পরিবহন সংকটে দুর্ভোগ রাজধানীবাসীর


প্রকাশিত: ১০:০৭ এএম, ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৭

দক্ষিণাঞ্চলের ১০ জেলায় ডাকা অনির্দিষ্টকালের পরিবহন ধর্মঘট আজ (মঙ্গলবার) ছড়িয়ে পড়েছে সারাদেশে। যার প্রভাব পড়েছে রাজধানীতেও। ধর্মঘটের কারণে পরিবহন সংকটে আজ সকাল থেকেই চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে রাজধানীবাসীকে।

অফিসগামী লোকজন, শিক্ষার্থী বিশেষ করে এসএসসি পরীক্ষার্থী এবং জরুরি প্রয়োজনে ঘরের বাইরে বের হওয়া লোকজনকে দীর্ঘক্ষণ রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। তাদের অনেকেই কোনো যানবাহন না পেয়ে হেঁটেই গন্তব্যের উদ্দেশে রওনা দেন। তবে সবচেয়ে বেশি বিড়ম্বনায় পড়তে হয়েছে এসএসসি পরীক্ষার্থীদের। তাদের অনেককেই পরীক্ষা শুরু হয়ে যাওয়ায় দৌড়ে পরীক্ষা কেন্দ্রে পৌঁছাতে হয়েছে।

রাজধানীর সায়েদাবাদ, গাবতলী, গুলিস্তান ও মহাখালী এলাকা ঘুরে দেখা গেছে ধর্মঘটের কারণে সব বাস সারিবদ্ধভাবে টার্মিনালে দাঁড়িয়ে আছে। দূরপাল্লার কোনো বাস ছেড়ে যায়নি বা ঢাকার বাইরে থেকেও কোনো বাস রাজধানীতে প্রবেশ করছে না।

এছাড়া অভ্যন্তরীণ রুটের বাসও তেমন চলাচল করছে না। ফলে রাজধানীবাসীসহ বাইরে থেকে আগতদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। যারা জরুরি প্রয়োজনে রাজধানীতে এসেছিলেন তারাও ফিরে যেতে পারছেন না।

সায়েদাবাদ টার্মিনালে কথা হয় খুলনা থেকে আসা রিজিয়া নামে এক যাত্রীর সঙ্গে। জাগো নিউজকে তিনি বলেন, মেয়েকে নিয়ে জরুরি কাজে এসেছিলাম এক সপ্তাহ আগে। গত রোববার সকাল ৯টার ফাল্গুনী পরিবহনের টিকিট কাটা ছিল। ধর্মঘটের কারণে যেতে পারিনি। সোমবার ধর্মঘট প্রত্যাহারের খবর শুনে আজ আবার এসে দেখি গাড়ি বন্ধ। বিকল্প হিসেবে ট্রেনের টিকিটও মিলছে না। এখন কী করবো বুঝতে পারছি না। একই ধরনের দুর্ভোগের কথা জানান গোপালগঞ্জ থেকে আসা ফারুক মোল্লাও।

এছাড়া সকাল ১০টার দিকে যাত্রাবাড়ী এলাকায় দেখা গেছে শত শত মানুষ গাড়ি না পেয়ে মেয়র হানিফ ফ্লাইওভার ও নিচ দিয়ে গন্তব্যের উদ্দেশে হেঁটে যাচ্ছেন। একই দৃশ্য দেখা গেছে ফার্মগেটসহ বিভিন্ন এলাকায়ও।

রাজধানীর গাবতলীতে দেখা যায় আন্তঃজেলা বাস টার্মিনালের সামনে গরুর হাট ক্রসিংয়ে ও দারুস সালাম সড়কে ব্যারিকেড দিয়ে কর্মবিরতি পালন করছেন পরিবহন শ্রমিকরা। দু-একটা প্রাইভেটকার ও লেগুনা ছাড় কোনো গাড়ি চলাচল করছে না। রাজধানী থেকে সাভার ও মানিকগঞ্জ সড়কে যান চলাচলও একদম বন্ধ। রাস্তাঘাটে হাজারো যাত্রী গাড়ির অপেক্ষায়। কিন্তু ঢাকা থেকে কোনো গাড়ি বের না হওয়ায় এবং ঢাকায় কোনো গাড়ি ঢুকতে না পারায় চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন তারা।

গাবতলী এলাকার দায়িত্বরত ট্রাফিক বিভাগের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা বলেন, প্রথমে তাদের পক্ষ থেকে ট্রাক শ্রমিকদের কথা বলার পর পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হয়েছিল। কিন্তু সকাল ৯টার পর থেকে আবার পরিবহন শ্রমিকরা রাস্তা অবরোধ শুরু করে ভাঙচুর চালায়।

এ ব্যাপারে ঢাকা মেট্রোপলিটন ট্রাফিক বিভাগের (পশ্চিম) উপকমিশনার লিটন কুমার সাহা গণমাধ্যমকে জানান, পরিবহন শ্রমিকদের অবরোধের ফলে রাজধানীতে কোনো যানবাহন প্রবেশ করতে পারছে না। এতে যাত্রীরা দুর্ভোগে পড়েছেন।

উল্লেখ্য, সড়ক দুর্ঘটনায় প্রখ্যাত চলচ্চিত্র নির্মাতা তারেক মাসুদ ও এটিএন নিউজের প্রধান নির্বাহী মিশুক মুনীরসহ পাঁচজন নিহতের ঘটনায় বাসচালক জামির হোসেনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন মানিকগঞ্জ আদালত। এই রায়ের প্রতিবাদে গত রোববার ভোর ৬টা থেকে খুলনা বিভাগের ১০ জেলায় অনির্দিষ্টকালের পরিবহন ধর্মঘট শুরু হয়েছে, যা মঙ্গলবার ভোর ৬টা থেকে দেশব্যাপী পালিত হচ্ছে। সোমবার রাতে শ্রমিক ফেডারেশনের নেতারা দেশব্যাপী এই ধর্মঘট আহ্বান করেন।

এমএমজেড/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।