বাংলাদেশে জিএমও পদ্ধতিতে চাষাবাদ হলে লাভ হবে: নোবেলজয়ী জে রবার্টস


প্রকাশিত: ০৬:৪৫ পিএম, ৩০ মার্চ ২০১৭

ব্রিটিশ নোবেল বিজয়ী বিজ্ঞানী স্যার রিচার্ড জে রবার্টস বলেছেন, আধুনিক ‘জিএমও’ পদ্ধতি বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশের জন্য খুবই জরুরি। এ পদ্ধতিতে চাষাবাদ করলে প্রচুর ফলন পাওয়া সম্ভব যা মানুষ, জীব এবং উদ্ভিদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। বৃহস্পতিবার বসুন্ধরায় নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আয়োজনে এক সংবাদ সম্মেলনে স্যার রিচার্ড জে রবার্টস এসব কথা বলেন।

এ বিষয়ে তার নিজস্ব গবেষণার বিষয়গুলোও তুলে ধরেন। ‘জিএমও’ পদ্ধতির ওপর গবেষণার লক্ষ্যে নতুন ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠা করতে যাচ্ছে দেশের অন্যতম বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি।

অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক আতিকুল ইসলাম, বোর্ড অব ট্রাস্টিজ চেয়ারম্যান আজিম উদ্দিন আহমেদ, ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য বেনজির আহমেদ, উপ-উপাচার্য (দায়িত্বপ্রাপ্ত) অধ্যাপক গিয়াস উদ্দিন আহসান প্রমুখ। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন বিশ্ববিদ্যালয় মুখপাত্র ও জনসংযোগ উপ-পরিচালক বেলাল আহমেদ।

স্যার রিচার্ড জে রবার্টস বলেন, জেনেটিক্যালি মডিফাইড অর্গানিজম হচ্ছে জেনিটিক্যালি মডিফাই করা কোনো জীব যার রদবদল করা হয়েছে জেনিটিক ইঞ্জিনিয়ারিং প্রযুক্তির মাধ্যমে। জিএমওএস প্রযুক্তি ব্যবহার করে অনেক ওষুধ উৎপাদন ছাড়াও বৈজ্ঞানিক গবেষণার মাধ্যমে অন্যান্য পণ্য ও উন্নত মানের খাবার উৎপাদন করা সম্ভব।

তিনি বলেন, জিএমও পদ্ধতি বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশের জন্য খুবই জরুরি কারণ এ পদ্ধতিতে চাষাবাদ করলে প্রচুর ফলন পাওয়া সম্ভব যা মানুষ, জীব এবং উদ্ভিদ তথা সবার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। এ পদ্ধতিতে চাষাবাদের ফলে ব্যক্তি, সমাজ তথা রাষ্ট্রের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বৃদ্ধি পাবে এবং অপুষ্টিজনিত রোগ প্রতিরোধ করা সম্ভব হবে।

রিচার্ড বলেন, তৃতীয় বিশ্বের বিপুলসংখ্যক দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জীবন বাঁচাতে পর্যাপ্ত খাদ্যের প্রয়োজন। কিন্তু প্রচলিত উপায়ে খাদ্য উৎপাদন কষ্টকর ও ব্যয়বহুল। এক্ষেত্রে ‘জিএমওএস’ পদ্ধতিতে চাষাবাদ করলে সহজেই কীটনাশকমুক্ত ফসল উৎপাদন করা সম্ভব। এরইমধ্যে বিভিন্ন দেশে জিএমওএস পদ্ধতিতে উদ্ভাবিত বিটি বেগুন, বিটি তুলা উৎপাদন করে কৃষক অধিক পরিমাণ লাভবান হয়েছেন। শুধু প্রয়োজনীয় খাদ্য ও পুষ্টির কারণে আফ্রিকা ও তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলোয় অনেক মানুষ মারা যায়। শুধু ভিটামিন ‘এ’র অভাবে ২৫ মিলিয়ন শিশু বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়।

এক্ষেত্রে তৃতীয় বিশ্বের অভুক্ত মানুষের খাদের চাহিদা পূরণে তিনি জিএমওএস পদ্ধতিনির্ভর চাষাবাদের আহ্বান জানিয়ে বলেন, ইউরোপের জন্য এ পদ্ধতির প্রয়োজন নেই। কারণ তাদের টাকা আছে। সেজন্য তারা ইচ্ছামতো পছন্দের খাদ্য কিনতে পারে। কিন্তু তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলোর মানুষেরা দরিদ্র তারা দিনের পর দিন না খেয়ে কাটায়।

উল্লেখ্য, স্যার রিচার্ড জন রবার্টস একজন ইংলিশ বায়ো-কেমিস্ট এবং মলিকিউলার বায়োলজিস্ট। তিনি ১৯৯৩ সালে ফিজিওলজি অথবা মেডিসিনে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন। বর্তমানে তিনি নিউ ইংল্যান্ড বায়োল্যাবসের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত। তিনি নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক উপদেষ্টা বোর্ডের (আইএবি) সদস্য হিসেবে গত বছর যোগদান করেছেন।

এমএইচএম/বিএ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।