বালুর বিনিময়ে নদী খনন : পানি সম্পদমন্ত্রী


প্রকাশিত: ০৭:৪৮ এএম, ০৫ মার্চ ২০১৭

পানি সম্পদমন্ত্রী আনিসুল ইসলাম মাহমুদ জানিয়েছেন, কিছু দেশ বাংলাদেশ থেকে বালু নিয়ে যাওয়ার আগ্রহ দেখাচ্ছে। ওই দেশগুলো নিজেরা নদী খনন করে বালু নিয়ে যাবে। নদী খননের এই প্রক্রিয়া প্রথমে শুরু করা হবে যমুনা নদী দিয়ে।
 
রোববার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ) আয়োজিত ‘মিট দ্য রিপোর্টার্স’-এ তিনি এ কথা জানান।
 
আনিসুল ইসলাম জানান, প্রতিবছর ৫ হাজার হেক্টর জমি পানিতে বিলীন হয়ে যায় এবং এতে প্রায় ৫০ হাজার লোক ভিটা হারায়। ঢাকা শহরে যে ভাসমান মানুষ আছে, তার ৩০ শতাংশই নদী ভাঙনের শিকার। নদী পাড় ভাঙার প্রধান কারণ হলো ডুবচর। সেজন্য যেখানে তীর সংরক্ষণ প্রকল্প আছে তার পাশে ড্রেজিং করা হচ্ছে। মন্ত্রণালয়ের একটি অনুশাসন আছে ৫০ শতাংশ টাকা ড্রেজিংয়ে খরচ করা হবে।
 
আস্তে আস্তে নদী খনন ও ড্রেজিংয়ে যাওয়া হচ্ছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘নদী খননের বিষয়ে একটা সমীক্ষা করা হয়েছে। সেটার খরচ এসেছে ৯ লাখ কোটি টাকা। এই ৯ লাখ কোটি টাকা হয়তো একদিন আমাদের সংস্থান হতেও পারে। তবে বর্তমানে এটা সম্ভাব না। তাই আমরা কিছু কিছু জায়গায় এক্সপেরিমেন্ট করে দেখতে চায় কোনো খারাপ প্রভাব পড়ে কি না। সেটা হলো কিছু দেশ আমাদের থেকে বালু নিয়ে যাওয়ার আগ্রহ দেখাচ্ছে। সেটা তারা নিজেরা খনন করবে এবং খনন করে বালু নিয়ে যাবে।
 
মন্ত্রী বলেন, আমরা যে কয়েক জায়গায় ড্রেজিং করেছি সেখানে আমাদের প্রধান চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে বালু ব্যবস্থাপনা। পাড়ে বালু রাখলে পরের বছর বৃষ্টিতে আবার নদীর মধ্যে চলে আসে। কারো জমির ওপর তো রাখা যায় না।
 
যমুনা থেকে ড্রেজিং শুরু করার বিষয়ে তিনি বলেন, সে জন্য আমরা এক্সপ্রিমেন্ট করে বড় নদীগুলোতে চেষ্টা করছি কিছু ড্রেজিং এইভাবে করা যায় কি না, ড্রেজিং করে তারা সেগুলো নিয়ে যাবে এবং মিনিমাম রয়েলিটি দেবে। এতে লাভ যেটা হবে- আমরা যদি নিজেরা ড্রেজিং করি তাহলে প্রতি কিউবিক মিটারে প্রায় ১৬০ টাকা থেকে ২০০ টাকা লাগে। এই টাকা আমাদের লাগবে না, সেই সঙ্গে বালু ব্যবস্থায় যে টাকা লাগে সেটা মেকাপ হবে। এটা আমরা প্রথমে যমুনা নদী থেকে শুরু করবো।

তিনি আরো বলেন, ‘আমাদের যে নদী সিস্টেমটা আছে বিশেষ করে গঙ্গা, ব্রহ্মপুত্র ও মেঘনা এই তিনটি সিস্টেমের মধ্যে দেশের বাইরে থেকে প্রায় ১ দশমিক ২ বিলিয়ন টন পলিমাটি আসে। তার মধ্যে অর্ধবিলিয়ন টন শুধু যমুনা নদী দিয়েই আসে।
 
মন্ত্রী বলেন, ড্রেজিংয়ের ডিজাইন আমরাই করে দেবো। আমাদের ডিজাইন মতোই সেখানে ড্রিজিং করা হবে। আমারা দেখতে চাই এই উদ্যোগটা কতোটুকু আদর্শ। আমরা যখন বালুটা উঠাবো তার প্রথম প্রভাবটা কী হয়? বালু তুললে অসুবিধা অনেক সময় হতে পারে। কারণ পানির একটি ধর্ম আছে, যখন পানি বয়ে যায় হয় তখন কিছু বালুর দরকার হয়। সুতরাং বালু তোলার পর পরিবেশগত কোনো সমস্যা হয় কি না তা আমরা দেখবো। এরপর আমরা চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেব, এটা নিয়ে কতোদূর এগুবো।
 
ডিআরইউ সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন বাদশার সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক মুরসালিন নোমানীর সঞ্চলনায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সহ-সভাপতি আবু দারদা জোবায়ের, যুগ্ম-সম্পাদক তোফাজ্জল হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক জিলানী মিল্টন, আপ্যায়ন কামাল উদ্দিন সুমন, প্রশিক্ষণ ও গবেষণা মাহমুদ রিয়াত প্রমুখ।
 
এমএএস/এনএফ/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।