ সরকারের ত্রাণ ও পুনর্বাসন দপ্তর বলছে, এ পর্যন্ত ১৭৭ জনের ডিএনএ মিলে যাওয়ায় তাদের মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। আর জুরাইন কবরস্থান ১১৪ জনের কবর রয়েছে। যাদের খোঁজ কেও কোনদিন করেনি। তাদেরও কোন পরিচয় এই দুই বছরেও পাওয়া যায়নি।

সরকারের ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা আনোয়ারুল ইসলাম খন্দকার বলেন "একজনের মরদেহ অন্যজনের আত্মীয়ের নিয়ে যাওয়ার কিছু ঘটনা আমরা তখন পেয়েছি। এই যে নিখোঁজ যারা রয়েছেন তাদের মরদেহ অন্য কেও নিয়ে দাফন করতে পারেন। আবার তাদের আত্মীয়ের মরদেহ এখন জুরাইন কবরস্থানে ১১৪ জনের কবরের মধ্যে রয়েছে এমনও হতে পারে"।

তবে এই নিখোঁজদের খুঁজে বের করতে খুব জোড়ালো কোন তৎপরতা যে চলছে না সেটা বিভাগের কর্মকর্তাদের কথাতেই স্পষ্ট হয়।

এআরএস/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।