‘২৫ মার্চ গণহত্যা দিবস কোনো সন্দেহ নেই’


প্রকাশিত: ০৩:৩২ পিএম, ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৭

‘২৫ মার্চ গণহত্যা দিবস’ এটা কোনো সন্দেহ নেই বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, দেশবাসীকে আজকে সোচ্চার হতে হবে। নতুন প্রজন্মের জানা উচিত আমাদের ইতিহাস। আমাদেরকে উদ্যোগ নিতে হবে।

বুধবার সংসদে অনির্ধারিত আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২৫ মার্চ ১৯৭১ সালে যে গণহত্যা তারা (পাকিস্তান) শুরু করেছিল। পিলখানায় ইপিআর, আনসার বাহিনী, সাধারণ জনগণকে যেভাবে হত্যা করেছে। আমি মনে করি আমাদেরকে উদ্যোগ নিতে হবে। ২৫ মার্চকে গণহত্যা দিবস হিসেবে যথাযথভাবে পার্লামেন্টে প্রস্তাব আনতে পারি। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থাকে প্রমাণসহ দিয়ে প্রচার করবো। যাতে আন্তর্জাতিক গণহত্যা দিবস হিসেবে পালন হয়।

এর আগে আলোচনার সূত্রপাত ঘটান বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমদ। তিনি পাকিস্তানের করাচি থেকে প্রকাশিত জুনায়েদ আহমেদের ‘ক্রিয়েশন অব বাংলাদেশ, মিথস এক্সপ্লোডেড’ বইয়ের কথা উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, ‘বইটিতে দেখলাম আমাদের বাংলাদেশের স্বাধীনতা, মুক্তিযুদ্ধ, গণহত্যা, ৩০ লাখ শহীদ সব কিছুর বিরুদ্ধে বিভিন্নভাবে মিথ্যা তথ্য উত্থাপন করে বইটি ওদের আইএসআই এর ডিরেক্টর জেনারেল আমাদের হাইকমিশনে পাঠিয়েছে। আমি এর নিন্দা জানানোর জন্য দাঁড়িয়েছি।’

এ সময় ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চকে ‘গণহত্যা দিবস’ পালন করার প্রস্তাব জানান তিনি। পরে আলোচনায় অংশ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

তিনি আরও বলেন, “২৫ মার্চ আমার বাবাকে গ্রেফতার করা হলো। এর কিছুদিন পরে আমার মা, আমি, আমার ভাই জামাল, রাসেল, রেহানা সবাইকে গ্রেফতার করা হলো। বন্দিখানায় থেকে অনেক কিছুই দেখেছি। স্যাঁতসেঁতে বাড়িতে রেখেছে।”
 
শেখ হাসিনা বলেন, “সারাদেশ জুড়ে শুধু গণহত্যা না। রাজাকার, আল বদর বাহিনীদের হাতে আমাদের মেয়েদের তুলে দিয়েছে। যেভাবে গণহত্য করেছে। তাদের কথা ছিল এদেশের সবাই হিন্দু হয়ে গেছে তাদের মারো। আওয়ামী লীগ খুঁজে বের করে শেষ করো। তাদের কথা ছিল ‘মানুষ চাই না মাটি চাই’।”

প্রধানমন্ত্রী বলেন, “ঢাকা শহরে বিভিন্ন রাস্তায় লাশ পড়ে থাকতে দেখেছি। নিজের চোখে দেখেছি। এগুলো নিজের চোখে দেখা। যে বাড়িতে আমাদের বন্দি করে রেখেছিল ঠিক তার সামনের বাড়িটা, সেখানে মেয়েদের নিয়ে এসে রেপ করে। তাদের চিৎকার কান পাতলে শোনা যেত। বাচ্চা বাচ্চা মেয়ে। ১৩-১৪ বছরের মেয়ে।”

“একেকটা পরিবার শেষ করে দিয়েছে। একেকটা গ্রাম শেষ করে দিয়েছে। প্রত্যেক মানুষ দেখেছে। এখন পাকিস্তান বই লিখে তাদের কৃতকর্ম, তারা যে গণহত্যা চালিয়েছে, সেগুলোকে উল্টো মুক্তি বাহিনীর উপর দোষ দিয়ে নিজেদের দোষ ঢাকার চেষ্টা করছে। পাকিস্তানের জন্য লজ্জার বিষয়। এই লেখার সাহস তারা কোথা থেকে পেল।”

তিনি বলেন, “এত বড় দুঃসাহস কোথা থেকে আসলো। বই ছাপিয়ে আবার পাঠায়। আজকে তারা গণহত্যাকে চাপাতে চায় মুক্তি বাহিনীর উপর এটা কোনদিনই গ্রহণযোগ্য না। তারা যে গণহত্যা করে অপরাধ করেছে তাদের মাফ চাইতে বলা হয়েছে। মাফ তো চায়নি। উল্টো দোষ চাপায়। তাদেরকে ধিক্কার জানাই। বই প্রকাশ করে মিথ্যা তথ্য দিচ্ছে। এর নিন্দা জানাই। আনুষ্ঠানিকভাবে জানাবো।”
 
এইউএ/আরএস/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।