বাজারমূল্যে হতাশ ঠাকুরগাঁওয়ের কৃষকরা


প্রকাশিত: ০৫:৫৫ এএম, ০৭ এপ্রিল ২০১৫

সরকার চলতি বোরো মৌসুমে ধান, গম ও চালের ক্রয়মূল্য নির্ধারণ করেছেন। মৌসুমের শুরুতেই সরকার আগাম মূল্য ঘোষণা করায় খুশি হলেও বাজারের দাম নিয়ে হতাশ ঠাকুরগাঁওয়ের কৃষকরা। সরকার সরাসরি কৃষকদের কাছ থেকে ধান ক্রয়ের যে ঘোষণা দিয়েছেন তা বাস্তবায়নের এবং ন্যায্যমূল্য প্রাপ্তির দাবি জানিয়েছেন এ জেলার কৃষকরা।  

সরকার ধান, চাল, গম সংগ্রহ অভিযান শুরুর তারিখ এবং সংগ্রহ মূল্য ঘোষণায় কিছু আশার আলো দেখছে এ অঞ্চলের কৃষকরা। এবার বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের টানা অবরোধ আর হরতালে শস্য উৎপাদন নিয়ে শঙ্কিত হয়ে পড়েন কৃষকরা। নানা প্রতিকূলতার পরও সরকার প্রতি কেজি গম ২৮টাকা, ধান ২২ টাকা এবং চাল ৩২ টাকা নির্ধারণ করায় উৎপাদন খরচ উঠবে বলে আশায় বুক বাধছেন কৃষকরা। কিন্তু কৃষক বাজারে উৎপাদিত পণ্যের ন্যায্য মূল্য না পাওয়ার হতাশায় দিন পার করছেন।

সদর উপজেলার বেগুনবাড়ি গ্রামের কৃষক নজরুল ইসলাম, নারগুন গ্রামের মহন্ত কুমার, হরিহরপুর গ্রামের আব্বাস আলী বলেন, সরকার আগে-ভাগেই ধান, গম ও চালের দাম নির্ধারণ করেছে তাতে সবাই খুশি। সরকার সরাসরি কৃষকের কাছে সংগ্রহ করলে ন্যায্য দাম পাওয়া যাবে। কিন্তু এটা বাস্তবায়ন না হলে কৃষকরা ন্যায্য দাম থেকে বঞ্চিত হবে।

সংগ্রহ অভিযান ঘোষণার সাথে সাথে সরকার এবার কৃষকদের কাছ থেকে সরাসরি বোরো সংগ্রহ করার ঘোষণা দিয়েছে। কৃষকরা জানান, প্রতিবার সরকার কৃষকদের কাছ থেকে সরাসরি ধান ক্রয়ের ঘোষণা দিলেও বাস্তবে তা করা হয় না। এর ফলে কৃষকরা তাদের উৎপাদিত পণ্যের ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত হলেও লাভবান হয় মধ্যস্বত্বভোগীরা।

সদরের ভাওলারহাট গ্রামের কৃষক মোজাফফর হোসেন, ফাঁড়াবাড়ি গ্রামের আব্দুল জলিল, হোসেন আলী, জয়নাল হোসেন জানান, বেশ ক’বছর থেকেই কৃষকরা ধানের মূল্য পাননি। পাশাপাশি উৎপাদন খরচ বেড়ে যাওয়ায় ধান আবাদ করে লোকসান গুনতে হয়েছে তাদের। এবারও যাতে তাদের লোকসান গুনতে না হয়, সেজন্য সরাসরি কৃষকদের কাছ থেকে গম ও বোরো সংগ্রহের দাবি জানিয়েছে কৃষকরা।

জেলার কৃষি বিভাগ সূত্র জানায়, এবার জেলায় ৬৫ হাজার ৫শ হেক্টর জমিতে গম উৎপাদন হবে ২ লাখ ৩৩ হাজার টন, ৬২ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো চাল উৎপাদন হবে ২ লাখ ৫০ হাজার মে. টন চাল। আবহাওয়া অনুকূল থাকায় এবং সারসহ অন্যান্য উপকরণ পর্যাপ্ত মজুদ থাকায় এবার বাম্পার ফলনের আশা করছে কৃষি বিভাগ।

ঠাকুরগাঁও চালকল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মাহমুদ হাসান রাজু জানান, সরকারের এবারে উদ্যোগে কৃষকরা ন্যায্য দাম পাবে। কিন্তু কৃষকদের কাছে সরাসরি ক্রয় না করলে উৎপাদিত খরচ উঠবে না বলেও তিনি জানান।

ঠাকুরগাঁও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক আরশেদ আলী বলেন, সরকারের ঘোষণা করা ধান, গম ও চালের দাম পেলে কৃষকদের উৎপাদন খরচ উঠবে। এতে কৃষকরা ফসল উৎপাদনে উৎসাহিত হবে।

দেশের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কৃষকদের ভূমিকা অনস্বীকার্য। তাই কৃষকরা যাতে সরকারের এই সংগ্রহ অভিযানের সুফল পায় সেদিকে লক্ষ্য রাখার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

এসএস/বিএ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।