বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তে মাইন-আইইডি পোঁতা!


প্রকাশিত: ০৭:১৮ এএম, ০৬ এপ্রিল ২০১৭

বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তের শূন্য লাইন এলাকা ও এর আশপাশজুড়ে বিপুলসংখ্যক ইমপ্রোভাইসড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস (আইইডি, হাতে তৈরি বোমা) এবং মাইন পুঁতে রাখা হয়েছে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।

বিচ্ছিন্নতাবাদী ও সন্ত্রাসীদের পুঁতে রাখা এসব বিস্ফোরকের বিস্ফোরণে হতাহতের ঘটনা ঘটছে। ঢাকার পিলখানায় বিজিবি ও মিয়ানমার পুলিশ ফোর্সের (এমপিএফ) অতিরিক্ত মহাপরিচালক পর্যায়ের ছয় দিনব্যাপী (১-৬ এপ্রিল) সীমান্ত সম্মেলন শেষে বৃহস্পতিবার সকালে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান বিজিবির অতিরিক্ত মহাপরিচালক মো. আনিছুর রহমান। এসব অপতৎপরতা রোধে সীমান্তে টহল পরিচালনাসহ সুষ্ঠু সীমান্ত ব্যবস্থাপনা কার্যক্রম পরিচালনায় কার্যকরী পদক্ষেপ নেয়ার কথা জানান তিনি।

এ পর্যন্ত ভূমি মাইন বিস্ফোরণে কতজনের মৃত্যু হয়েছে, এই বিচ্ছিন্নতাবাদীরা বাংলাদেশের নাকি মিয়ানমারের জানতে চাইলে বিজিবির এডিজি বলেন, ‘এ ব্যাপারে সঠিক কোনো তথ্য আামাদের কাছে নেই। তবে মাইন ও আইইডি পুঁতে রাখার বিষয়টি জানা গেছে।’ তিনি বলেন, ‘নিয়মিতভাবে বিভিন্ন পর্যায়ের অধিনায়কদের মধ্যে নিয়মিত যোগাযোগ বৃদ্ধি ও তাৎক্ষণিক তথ্য বিনিময়, তথ্য আদান-প্রদানের মাধ্যমে এ অপতৎপরতা বন্ধ করা সম্ভব।’

তিনি জানান, সম্মেলনে মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী বাহিনী কর্তৃক সীমান্ত লঙ্ঘন, সীমান্ত এলাকায় বিজিবি এবং বাংলাদেশি নাগরিক ও জেলেদের ওপর গুলি বর্ষণের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ জানানো হয়েছে। এসব বন্ধ ও শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের ব্যাপারে কার্যকরী পদক্ষেপ নেয়ার কথা জানিয়েছেন মিয়ানমার পুলিশ ফোর্স (এমপিএফ) প্রধান মেয়ো সেও উইন।

আনিছুর রহমান জানান, বাংলাদেশে মিয়ানমারের নাগরিকদের অবৈধ অনুপ্রবেশ গত অক্টোবর মাসে অস্বাভাবিকভাবে বেড়েছে। অবৈধ অনুপ্রবেশ ঠেকাতে উন্নত সীমান্ত ব্যবস্থাপনা, আস্থা ও সহযোগিতা বৃদ্ধি এবং সীমান্ত আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে নাফ রিভার এগ্রিমেন্ট-১৯৯৬, বাংলাদেশ-মিয়ানমার বর্ডার এগ্রিমেন্ট ১৯৮০ এবং ল্যান্ড বাউন্ডারি ট্রিটি-১৯৯৮ যথাযথভাবে অনুসরণের ব্যাপারে তারা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হয়েছেন।

অবৈধভাবে আসা রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানো নিয়ে কোনো আলোচনা হয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, এমপিএফ প্রধান জানিয়েছেন মিয়ানমারের মংডুতে পরিস্থিতি স্থিতিশীল ও স্বাভাবিক রয়েছে। এখন চাইলে রোহিঙ্গারা ফেরত যেতে পারেন। তবে তাদের ফেরত পাঠানো হবে কিনা সরকার সে নীতিগত সিদ্ধান্ত নেবে। তবে ভবিষ্যতে এ ধরনের অবৈধ অনুপ্রবেশ প্রতিরোধে পারস্পরিক সহযোগিতা প্রদানে দুই পক্ষ সম্মত হয়েছে বলে তিনি জানান।

এছাড়া সম্মেলনে মানবপাচার প্রতিরোধ ও নিজ দেশের ভূ-খণ্ড ব্যবহার করে অন্য দেশের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী ও রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকাণ্ড পরিচালানায় ভূমি সন্ত্রাসীদের প্রতিরোধে ব্যবস্থা নিতে সম্মত হয়েছে দুই দেশ। সীমান্ত সম্মেলনে বিজিবির অতিরিক্ত মহাপরিচালক মো. আনিছুর রহমানের নেতৃত্বে ১৬ সদস্যের প্রতিনিধিদল অংশ নেয়। প্রতিনিধিদলে বিজিবির ঊর্দ্ধতন কর্মকর্তা ছাড়াও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, সার্ভে অব বাংলাদেশ, বাংলাদেশ কোস্টগার্ড এবং মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা রয়েছেন।

অন্যদিকে, মিয়ানমারের পক্ষে দেশটির চিফ অব পুলিশ জেনারেল স্টাফ মেয়ো সেও উইনের নেতৃত্বে ছয় সদস্যের প্রতিনিধিদল অংশ নেয়। এতে মিয়ানমার পুলিশ বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা রয়েছেন।

জেইউ/এসআর/ওআর/আরআইপি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।