পাটজাত পণ্য রফতানি আয় ৬৫৯ কোটি টাকা
বস্ত্র ও পাট মন্ত্রী মুহাম্মদ ইমাজ উদ্দিন প্রামাণিক জানিয়েছেন, ২০১৫-১৬ অর্থবছরে বিজিএমসি বিশ্বের ১০৪টি দেশে ৮৫ হাজার ২০৮ দশমিক ৬৩ মে. টন পাটজাত দ্রব্য রফতানি করেছে। এ থেকে তারা ৬৫৯ কোটি (৬৫৯.০২৮ কোটি) টাকা (সাবসিডি ব্যতীত) বৈদেশিক মূদ্রা অর্জন করেছে। চলতি ২০১৬-১৭ অর্থবছরে এ খাতের বৈদেশিক মূদ্রা অর্জনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১২শ’ ৬৩ কোটি ৯৩ লাখ টাকা।
সোমবার জাতীয় সংসদে দিদারুল আলমের (চট্টগ্রাম-৪), নুরুল ইসলাম মিলনের (কুমিল্লা-৮) ও বেগম হাজেরা খাতুনের (মহিলা আসন-৩৯) পৃথক পৃথক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী এসব তথ্য জানান।
এর আগে বিকেলে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদের বৈঠক শুরু হয়। বেগম পিনু খানের (মহিলা আসন-২৩) এক লিখিত প্রশ্নের উত্তরে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রী জানান, বিগত ৫ বছরে বাংলাদেশ পাটকল কর্পোরেশন (বিজিএমসি)-এর নিয়ন্ত্রণাধীন মিলসমূহ (বস্ত্র ও পাটকল) লাভের মুখ দেখে নাই। তবে বর্তমান সরকার এই খাতের উন্নয়নের লক্ষে নানামুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।
ম্যান্ডেটরি প্যাকেজিং অ্যাক্ট ২০১০ প্রণয়নের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট সকলকে অবহিত করা হয়েছে। তিনি জানান, বিজিএমসির নিয়ন্ত্রণাধীন ২২টি পাটকল বর্তমানে সচল আছে। এছাড়াও আরও ৩টি নন-জুট মিল ও একটি মিল বন্ধ আছে। বিটিএমসির নিয়ন্ত্রণাধীন রাষ্ট্র মালিকানাধীন বস্ত্রকলের সংখ্যা ২০টি। বিগত অর্থবছরের মধ্যে কোনো মিলই লাভের মুখ দেখেনি।
বন্ধ ও লোকসানি বস্ত্র কলগুলো লিজ দেবারও কোনো পরিকল্পনা নেই বলে জানান তিনি। মো. মনিরুল ইসলামের (যশোর-২) এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, দেশে বাৎসরিক বস্ত্রের চাহিদার পরিমাণ প্রায় দুই হাজার ৪শ’ মিলিয়ন মিটার, উৎপাদন হয় ১৭শ’ মিলিয়ন থেকে দুই হাজার মিলিয়ন মিটার। প্রায় ৪৯০ মিলিয়ন মিটার কাপড় বিদেশ হতে আমদানি করতে হয়।
আ খ ম জাহাঙ্গীর হোসাঈনের (পটুয়াখালী-৩) প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, আমাদের বস্ত্রশিল্প কারখানাগুলো দেশের অভ্যন্তরীণ চাহিদার ৭০-৮৩ শতাংশ মেটাতে সক্ষম। রফতানিযোগ্য বস্ত্রশিল্পের মধ্যে ওভেন পোশাকের ক্ষেত্রে প্রায় ৫০-৬০ শতাংশ আর নিট পোশাকের ক্ষেত্রে প্রায় ৯০ শতাংশ কাঁচামাল স্থানীয়ভাবে সরবরাহ করা হয়।
কামরুল আশরাফ খানের (নরসিংদী-২) এক প্রশ্নের জবাবে ইমাজ উদ্দিন প্রামাণিক বলেন, বর্তমানে দেশে প্রায় ১৭ লাখ একর জমিতে পাট চাষ করা হয়। সরকারের নানা উদ্যোগের ফলে পাট চাষিরা বর্তমানে পাটের ন্যায্য মূল্য পাচ্ছে।
এম, আবদুল লতিফের (চট্টগ্রাম-১১) আরেক প্রশ্নের জবাবে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রী বলেন, সোনালী আঁশের সু`দিন ফিরাইতে সরকার নানা মুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। গত বছরের ৬ মার্চ বাংলার পাট বিশ্বমান স্লোগানে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী ৬ মার্চকে ‘‘জাতীয় পাট দিবস’ ঘোষণা করেছেন।
রহিম উল্লাহর (ফেনী-৩) এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, এক সময়ে বাংলাদেশের সোনালী আঁশ নামে খ্যাত পাটের ব্যাগ বাধ্যতামূলক বাজারজাতকরণের লক্ষ্যে বর্তমান সরকার ‘পণ্যে পাটজাত মোড়কের বাধ্যতামূলক ব্যবহার আইন, ২০১০’’ প্রণয়ন ও কার্যকর করেছে। এই আইনে নির্ধারিত ১৭টি পণ্য যথা- ধান, চাল, গম, ভূট্টা, সার, চিনি, মরিচ, হলুদ, পেঁয়াজ, আদা, রসুন, ডাল, ধনিয়া, আলু, আটা, ময়দা, তুষ-খুদ-কুঁড়া মোড়কীকরণে পাটজাত মোড়ক ব্যবহার বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
এইচএস/এমআরএম/জেআইএম