দুর্যোগ মোকাবেলা দিবস আজ


প্রকাশিত: ০৩:৪৭ এএম, ৩১ মার্চ ২০১৫

আজ ৩১ মার্চ, জাতীয় দুর্যোগ মোকাবেলা দিবস। এ বছর দিবসটির প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে `বিজ্ঞানভিত্তিক তথ্য জানি, দুর্যোগের ক্ষতি কমিয়ে আনি`। ১৯৯৮ সাল থেকে দেশের সকল স্তরের জনসাধারণকে দুর্যোগ বিষয়ে সচেতন ও প্রতিরোধ বিষয়ে দক্ষ করে গড়ে তোলার লক্ষ্যে এই দিবসটি পালন করা হচ্ছে।

বাংলাদেশ প্রাকৃতিক দুর্যোগের দেশ। বন্যা, ঘূর্ণিঝড়, নদীভাঙন, খরা, কালবৈশাখী, টর্নেডো, জলোচ্ছ্বাস- এসব দুর্যোগের কোনো কোনোটি প্রায় প্রতি বছরই আঘাত হানছে। জলবায়ু পরিবর্তন, অধিক জনসংখ্যা এবং দারিদ্র্য দুর্যোগের ঝুঁকি অনেক বাড়িয়ে দিয়েছে। দেশের উত্তর, পূর্ব ও দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলসহ ঢাকা মহানগরী ভূমিকম্পের ভয়াবহ ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে।

তবে পৃথিবীর সবচেয়ে ঘনবসতিপূর্ণ এ দেশের মানুষের মনের জোর ও বৈরী প্রকৃতির বিরুদ্ধে লড়াই করে টিকে থাকার শক্তি পৃথিবীর কাছে এক আদর্শ। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় বিশ্বে রোল মডেল এখন বাংলাদেশ। এরই মধ্যে আজ সারাদেশে পালিত হচ্ছে জাতীয় দুর্যোগ মোকাবেলা দিবস।

প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলায় মডেল হিসেবে বিশ্বে স্বীকৃতি পেলেও বাংলাদেশের সামনে সবসময় ভূমিকম্পসহ প্রাকৃতিক ঝুঁকি ওতপেতে রয়েছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। এ জন্য সরকার ভূমিকম্প-ঘূর্ণিঝড়সহ যেকোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলায় মহাপরিকল্পনা হাতে নিয়েছে। এর মধ্যে রাজধানীসহ নয় জেলায় ভূমিকম্প মানচিত্র, উপকূলীয় এলাকায় নতুন পাঁচ হাজার ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণ এবং দুর্যোগ সময়ে কাজের জন্য লক্ষাধিক স্বেচ্ছাসেবককে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। সরকারের পরিকল্পনা বাস্তবায়নে জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা নীতিমালা চূড়ান্ত করা হয়েছে। শিগগিরই এটি মন্ত্রিপরিষদের সভায় উপস্থাপন করা হবে।

দুর্যোগ প্রস্তুতি কর্মসূচির মাধ্যমে ৫০ হাজার স্বেচ্ছাসেবক তৈরি করা হয়েছে, যার এক-তৃতীয়াংশ নারী। ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধানে ও সিডিএমপির সহায়তায় আরও ৬২ হাজার স্বেচ্ছাসেবক তৈরি ও প্রশিক্ষণ দেওয়ার কাজ চলছে। নগরে ২৮ হাজার স্বেচ্ছাসেবকের প্রশিক্ষণ এরই মধ্যে শেষ হয়েছে।

ভূমিকম্পসহ অন্যান্য প্রাকৃতিক দুর্যোগে অনুসন্ধান ও উদ্ধার কার্যক্রম পরিচালনায় বাংলাদেশ আর্মড ফোর্সেস ডিভিশন প্রায় ৬৩ কোটি টাকার যন্ত্রপাতি ক্রয় করে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স এবং সিটি কর্পোরেরপোরেশনগুলোকে দিয়েছে। বর্তমানে এ প্রকল্পের দ্বিতীয় ফেজে আরও ১৫৮ কোটি টাকার যন্ত্রপাতি ক্রয়ের বিষয় প্রক্রিয়াধীন।

এ ছাড়া উপকূলীয় ঘূর্ণিঝড়প্রবণ এলাকার জন্য ১২টি জরুরি মোটরগাড়ি এবং ছয়টি ওয়াটার অ্যাম্বুলেন্স কেনা হয়েছে। ২৫টি ছোট সি-বোটও কেনা হচ্ছে। উপকূলীয় অঞ্চলে ৫ হাজার ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণের কাজ করছে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়। বর্তমানে ৩ হাজার ৭৫১টি আশ্রয়কেন্দ্র থাকলেও আরও ১০০টি বহুমুখী ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র এবং দেশের ৯ জেলায় ৫৫৬টি নতুন সাইক্লোন শেল্টার নির্মাণ করা হচ্ছে।

পরিকল্পনা অনুযায়ী, ক্ষতিগ্রস্ত অপর্যাপ্ত সুবিধাসংবলিত ৪৫০ শেল্টার পুনর্নির্মাণ ও শেল্টারগুলোর সঙ্গে যোগাযোগে ৫৫০ কিলোমিটার সংযোগ সড়ক নির্মাণ বা পুনর্নির্মাণ করা হবে। এ কাজে সরকারের সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ী বিশ্বব্যাংক ৩৭ কোটি ৫০ লাখ মার্কিন ডলার দেবে। বাংলাদেশ ক্লাইমেট চেঞ্জ স্ট্র্যাটেজি অ্যান্ড অ্যাকশন প্ল্যান (বিসিসিএসএপি) উপকূলীয় এলাকায় জরুরি ভিত্তিতে বিদ্যমান আশ্রয়কেন্দ্রের মেরামত ও অতিরিক্ত আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণের ওপর জোর দিয়েছে।

বিএ/আরআইপি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।