ভাষা শহীদদের কবরে জনতার ঢল নেই
মহান ভাষা আন্দোলনের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে আজ মঙ্গলবার একুশে ফেব্রুয়ারিতে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে জনতার ঢল নামলেও আজিমপুরের পুরাতন কবরস্থানে চিরনিদ্রায় শায়িত শহীদ বরকত, জব্বার ও শফিউরের কবরে ভিড় নেই।
কবরস্থানের দক্ষিণ পাশের প্রধান ফটকে প্রবেশ করে কিছুদূর এগিয়ে হাতের বামপাশে পশ্চিম দিকে উত্তর-দক্ষিণমুখী করে পাশাপাশি সমাহিত তিন শহীদ। আজ (মঙ্গলবার) সকাল সাড়ে ১০টায় সরেজমিন পরিদর্শনকালে দেখা গেছে, হাতেগোনা কয়েকটি ফুলের ডালার শ্রদ্ধার্ঘ্য কবরগুলোতে পড়ে আছে।
একটি ছোট্ট শিশুকে ও এক ভদ্রলোককে শহীদ বরকতের কবরের পাশে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। ভদ্রলোক বেসরকারি চাকরিজীবী। মোহাম্মদপুর প্রিপারেটরি স্কুলের দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী আট বছরের মেয়ে নওশীন নায়ার পূর্ণতাকে নিয়ে বাবা আমীর হোসেনের কবর জিয়ারত করতে এসেছিলেন। জিয়ারত করে ফেরার পথে মেয়েকে শহীদদের কবরগুলো দেখিয়ে বাংলাকে মাতৃভাষার দাবিতে ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস বর্ণনা করছিলেন।
একটু পরেই সেখানে আরেক ভদ্রলোক ও দুই শিশুকে নিয়ে শহীদদের কবর জিয়ারত করতে দেখা যায়। খন্দকার মোশতাক আলী নামের ওই ভদ্রলোক নিজেকে মোহাম্মদপুর পাওনিয়ার কলেজের অধ্যক্ষ পরিচয় দিয়ে জানালেন, দুই ছেলে জাহিন আহমেদ ঐশিক ও আহমেদ ওমর দিপ্রকে নিয়ে শহীদদের কবর জিয়ারত করতে এসেছেন।
সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, শহীদদের কবরে ভিড় না থাকলেও কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সোমবার দিবাগত রাত থেকে হাজারো জনতার ঢল নেমেছে। জনতার ভিড় নিয়ন্ত্রণে শহীদ মিনারে প্রবেশের বিভিন্ন রাস্তা (আজিমপুর বাসস্ট্যান্ড, নীলক্ষেত মোড়, শাহবাগ, হাইকোর্ট মোড়) বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। ভাষা শহীদদের প্রতি সন্মান জানাতে গিয়ে অনেকে হাসিমুখে সেলফি তুলে প্রকারান্তরে অসম্মানই জানাচ্ছেন। কারও কারও মতে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদনের পাশাপাশি তাদের রুহের মাগফেরাতের জন্য কবর জিয়ারত করা উচিত।
এমইউ/এআরএস/পিআর