সিটি নির্বাচন : বিলবোর্ড সরলেও সরছে না পোস্টার
সিটি নির্বাচনে আগাম প্রচারণার সব বিলবোর্ড, ব্যানার, পোস্টার নামিয়ে ফেলার সময়সীমা শেষ হয়েছে শুক্রবার মধ্যরাতে। এর মধ্যে প্রধান সড়কগুলো থেকে বেশিরভাগ পোস্টার বিলবোর্ড নামিয়ে ফেলা হয়েছে। তবে রয়ে গেছে মহল্লার পোস্টার। আবার কোথাও কোথাও নতুন করে পোস্টার লাগাতেও দেখা গেছে। রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা ও মহল্লা ঘুরে এ চিত্র দেখা গেছে।
শনিবার সকাল থেকে মহানগরীর বিভিন্ন সড়ক ঘুরে দেখা যায় নির্বাচন কমিশনের আচরণবিধি মেনে প্রচারণার প্রায় বেশিরভাগ বিলবোর্ডই খুলে ফেলা হয়েছে। তবে, পাড়া-মহল্লা কিংবা অলিতে গলিতে এখনও রয়ে গেছে নির্বাচনী প্রচারণার রঙিন পোস্টার।
আচরণবিধি লঙ্ঘনের অংশ হিসেবে সম্ভাব্য মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীদের লাগানো পোস্টার, ব্যানার ও বিলবোর্ড সরিয়ে নিতে গত বুধবার ৪৮ ঘণ্টা সময় বেধে দিয়েছিলেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী রকিব উদ্দিন আহমদ। দু’একজন ছাড়া এ নির্দেশকে তোয়াক্কা করেননি বেশিরভাগ সম্ভাব্য প্রার্থী। এছাড়া নিয়ম লঙ্ঘন করে প্রার্থীদের নিয়মিত গণসংযোগ ও শোডাউনতো চলছেই।
সিটি করপোরেশন (নির্বাচন আচরণ) বিধিমালা-২০১০ এর অনুচ্ছেদ ৪-এ নির্বাচনী প্রচারণার বিষয়ে বলা হয়েছে, কোনো প্রার্থী বা তার পক্ষ থেকে কোনো ব্যক্তি ভোটগ্রহণের জন্য নির্ধারিত তারিখের ২১ দিন পূর্বে কোনো প্রকার নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করতে পারবেন না। আবার ভোটগ্রহণের ৩২ ঘণ্টা আগে প্রচারণা বন্ধ করতে হবে।
সিটি করপোরেশন আচরণবিধি ২০১০ (সংশোধিত) অনুসারে পোস্টার সাদা-কালো রঙের হতে হবে এবং এগুলোর আয়তন ২৩”*১৮” এর বেশি হবে না।
দেখা গেছে, প্রার্থীরা এই আইন অমান্য করে নগরী জুড়ে নানা রঙের লিফলেট, পোস্টার ও ব্যানার ব্যবহার করেছেন। কোনো প্রার্থীর মধ্যে পোস্টারের আকার বা রঙের ব্যবহার সম্পর্কে আচরণবিধি মেনে চলতে দেখা যায়নি।
নগরীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, আগাম প্রচারণামুলক বিলবোর্ড ও পোস্টার নামিয়ে ফেলার নির্দেশ দেওয়ার পর অনেকেই তা নামিয়ে ফেলেন। তবে নগরীর দেয়ালে দেয়ালে এখনও শোভা পাচ্ছে মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীদের বাহারি সব পোস্টার। শুধু পোস্টারের মাধ্যমে প্রচারণাই নয়, এর সঙ্গে চলছে মসজিদে মসজিদে মিলাদ ও গণসংযোগও।
সম্ভাব্য মেয়র প্রার্থী সাঈদ খোকন, আনিসুল হক, বাহাউদ্দিন বাবুল, হাজী সেলিম ও সাইফুদ্দিন আহমেদ মিলনসহ বিভিন্ন কাউন্সিলর পদপ্রার্থীদের ছবি, স্লোগান ও প্রতিশ্রুতি সম্বলিত পোস্টারে ছেয়ে গেছে শাহবাগ, লালবাগ, গুলিস্তান, পল্টন ও কাকরাইল সেগুনবাগিচাসহ নগরীর বিভিন্ন এলাকা। এসব এলাকার বাড়ি-ঘর ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের দেয়ালেও লাগানো হয়েছে বাহারি সব পোস্টার। এছাড়া রাস্তার পাশের বৈদ্যুতিক ও টেলিফোনের খুঁটিতে ঝুলানো হয়েছে ছোট ছোট ব্যানার ও ফেস্টুন।
দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকায় আওয়ামী লীগ সমর্থিত মেয়র প্রার্থী সাঈদ খোকন ও হাজি সেলিম আজিমপুর, গুলিস্তান ও ফুলবাড়িয়া এলাকায় তাদের বিলবোর্ড সরালেও পোস্টার ও ফেস্টুনে ছেয়ে গেছে সব এলাকা। এসব পোস্টার তুলে ফেলাতো দূরের কথা উপরন্তু নতুন পোস্টার লাগতে দেখা গেছে অনেক সমর্থককে।
সম্ভাব্য মেয়র প্রার্থী হাজী সাইফুদ্দিন আহম্মেদ মিলন বলেন, বিলবোর্ড সরিয়ে নেয়া হয়েছে। কিন্তু নির্বাচন কমিশনের দেওয়া নির্ধারিত সময়ের মধ্যে পোস্টার সরানোটা খুব ডিফিকাল্ট।
অন্যদিকে ডিসিসি নির্বাচনের সম্ভাব্য কাউন্সিলর প্রার্থী আনোয়ার ইকবাল সান্টু বলেন, নির্বাচন কমিশনের সময়সীমার মধ্যে পোস্টার সরানোটা খুব কষ্টসাধ্যের ব্যাপার তারপরও চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।
এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে ঢাকা সিটি উত্তরের দায়িত্বে থাকা রির্টানিং কর্মকর্তা মিহির সারওয়ার মর্শেদ জাগো নিউজকে জানান, যারা এখনও পোস্টার অপসারণ করেনি আমরা তাদের কাছে এর কারণ জানতে চাইবো। যদি তারা এর উপযুক্ত উত্তর দিতে না পারেন তাহলে তাদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে দক্ষিণের দায়িত্বে থাকা রির্টানিং কর্মকর্তা শাহ আলমকে ফোনে পাওয়া যায় নি।
এএইচ/আরআই/ এমএএস