সেনাবাহিনী মোতায়েনের সিদ্ধান্ত শিগগিরই : সিইসি


প্রকাশিত: ০৯:৩৩ এএম, ১৯ এপ্রিল ২০১৫
ফাইল ছবি

প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী রকিবউদ্দিন আহমদ বলেছেন, আসন্ন তিন সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে সেনাবাহিনী নিয়োগ করা হবে কি না না সে বিষয়ে দুই একদিনের মধ্যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তিনি বলেন, ভোটকেন্দ্রে কেউ যদি বল প্রয়োগ করে দ্বিগুন বল প্রয়োগ করে তা প্রতিহত করা হবে।

রোববার দুপুরে রাজধানীর আগারগাঁওয়ের এনইসি ভবনে নির্বাচন কমিশন আয়োজিত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে বৈঠক শেষে একথা বলেন তিনি। নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন সম্পর্কে তিনি বলেন, এ ধরনের অনেক অভিযোগ উঠেছে। আমি আগেও বলেছি ঢালাওভাবে অভিযোগ করে কোনো লাভ নাই। এ ব্যাপারে লিখিত অভিযোগ করুন। এরপর তদন্ত করব ও আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সিইসি আরও বলেন, প্রতিদিন রিটানিং কর্মকর্তারা তথ্য দিচ্ছেন কতোজনকে কতো টাকা জরিমানা ও দণ্ড দেওয়া হলো। এগুলো সাংবাদিকরা তুলে ধরুন। আমরা মেয়র প্রার্থীকেও সতর্ক করেছি। কয়েকজন প্রথম ভুল করে ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন এবং বলেছেন এ ধরনের ভুল আর হবে না। আমরা এ ব্যাপারেও সতর্ক আছি। কেউ যদি আবার ভুল করে তা দেখা হচ্ছে।

আমরা শুধু প্রার্থীদের মাধ্যমেই নয় বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমেও আচরণবিধি লঙ্ঘনের যেসব অভিযোগ আসছে সেসব ব্যাপারে রিটার্নিং কর্মকর্তাদের সতর্ক থাকার জন্য বলেছি। এসব তদন্ত করে আইন মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বলেছি।

তিনি বলেন, সমস্ত বাহিনীর কাছ থেকে আমরা শুনলাম নির্বাচন পূর্ববর্তী ব্যবস্থা কী রকম। তবে এসব আমরা খুব সতর্কতার সঙ্গে পর্যবেক্ষণ করছি। এরপর কমিশন সেনাবাহিনী নিয়োগের ব্যাপারে বৈঠক করবে। কোন বাহিনী থেকে কতোজন লোক থাকবে, ভোটকেন্দ্রে কতোজন থাকবেন, এ বিষয়ে তারা ঠিক করবেন। আমরা তা অনুমোদন করব।

সেনাবাহিনী নিয়োগ করা হবে কি না এ নিয়ে বৈঠকে সেইভাবে আলোচনা হয় না দাবি করে সিইসি বলেন, বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা এবং আইন-শৃঙ্খলার বাহিনীর লোকজন আছেন- তারা বলছেন এ পর্যন্ত সবকিছু সুষ্ঠুভাবে হচ্ছে।  আমি তাদেরকে বলেছি আপনারা খেয়াল রাখেন। এটা ঝড়ের আগের থমথমে অবস্থা কি না না। আমরা কাউকে কোনো সুযোগ দেব না। সর্বোচ্চ ব্যবস্থা নিশ্চিত করব ইনশা আল্লাহ।

তিনি বলেন, আসলে সেনাবাহিনী নিয়োগ দেয়া হয় নির্বাচনের কয়েকদিন আগে। সেনাবাহনী নিয়োগের আরও পাঁচ-সাতদিন সময় আছে। আমরা হয়তো কাল পরশুর মধ্যে এ ব্যাপারে বৈঠক করে সিদ্ধান্ত নেব। আজকে তাদেরকে বলে রাখা হয়েছে সবাই যাতে প্রস্তুত থাকে।

বৈঠক শেষে সেনাবাহিনী এক কর্মকর্তা জানান, নির্বাচনে সেনাবাহিনী নিয়োগের প্রয়োজেন নেই। এ সম্পর্কে সিইসি বলেন, সেনাবাহিনী নিয়োগের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেব আমরা। কারো বলার উপর সিদ্ধান্ত নেব না। এটা বিচার বিশ্লেষণ করার এখতিয়ার কমিশনের- অন্য কারোর না।

সেনাবাহিনী মাঠে থাকলে প্রার্থীরা আস্থা পায় এমন এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, শুধু প্রার্থী না আমাদের ভোটারদের কথাও চিন্তা করতে হবে। প্রার্থী তো মাত্র কয়েকজন। কিন্তু ভোটাররা অনেক। তারা যেন নির্বিঘ্নে ভোটকেন্দ্রে আসতে পারে তার ব্যবস্থা করা, ফিরে যাওয়ার ব্যবস্থা করা এবং নির্বাচনের পরেও যাতে কোনো ঘটনা না ঘটে সে ব্যাপারে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে সতর্ক করে দিয়েছে। তারা বলেছেন, তারা পরিস্থিত অত্যন্ত সতর্কতার সাথে পর্যালোচনা করবেন।

সিইসি আরও বলেন, আমরা এটিও বলেছি কোনো রকম অহেতুক ঘটনা যাতে না ঘটে তার জন্য সর্বোচ্চ ব্যবস্থা নিতে হবে। কেউ যদি বল প্রয়োগ করে দ্বিগুন বল প্রয়োগ করে তা প্রতিহত করা হবে। তারা আশ্বস্ত করছেন যতো সংখ্যক বাহিনী দেয়ার কথা তার চেয়েও বেশি বাহিনী তাদের আছে। আমরা বলেছি শুধু বেশি বাহিনী দিলেই হবে না তা তাদেরকে কার্যকর করতে হবে। যাতে করে কোনো অহেতুক ঘটনা না ঘটে।

এসময় বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের নির্বাচনী প্রচারণা চালানো সস্পর্কে প্রশ্ন করা হলেও তিনি কোনো উত্তর দেননি।

ইসির সচিব মো. সিরাজুল ইসলামের সভাপতিত্বে বৈঠকে প্রধান অতিথি হিসেবে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকে চার নির্বাচন কমিশনার, কমিশনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব, পুলিশ প্রধান, বিজিবি প্রধান, আনসার-ভিডিপি, কোস্টগার্ড, গোয়েন্দা সংস্থাসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তারা অংশ নেন।

# সিটি নির্বাচনে সেনাবাহিনীর প্রয়োজন নেই : র‌্যাব 

এইচএস/এএইচ/আরআই/আরআইপি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।