কড়াইল বস্তির আগুন দুর্ঘটনা : ডিজি
রাজধানীর কড়াইল বস্তিতে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডকে নাশকতা নয় বরং দুর্ঘটনা হিসেবেই দেখছেন ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদফতরের মহাপরিচালক (ডিজি) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আলী আহাম্মেদ খান।
অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্তদের নাশকতার দাবির বিষয়ে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় জাগো নিউজের এ প্রতিবেদককে দেয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে তিনি এ কথা বলেন। বুধবার দিবাগত রাতে আকস্মিক আগুনে পুড়ে গেছে কড়াইল বস্তির এক-চতুর্থাংশ ঘরবাড়ি।
অনুসন্ধানে জানা যায়, গত এক বছরে এ বস্তিতে তিন-তিনবার আগুনের ঘটনা ঘটেছে। এ কারণে অনেকেই অগ্নিকাণ্ডকে নিছক দুর্ঘটনা বলতে নারাজ।
তবে ভুক্তভোগীদের দাবি, অগ্নিকাণ্ডের নেপথ্যে নাশকতা রয়েছে। নিরীহ বস্তিবাসীকে উচ্ছেদ করতেই আগুন দেয়া হচ্ছে।
এ প্রসঙ্গে ফায়ার সার্ভিসের ডিজি বলেন, আমি অগ্নিকাণ্ডকে নাশকতার কোনো ঘটনা মনে করছি না। ইতোপূর্বে কড়াইল বস্তিতে যে দুবার আগুন লেগেছে তার একটি শর্ট সার্কিট ও অপরটি রান্নার চুলা থেকে সূত্রপাত হয়েছিল।
নাশকতার উদ্দেশ্যে আগুন লাগানো হলে নির্দিষ্ট কোনো একটি স্থান থেকে অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত হতো না। বস্তি দখলের উদ্দেশ্যে কেউ নাশকতা চালালে পুরো বস্তি খালি করার জন্যই করবে, অল্প জায়গা খালি করে তাদের লাভ বা স্বার্থসিদ্ধি হবে না বলেও জানান তিনি।
রাজধানীর বঙ্গবাজার সংলগ্ন ফায়ার সদর দফতরের ব্রিগেডিয়ার আলী আহম্মদ খান বলেন, কড়াইল বস্তির ঘরবাড়িগুলোর অধিকাংশই পুরনো এবং কাঠ ও বাঁশের তৈরি। একটি ঘর আরেকটির সঙ্গে লাগানো। প্রতিটি ঘরে পুরনো কাপড় ও কাগজপত্রে ঠাসা। এছাড়া বস্তির মানুষ তেমন সচেতনও নয়।
যেখানে সেখানে মশার কয়েল জ্বালায়, লাকড়ি ও গ্যাসের চুল্লায় রান্না করে। বিভিন্ন ঘরবাড়িতে নিম্নমানের তার টেনে অবৈধ বিদ্যুৎ সংযোগও নেয় কেউ কেউ। অনেক সময় বৈদ্যুতিক তার ইঁদুর খেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ করে। কেউ আবার নিম্নমানের জেনারেটর দিয়ে বিদ্যুৎ সংযোগের ব্যবসা করে। সেখান থেকেও আগুনের সূত্রপাত হতে পারে বলে জানান তিনি। তবে অধিকতর তদন্ত করে অগ্নিকাণ্ডের মূল কারণ চিহ্নিত করা সম্ভব হবে বলে মনে করেন ফায়ার সার্ভিসের এ শীর্ষ কর্মকর্তা।
অগ্নিকাণ্ড নিয়ন্ত্রণ প্রসঙ্গে আলী আহাম্মদ খান বলেন, ওই বস্তির রাস্তাঘাট বেশ সরু। ফলে ফায়ার ফাইটাররা সহজে আগুন নেভাতে কাজ করতে পারেন না। আগুন নেভানোর জন্য নৌকায় করে পানির পাম্প নিয়ে যেতে হয়। যা আগুন নেভানোর ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়ায়। তাই বস্তিতে অগ্নিকাণ্ড প্রতিরোধে বৃহৎ পরিসরে স্বেচ্ছাসেবক দল গঠনের প্রয়োজনীয়তার কথা বলেন তিনি।
ফায়ার সার্ভিস ডিজির মতে, স্বেচ্ছাসেবকদের মাধ্যমে বস্তিতে সচেতনতা গড়ে তুলতে হবে। কারণ তারা বিপদগ্রস্ত না হওয়া পর্যন্ত আগুন প্রতিরোধে আগাম প্রস্তুতি নিতে চায় না। তাই তাদের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি প্রয়োজন।
এমইউ/এমএমএ/এএইচ/আরআইপি