সিটি নির্বাচন : সেনাবাহিনী থাকবে ৪ দিন


প্রকাশিত: ০২:৫৫ এএম, ২০ এপ্রিল ২০১৫

সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে চার দিনের জন্য সেনাবাহিনী মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন। ভোটের আগে-পরে মিলে এই চার দিন মাঠে থাকবে সেনাবাহিনী। সুষ্ঠু নির্বাচন এবং প্রার্থীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। নির্বাচন কমিশনার নাম প্রকাশ না করার শর্তে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

এর আগে সেনাবাহিনী, প্রশাসন এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন ইসি। ওই বৈঠকে ভোটের দিন গোলযোগ হলে গুলি চালানোর নির্দেশ দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। নির্বাচনী মালামাল ছিনতাই বা কেন্দ্র দখলের চেষ্টা করলে কোমরের নিচে গুলি করতে হবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে। একই সঙ্গে নির্বাচনে কেউ বলপ্রয়োগ করলে, দ্বিগুণ বল প্রয়োগে তা প্রতিরোধের নির্দেশও দেয়া হয়। একই সঙ্গে তাদের বলা হয় অস্ত্র পকেটে রাখার জন্য, প্রয়োজনে ব্যবহার করতে হবে।

বৈঠকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তারা বিদ্যমান নির্বাচনী পরিবেশ ‘ভালো’ বলে দাবি করেন। কমিশন এই দাবিকে ‘ঝড়ের আগে থমথমে অবস্থা কিনা’ তা সতর্কতার সঙ্গে খতিয়ে দেখার জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেন। নির্বাচনে সর্বোচ্চ সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানান সিইসি।

নির্বাচনী পরিস্থিতি নিয়ে রোববার শেরেবাংলা নগরের জাতীয় অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (এনইসি) সম্মেলন কক্ষে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব, পুলিশ, র‌্যাবসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীগুলোর শীর্ষ কর্মকর্তারা অংশ নেন।

বৈঠকে নির্বাচনী পরিবেশ, ভোট কেন্দ্রের নিরাপত্তা, খালেদা জিয়ার প্রচারণাসহ বেশ কিছু বিষয় স্থান পায়। ওই বৈঠকের পর বিকাল সাড়ে তিনটায় আবারও কমিশনের দেড় ঘণ্টা বৈঠক হয়। ওই বৈঠক শেষে একজন নির্বাচন কমিশনার বলেন, সোমবার সেনা মোতায়েনের বিষয়ে আবারও বৈঠক হবে।

বৈঠক শেষে রোববার দুপুরে সিইসি সাংবাদিকদের বলেন, সেনাবাহিনী মোতায়েনের বিষয়ে আগামী দু-একদিনের মধ্যে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। তবে বিকেলে অনুষ্ঠিত ইসির অপর বৈঠকে চার দিনের জন্য সেনা মোতায়েনের সিদ্ধান্ত হয়।

সিইসি বলেন, আমরা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীগুলোর কাছ থেকে পরিস্থিতি শুনলাম। সবাই বলেছেন, নির্বাচন পরিস্থিতি ভালো রয়েছে। কিন্তু আমরা খুব সতর্কতার সঙ্গে পর্যালোচনা করছি। তাদের কাছ থেকে রিপোর্ট নিয়ে ইসির বৈঠক বসবে। কোন কেন্দ্রে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কত সদস্য থাকবে, ক’জন টহলে থাকবে তা পরে সিদ্ধান্ত হবে।

দুপুরে সেনা মোতায়েনে প্রার্থীদের দাবি প্রসঙ্গে সিইসি বলেন, শুধু প্রার্থীদের নয়, ভোটারদের কথাও চিন্তা করতে হবে। ভোটারদের নির্বিঘ্নে ভোট কেন্দ্রে আসার ব্যবস্থা করা, ভোট দেয়ার পর নির্বিঘ্নে ফিরে যাওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। নির্বাচনের পর সহিংসতা যাতে না ঘটে সে ব্যাপারে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সতর্ক করে দিয়েছি। তারা প্রমিজ করেছেন, তারা পরিস্থিতি অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে পর্যবেক্ষণ করবেন এবং তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। কোনো ভোট কেন্দ্রে অনাহূত পরিস্থিতির সৃষ্টি না হয় সে ব্যাপারে প্রস্তুতি থাকার জন্য তাদের বলা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, কেউ যদি বল প্রয়োগ করে তাহলে দ্বিগুণ বল প্রয়োগ করা হবে। তারা আশ্বস্ত করেছে যত সংখ্যক লোকবল ও অস্ত্র দেয়ার কথা তার বেশিসংখ্যক দেবেন। আমরা তাদের বলেছি, বেশিসংখ্যক দিলে হবে না। তা ইফেক্টিভ করতে হবে। যাতে কোনো অহেতুক ঘটনা না ঘটে।

সিইসি বলেন, ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ এবং চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনকে অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করছি। সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে, যাতে করে ভোটাররা নির্বিঘ্নে শান্তিপূর্ণভাবে ভোট দিয়ে নিজের পছন্দের প্রার্থীকে নির্বাচন করতে পারেন। সূত্র : যুগান্তর

এআরএস/আরআইপি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।