দুর্নীতির অভিযোগ : শিগগিরই শুরু হচ্ছে আইভীর বিরুদ্ধে তদন্ত


প্রকাশিত: ১১:৫৩ এএম, ২০ মার্চ ২০১৫

নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের (নাসিক) মেয়র ডা. সেলিনা হায়াত আইভীর বিরুদ্ধে ওঠা দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ তদন্তে উচ্চপর্যায়ের একটি কমিটি গঠন করেছে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়। স্থানীয় সরকার বিভাগের যুগ্ম সচিব পরিমল কুমার দেবকে আহ্বায়ক করে তিন সদস্যের এ তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। কমিটিকে আগামী ১৫ কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, নারায়ণগঞ্জ পৌরসভার মেয়র থাকার সময় থেকে সিটি করপোরেশনের মেয়র হওয়ার পর বর্তমান পর্যন্ত আইভীর বিরুদ্ধে পঞ্চবটীতে পার্ক নির্মাণ, দোকান-ফ্ল্যাট বরাদ্দসহ বিভিন্ন উন্নয়নকাজে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ এসেছে মন্ত্রণালয়ে। এ ছাড়া সম্প্রতি জাতীয় সংসদে নাসিকের অনিয়ম সম্পর্কিত প্রশ্ন ওঠার পর নাসিকের দেওয়া তথ্যকে `অসত্য ও ভুল` বলে অভিযোগ করে আবেদন করায়, তা সরেজমিনে তদন্তের জন্য কমিটি গঠনের নির্দেশ দেয় মন্ত্রণালয়। আগামি রোববার অথবা সোমবার স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় থেকে পরিদর্শন টিম নারায়ণগঞ্জে যাচ্ছেন বলে মন্ত্রণালয় সূত্র নিশ্চিত করেছে ।

সূত্র জানায়, গত ১১ মার্চ স্থানীয় সরকার বিভাগের যুগ্ম সচিব পরিমল কুমার দেবকে আহ্বায়ক করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি করা হয়। কমিটিকে আগামী ১৫ কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তদন্ত কমিটিতে স্থানীয় সরকার বিভাগের পৌর-২ অধিশাখার উপসচিব কাজী আসাদুজ্জামানকে সদস্যসচিব এবং ঢাকা বিভাগীয় কমিশনারের একজন প্রতিনিধিকে সদস্য করা হয়েছে। মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব জসীম উদ্দিন হায়দার স্বাক্ষরিত এক আদেশে (স্মারক নম্বর-৪৬.০৭১-১১৯) এ কমিটি গঠনের কথা জানানো হয়। কমিটি এরই মধ্যে নারায়ণগঞ্জ পৌরসভা (সাবেক) থেকে শুরু করে সিটি করপোরেশনের বতর্মান পর্যন্ত নানা দুর্নীতি ও অনিয়মের বিষয়ে তথ্য চেয়েছে।

নারায়ণগঞ্জে রাজউকের সব সম্পত্তি নারায়ণগঞ্জ পৌরসভার (সাবেক) তত্ত্বাবধানে প্রদানের আদেশ চেয়ে ২০০৮ সালে করা একটি রিট পিটিশন (৫১৬/২০০৮) সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট ডিভিশনের বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী ও বিচারপতি শেখ মোহাম্মদ জাকির হোসেনের বেঞ্চ ২০১১ সালের ২ ফেব্রুয়ারি খারিজ করে দেন। কিন্তু ওই আদেশ অমান্য করেই সিটি করপোরেশন রাজউকের সম্পত্তি দখল করে সেখানে বহুতল আবাসিক বাণিজ্যিক ভবনসহ মার্কেট নির্মাণ করেছে; যার পরিমাণ চাষাঢ়া বাণিজ্যিক এলাকায় প্রায় তিন বিঘা, সলিমুল্লাহ সড়কেপ্রায় চার বিঘা এবং খানপুরবাণিজ্যিক এলাকায় দুই বিঘা। এর মধ্যে রাজউকের আপত্তি সত্ত্বেও মাধবী প্লাজা তৈরি করা হয়েছে।

মন্ত্রণালয়ের দেয়া অভিযোগে বলা হয়ছে, রাজউকের নিজস্ব জমিতে পৌর হকার্স মার্কেট নির্মাণ করে বরাদ্দ দেওয়া হয় এবং সেখানেও ব্যাপক দুর্নীতি করা হয়। ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা জানান, হকার্স মার্কেটের দোকানগুলো থেকে বহু মামলার আসামি আবু সুফিয়ান মেয়রের কথা বলে দুই থেকে তিন লাখ টাকা করে নিয়েছেন এবং প্রতি মাসে আট থেকে দশ হাজার টাকা ভাড়া নেওয়া হলেও রসিদের মাধ্যমে মাত্র ৪০০ টাকা দেখানো হচ্ছে।

মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, সংসদের চলমান পঞ্চম অধিবেশনে নাসিকের পঞ্চবটীতে পার্ক নির্মাণ ও দোকান-ফ্ল্যাট বরাদ্দ সম্পর্কিত দুটি তারকা চিহ্নিত প্রশ্নের ব্যাপারে নাসিকের প্রধান নির্বাহী মোস্তফা কামাল মজুমদার ও নাসিকের সচিব সাখাওয়াত হোসেন স্বাক্ষরিত তথ্যের ভিত্তিতে উত্তর দেন স্থানীয় সরকার ও পল্লী উন্নয়নমন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম। কিন্তু ওই উত্তরে ভুল ও মিথ্যা তথ্য সরবরাহের অভিযোগ এনে সংসদীয় কমিটির কাছে আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে তদন্ত কমিটি গঠন করার উদ্যোগ নেয় মন্ত্রণালয়।

এএইচ/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।