সংসদ সচিবালয়ের বিরুদ্ধে অর্ধশত মামলা, বিপাকে কর্মকর্তারা


প্রকাশিত: ১২:৩৭ পিএম, ১২ এপ্রিল ২০১৫

জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের বিরুদ্ধে প্রায় অর্ধশত মামলা ঝুলে আছে। মামলার ভারে নিমজ্জিত সংশ্লিষ্টরা বিপাকে পড়েছেন। একারণে অনেক কাজ আটকে আছে। এসব মামলার পেছনে সংসদের লাখ লাখ টাকা ও অনেক মূল্যবান সময় নষ্ট হলেও পরিত্রাণ মিলছে না। সংসদের সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বুধবার বিকেলে টেলিফোনে এ প্রতিবেদকে জানান, এসব মামলাগুলো দীর্ঘদিনের। এজন্য অনেক কাজ ঠিকমত করা যাচ্ছে না। তবে মামলাগুলো দ্রুত নিষ্পত্তির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

জানা যায়, অনিয়ম, দুর্নীতি, জেলা কোটা না মেনে এবং নেতিবাচক পুলিশি প্রতিবেদনের কারণে অনেকের নিয়োগ বাতিল করে সংসদ সচিবালয়।  আর এর বিরুদ্ধে রিট করেন সংশ্লিষ্টরা। ২০০৫ ও ২০০৬ সাল  থেকে ৫৮টি রিট দায়ের করা  হয়েছে সংসদ সচিবালয়ের এ আদেশের বিরুদ্ধে। এর মধ্যে কয়েকটি মামলায় স্থগিতাদেশ দিয়েছেন আদালত।

এছাড়া, সংসদ সচিবালয়ের পক্ষ থেকে বাসা বরাদ্দ বাতিলের আদেশ দেয়ার পর সংক্ষুব্ধ ব্যক্তিরা মামলা করেছেন। এ নিয়ে দায়ের করা ১৫টি মামলা করা হলেও কয়েকটি মামলার স্থগিতাদেশ দেন আদালত। বাকিগুলো এখনও চলমান রয়েছে।

অনুসন্ধানে জানা যায়, সংস্থাপন মন্ত্রণালয়ের নিষেধাজ্ঞা অমান্য এবং বয়স প্রমার্জন করে সংসদ সবিচালয়ে নিয়োগের বিরুদ্ধে মামলা করেন তৃতীয়  শ্রেণির তিনজন কর্মচারী। শারমিন সেতারা, বেগম আরজু-আরা ও মো. আতারব হোসেন সংসদের বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার ও দুর্নীতি অভিাযোগ এনে মামলা করেন। অন্যান্য মামলার মতো এটিরও কোনো নিষ্পত্তি হচ্ছে না।

সবচেয়ে বেশি নিয়োগ বাতিল হয়েছে জেলা কোটা অমান্য করার অভিযোগে। এ তালিকায় রয়েছেন ৬৬ জন। এসব অভিযোগে দুটি মামলায় ৫ জন ও ১৬ জন বাদী হয়ে মামলা করেন ভুক্তভোগীরা।

এছাড়া আত্তীকৃত কর্মকর্তারা ২০০১ সালে হাইকোর্টে ও ২০০৭-এ সুপ্রিম কোর্টে দুটি মামলা দায়ের করেন। সংসদ সচিবালয়ে এটাই সবচেয়ে বেশি বয়সী মামলা। টানা ১৪ বছর ধরে বিচারাধীন রয়েছে এ মামলার কার্যক্রম। নিষ্পত্তি না হওয়ায় এসব কর্মকর্তারা এখনও মুচলেকা দিয়ে বেতন-ভাতা নিচ্ছেন। এরই মধ্যে বেশ কয়েকজন পদোন্নতি পেয়েছেন।

এছাড়া পদোন্নতি নিয়ে হাইকোর্টে রয়েছে ২টি মামলা। ২০১২ সালে সহকারী গ্রন্থাগারিক থেকে গ্রন্থাগারিক পদে পদোন্নতি নিয়ে মামলা করেন জমিলা কুলসুম। একই বছর বিতর্ক সহ-সম্পাদক থেকে সহকারী বিতর্ক সম্পাদক পদে পদোন্নতি নিয়ে মামলা করেন মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান।

মামলার ভারে আক্রান্ত হলেও এ জন্য সংসদ সচিবালয়ের নিজস্ব আইনজীবী প্যানেল নেই। কেবল বিশেষ ক্ষেত্রে আইনজীবী নিয়োগ করা হয়। সর্বশেষ আত্তীকৃতদের দায়ের করা মামলায় আইনজীবী প্যানেল নিয়োগ দেন সংসদ সচিবালয়।

সংসদের আইনশাখার এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে এ প্রতিবেদককে জানান, এসব মামলার কারণে প্রায় প্রতিদিনই হাইকোর্ট কিংবা জজকোর্টে যেতে হয়। আবার আদালতের স্থাগিতাদেশ থাকায় সংসদের অনেক কাজ আটকে আছে।

একে/আরআইপি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।