এসএসসি পাস করেনি ৬.৭৭ শতাংশ চেয়ারম্যান : সুজন


প্রকাশিত: ০৯:২৮ এএম, ১৭ জানুয়ারি ২০১৭

জেলা পরিষদ নির্বাচনে নবনির্বাচিত চেয়ারম্যানদের মধ্যে ৬ দশমিক ৭৭ শতাংশই এসএসসির গণ্ডি পেরুতে পারেননি। অন্যদিক মাত্র ১ দশমিক ৬৯ শতাংশ চেয়ারম্যান এসএসসি পাস করেছেন। এছাড়া এইচএসসি পাস করেছেন মাত্র ১৩ দশমিক ৫৫ শতাংশ। স্নাতক পাস ৫৭ দশমিক ৬২ শতাংশ। স্নাতকোত্তর ১৮ দশমিক ৬৪ শতাংশ। বাকি এক দশমিক ৬৯ শতাংশের তথ্য পাওয়া যায়নি।

সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) নির্বাচন-পরবর্তী পর্যবেক্ষণে এসব তথ্য উঠে এসেছে।

মঙ্গলবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান সুজন-এর সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার।

তিনি চেয়ারম্যানদের পেশা, মামলা, বাৎসরিক আয়, সম্পদের হিসাব সংক্রান্ত তথ্য তুলে ধরেন।

পেশা সংক্রান্ত তথ্য
৫৯ জন চেয়ারম্যানের মধ্যে কৃষি পেশার সঙ্গে সম্পৃক্ত তিনজন, ব্যবসায় ৩৮, চাকরিজীবী ৫, আইনজীবী ৮ ও অন্যান্য ৫ জন।

মামলা সংক্রান্ত তথ্য
বর্তমানে মামলা আছে দুজনের। অতীতে মামলা ছিল ১৫ জনের বিরুদ্ধে। এর মধ্যে দুজনের বিরুদ্ধে ৩০২ ধারায় মামলা ছিল। উভয় সময়ই মামলা আছে একজনের বিরুদ্ধে।

প্রার্থী ও নির্ভরশীলদের বাৎসরিক আয় সংক্রান্ত তথ্য
দুই লাখের নিচে আয় তিনজনের, দুই থেকে পাঁচ লাখ ১৯ জনের, পাঁচ থেকে ২৫ লাখ ২৫ জনের, ২৫ থেকে ৫০ লাখ তিনজনের, ৫০ লাখ থেকে এক কোটি তিনজনের, এক কোটির উপরে আয় তিনজনের। বাকি তিনজনের তথ্য উল্লেখ নেই।

প্রার্থী ও নির্ভরশীলদের সম্পদের তথ্য
পাঁচ লাখের নিচে ৯ জন, পাঁচ লাখ থেকে ২৫ লাখ টাকা ২১ জনের, ২৫ লাখ থেকে ৫০ লাখ টাকা আটজনের, ৫০ লাখ থেকে এক কোটি টাকা ১১ জনের, এক কোটি থেকে পাঁচ কোটি টাকা সাতজনের, পাঁচ কোটির উপরে দুজনের। বাকি একজনের তথ্য উল্লেখ নেই।

সংবাদ সম্মেলনের লিখিত বক্তব্যে বদিউল আলম মজুমদার বলেন, ‘স্থানীয় সরকারের সর্বোচ্চ স্তরের প্রতিষ্ঠান জেলা পরিষদ। গত ২৮ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হয় এ নির্বাচন। সারা দেশের ৬৪ জেলার মধ্যে তিনটি পার্বত্য জেলা ব্যতীত বাকি ৬১ জেলায় এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকলেও কুষ্টিয়া ও বগুড়া জেলায় চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন স্থগিত করা হয়। ফলে এ পদে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় ৫৯ জেলায়। কিন্তু তফসিল ঘোষণার পর থেকে নির্বাচনের দিন এবং তার পরবর্তী সময় পর্যন্ত যে চিত্র আমরা পর্যবেক্ষণ করেছি তাতে আশাহত হওয়া ছাড়া কোনো উপায় ছিল না।’

তিনি জেলা পরিষদ নির্বাচন নিয়ে সুজনের পর্যবেক্ষণ চিত্র তুলে ধরেন।

তিনি বলেন, আইনগতভাবে এ নির্বাচন নির্দলীয় হলেও ক্ষমতাসীন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে দলীয়ভাবে প্রার্থিতা প্রকাশ করা হয়। অন্য বড় কোনো রাজনৈতিক দল থেকে প্রার্থী না দেয়ায় এ নির্বাচন ব্যাপক প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হয়নি এবং কোনো উৎসাহ-উদ্দীপনাও সৃষ্টি হয়নি। নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয়েছে মূলত বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ও দলটির বিদ্রোহী প্রার্থীদের মধ্যে। দলের কেন্দ্রীয় পর্যায় থেকে বিদ্রোহী প্রার্থীদের ওপর প্রার্থিতা প্রত্যাহারের চাপ না থাকলেও স্থানীয়ভাবে ছিল। নির্বাচকমণ্ডলী বা ভোটারদের অনেকেই ছিলেন রাজনৈতিক দলভিত্তিক। নির্বাচনে ২১ জেলায় চেয়ারম্যান প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন।

নির্বাচনে অসংখ্য আচরণবিধি লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটে। অনেক  সংসদ সদ্স্য টিআর, কাবিখা ও অর্থ বরাদ্দের প্রলোভন দেখিয়ে ভোটারদের কাছে নিজ প্রার্থীর পক্ষে ভোট চান। নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে সংসদ সদস্যদের এলাকা ছাড়ার আহ্বান জানানোসহ নির্বাচন কমিশনের অনুরোধে স্পিকার কর্তৃক নোটিশ করা হলেও অনেক সংসদ সদ্স্য তা উপেক্ষা করে এলাকায়ই অবস্থান করেছিলেন। কিন্তু তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি।

এএস/জেডএ/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।