তিনশ বছরের পুরনো আজিমপুর শাহী মসজিদের শেষ পরিণতি কি?


প্রকাশিত: ০৬:৩৭ পিএম, ২১ জানুয়ারি ২০১৭

রাজধানীর নিউমার্কেট থেকে সোজা বিজিবি তিন নম্বর গেট সংলগ্ন আজিমপুর পুরাতন কবরস্থানের সীমানা প্রাচীর ঘেঁষে নতুন লাইনের সরু রাস্তা দিয়ে বেশ কিছদূর এগিয়ে গেলে প্রাচীন একটি মসজিদ। এলাকাবাসীর কাছে এটি আজিমপুর গোরস্তান শাহী মসজিদ হিসেবে পরিচিত।

বাইরে থেকে খুব সাধারণ একটি মসজিদ মনে হলেও প্রত্নতত্ত্ববিদদের মতে, মসজিদটি প্রায় তিনশ’ বছরের পুরনো। এ মসজিদের গম্বুজের অনেকটা তুরস্কের অটোমান আমলের স্থাপত্যশৈলীর মিল রয়েছে। ১৭৪৬ সালে নবাব আলীবর্দী খাঁর আমলে নির্মিত প্রাচীণ এ মসজিদটির কথা মহল্লাবাসীর অনেকেই জানেন না। সম্প্রতি এ মসজিদটির একাংশ ভেঙে ফেলার পর প্রত্নতত্ত্ব অধিদফতরের হস্তক্ষেপে ভাঙার কাজ বন্ধ থাকায় মসজিদটি মহল্লাবাসীর কাছে নতুন করে পরিচিত পাচ্ছে।

Mosque

২৭১ বছরের পুরনো এ মসজিদটি প্রায় মাস তিনেক আগে ছয় তলা ভবন নির্মাণের লক্ষ্যে ভাঙার কাজ শুরু হয়। মসজিদদের উত্তরাংশের একাংশ তিন তলা পর্যন্ত ভাঙার পর বিষয়টি গণমাধ্যমকর্মীদের নজরে এলে বিষয়টি প্রত্নতত্ত্ববিদদের নজরে আসে। তাদের অনুরোধে মসজিদটি ভাঙার কাজ আপাতত বন্ধ রয়েছে।

শনিবার সরেজমিন পরিদর্শনকালে দেখা যায়, মসজিদটিতে প্রবেশের গেটে ছয়তলা ভবন পর্যন্ত ভেঙে নতুন ভবন নির্মিত হবে এই মর্মে আর্থিক সাহায্যে চেয়ে একটি সাইনবোর্ড লাগানো রয়েছে। মসজিদটি যে অংশে ভাঙা হয়েছে সেখানে পলিথিন দিয়ে ঢেকে দেয়া হয়েছে। মসজিদটির একটি অংশে একটি মাদরাসাও রয়েছে।

মাদরাসার আবদুল বাতেন নামের একজন শিক্ষক জাগো নিউজকে বলেন, মসজিদটি ওয়াকফ সম্পত্তি। তিনি গত তিন বছর ধরে চাকরি করছেন। মসজিদটি পুরনো হওয়ায় বহু জায়গায় ফাটল দেখা দিয়েছে। মসজিদ পরিচালনা কমিটির বৈঠকে মসজিদটির একাংশ ভেঙে প্রথমে ছয়তলা ভবন স্থাপন ও পরবর্তী অপর অংশ ভাঙার সিদ্ধান্ত হয়। কিন্তু সম্প্রতি প্রত্নতত্ত্ব অধিদফতরের শীর্ষ কর্মকর্তাদের নির্দেশে এটি ভাঙার কাজ আপাতত বন্ধ রয়েছে।

Mosque-3

মসজিদ কমিটির একজন জানান, তারা ভাঙার কাজ শুরু করার আগে এটি প্রত্নতত্ত্ব অধিদফতরের মহাপরিচালকের কাছে এটি প্রত্নতত্ত্ব হিসেবে তালিকাভুক্ত কিনা জানতে চেয়ে চিঠি দিলেও তাৎক্ষণিক সাড়া পাননি।

আজিমপুর পুরাতন কবরস্থান সংলগ্ন এ মসজিদটি মহল্লাবাসী ছাড়াও কবর জিয়ারত করতে আসা মানুষ প্রতিদিন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ে। এছাড়া জুমাবার, রোজার সময় তারাবীহ, শবেবরাত ও ঈদের নামাজ পড়েন। কিন্তু প্রায় তিনশ’ বছরের পুরনো হওয়ায় মসজিদটির স্থানে স্থানে ফাটল দেখা দিয়েছে। যেকোনো সময় মসজিদের বিভিন্ন অংশ ভেঙে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। শেষ পর্যন্ত কি হবে তাই নিয়ে ভাবনায় রয়েছেন বলে জানান তারা।

এমইউ/জেএইচ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।