ফাগুনের রঙ আর ভালবাসায় দুই দিনেই বছর ফুল ব্যবসায়ীদের
‘ভাই, ৫শ ট্যাকা ‘শ’ দরে লইলে লন, আর নাইলে সামনে যান, কাইল (কাল) দাম জিগানেরও টাইম পাইবেন না। এই একই গোলাপ কাইল-পরশু দুই হাজার টাকা শ’য়েও বিক্রি অইবো। এই দুইদিনেই তো বছরের সেরা ব্যবসা।’
রোববার ভোর ৭টায় রাজধানীর শাহবাগে শিশু পার্ক সংলগ্ন ফুল মার্কেটের সামনে দাঁড়িয়ে গোলাপ ফুল কিনতে আসা একজন খুচরা ক্রেতাকে উদ্দেশ্যে করে এ কথাগুলো বলছিলেন পাইকারী ফুল বিক্রেতা হাসান মিয়া।
ভৈরব বাজারের বাসিন্দা অবিরাণ দাস খুব ভোরে ভৈরব থেকে ফুল কিনতে শাহবাগে এসেছেন। সোমবার পহেলা ফাল্গুন ও পরশু বিশ্ব ভালোবাসা দিবসে (ভ্যালেনন্টাইন ডে) এলাকায় ফুল নিয়ে বিক্রি করে ভাল আয় রোজগার করবেন এ আশা নিয়ে শাহবাগে এসেছেন। তিনি প্রতি শ’ গোলাপ ১শ’ টাকা শুনে এসেছিলেন। কিন্তু শাহবাগে এসে দেখেন ৫শ’ টাকা।
এ প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপকালে অবিরাণ দাস বলেন, দাম বাড়লেও তিনি ফুল কিনে ফিরবেন। আগে পহেলা ফাল্গুন আর বিশ্ব ভালোবাসা দিবস রাজধানীতে ঘটা করে পালন করা হলেও এখন জেলা শহরেও এর বিস্মৃতি ঘটেছে। দাম দিয়ে ফুল কিনে নিলেও বিক্রি করে ভালো ব্যবসা হবে বলে আশা করছেন।
আজ ভোর সাড়ে ৬টায় সরেজমিন পরির্দশনকালে দেখা গেছে, ফুল ব্যবসায়ীরা ফুটপাত ও শিশু পার্ক সংলগ্ন সীমানা প্রাচীর ঘেঁষে রজনীগন্ধা, গাঁদা, গ্যালারিয়া, জারবেরা, কেলোনজরা, চন্দ্রমল্লিকা, লাল ও সাদা গোলাপ, ভুট্টা ফুল, বেলি, কামিনী, সূর্যমুখী, ডায়মন্ড, গরম ফেনিয়া, রতপুসুটি, টুনটুনি, জিপসি, স্টারকলি ও ডালিয়াসহ বিভিন্ন ধরনের ফুল সাজিয়ে নিয়ে বসেছেন।
ব্যবসায়ীরা জানালেন, শাহবাগে ফুলের বিশাল পাইকারী বাজারে সন্ধ্যা থেকে গভীর রাত পর্যন্ত প্রতিদিন যশোর, সাভার, সিলেট, নারায়ণগঞ্জ, ঝিনাইদহ, চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহ, কুমিল্লা, মানিকগঞ্জ, চুয়াডাঙ্গা ও টাঙ্গাইলসহ প্রায় ১৯ জেলা থেকে ফুল আসে এই বাজারে। পহেলা ফাল্গুন ও বিশ্ব ভালোবাসা দিবসকে কেন্দ্র করে ফুলের চাহিদা এখন তুঙ্গে।
শাহবাগের মোতালেব প্লাজার মোবাইল ফোন ব্যবসায়ী আমীর হোসেন জানান, তিনি সপ্তাহে দু’দিন শাহবাগে ফুল বিক্রি করেন। অন্যান্য সময়ের চেয়ে বিক্রির জন্য আজ অনেক বেশি ফুল কিনেছেন।
তিনি জানান, বছরের ৩৬৫ দিনে যত না ফুল বিক্রি হয় তার চেয়ে বেশি বিক্রি হয় পহেলা ফাল্গুন ও ভ্যালেন্টাইন ডে’তে। কোন ফুলের কদর বেশি জানতে চাইলে তিনি হেসে বলেন, সব ফুলেরই কদর আছে তবে এই দুইদিন গোলাপ ফুল সবচেয়ে বেশি বিক্রি হয়।
এমইউ/এআরএস/এমএস