স্বাধীনতা স্তম্ভ ও জাদুঘর জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত ঘোষণা


প্রকাশিত: ০৩:২৩ পিএম, ২৫ মার্চ ২০১৫

২৬ মার্চ থেকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের স্বাধীনতা স্তম্ভ ও স্বাধীনতা জাদুঘর জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত থাকবে বলে জানিয়েছেন সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর। বুধবার বিকেলে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে স্বাধীনতা স্তম্ভের ভিআইপি কক্ষে অনুষ্ঠিত এক সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি এ তথ্য জানান।

সংবাদ সম্মেলনে সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রী আরো জানান, ঢাকা শহরের কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত সোহরাওয়ার্দী উদ্যান বাঙালির ইতিহাসের অনেক ঐতিহাসিক ঘটনার সাক্ষী। বাঙালির স্বাধিকার আন্দোলনের বিবর্তনের ধারায় ১৯৭১-এর ৭ মার্চ এই প্রান্তরে দাঁড়িয়েই জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ঘোষণা করেছিলেন স্বাধীনতা অর্জনের দৃঢ় প্রত্যয়। ’৭১-এর ১৬ ডিসেম্বর লাখো শহীদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে বাঙালির মুক্তিযুদ্ধের বিজয় দলিল স্বাক্ষরিত হয়েছিল এই সোহরাওয়ার্দী উদ্যানেই। আর এই প্রেক্ষাপটে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে স্বাধীনতা স্তম্ভ ও স্বাধীনতা জাদুঘর স্থাপন একটি সময়োচিত যুক্তিসঙ্গত পদক্ষেপ।

সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রী সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের স্থাপনার সংক্ষিপ্ত বর্ণনায় বলেন, ৬৭ একর বিস্তৃত সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের কেন্দ্রস্থলে প্রায় একশ’ ৭৫ কোটি টাকা ব্যয়ে এই নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে- ৫ হাজার ৬শ’ ৬৯ বর্গকিলোমিটার পাকা চাতাল বা প্লাজা এবং এর চারপাশে রয়েছে তিনটি জলাশয়, বাঙালি জাতিসত্তার অমরতার প্রতীক ‘শিখা চিরন্তনী’ এবং স্বাধীনতা সংগ্রামকে ভিত্তি করে নির্মিত একটি দেয়ালচিত্র। জাদুঘরের উপরিভাগে রয়েছে ১শ’ ৫৫ আসনসংখ্যার আধুনিক মানের মিলনায়তন। স্বাধীনতা স্তম্ভটি বস্তুত ১শ’ ৫০ ফুট উচ্চ একটি গ্লাস টাওয়ার। গ্লাস টাওয়ারে স্থাপিত লাইটের আলোকরশ্মি ৫ কিলোমিটার ঊর্ধ্বে প্রক্ষেপিত হয়।

তিনি বলেন, বাঙালির জাতীয় জীবনে ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের যে সুগভীর তাৎপর্য, তার সঙ্গে সঙ্গতি রেখেই সুউচ্চ স্বাধীনতা স্তম্ভ এবং গগনচুম্বী আলোকরশ্মিমালার পরিকল্পনা করা হয়েছে। স্বাধীনতা জাদুঘরটি ’৭১-এর মুক্তিযুদ্ধ ও গণহত্যার বাস্তব নিদর্শনে আরো সমৃদ্ধ করার পরিকল্পনা নিয়ে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। ১৪৪টি প্যানেলে বাঙালি ও বাংলাদেশি জাতিসত্তার স্বাধীনতার ইতিহাস আলোকচিত্রের মাধ্যমে উপস্থাপিত হয়েছে।

সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রী এক প্রশ্নের উত্তরে জানান, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানকে ঘিরে সাংস্কৃতিক বলয় তৈরির পরিকল্পনা রয়েছে। রমনা পার্ক, শিল্পকলা একাডেমি, বাংলা একাডেমি ও চারুকলা ইনস্টিটিউট- এ বলয়ের অন্তর্ভুক্ত থাকবে।

সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের স্থাপিত স্বাধীনতা স্তম্ভ ও জাদুঘর জনসাধারণের জন্য উন্মুক্তকরণের লক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন- তথ্যসচিব ড. রনজিত কুমার, জাতীয় জাদুঘরের মহাপরিচালক ফয়জুল লতিফ চৌধুরী ও স্বাধীনতা স্তম্ভের স্থপতি মেরিনা তাবাসসুম।

এদিকে স্বাধীনতা স্তম্ভকে জনসাধারণের জন্য উন্মুক্তকরণের ক্ষণকে স্মরণীয় করে রাখার জন্য বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। এর মধ্যে ২৫ মার্চ থেকে ৩১ মার্চ পর্যন্ত সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে স্বাধীনতাস্তম্ভের লনে ‘মুক্তিযুদ্ধ ও গণহত্যা ১৯৭১’-এর চিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন ও ২৬ মার্চ বৃহস্পতিবার সকাল ৭টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত গানের আসর, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক চলচ্চিত্র প্রদর্শনী ও স্বাধীনতা অর্জনের আনন্দের প্রতীক হিসেবে আলোকসজ্জার ব্যবস্থা করা হয়েছে।

আরএস/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।