সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্ট বিল-২০১৪ পাস

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ১০:১৮ এএম, ০১ জুলাই ২০১৪

সংসদে সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্ট বিল-২০১৪ পাস হয়েছে। মঙ্গলবার জাতীয় সংসদে তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বিলটি উত্থাপন করলে তা কণ্ঠভোটে পাস হয়। বিলটির ৯টি দফার ওপর ১৭ টি সংশোধনী প্রস্তাব করেন পাঁচজন সংসদ সদস্য। এর মধ্যে স্বতন্ত্র সদস্য ডাক্তার রুস্তম আলী ফরাজীর একটি মাত্র সংশোধনী ছাড়া আর কোনোটাই গ্রহণ করা হয়নি। একইভাবে বিলটি জনমত যাচাইয়ের প্রস্তাবও কণ্ঠভোটে নাকচ হয়ে যায়।

ডাক্তার রুস্তম আলী ফরাজীর সংশোধনীটি ছিলো দফা দুই এর (৪) উপ-দফার ৩য় পঙ্কতিতে ‘বিধবা বোন’ শব্দাবলীর পরে ‘এবং প্রাপ্ত বয়স্ক প্রতিবন্ধী ভাই’ শব্দাবলী সন্নিবেশ করা হোক। তার এ প্রস্তাব গ্রহণ করেন অর্থমন্ত্রী।

গত ২ এপ্রিল দেশের সাংবাদিকদের কল্যাণ নিশ্চিত করতে একটি কল্যাণ ট্রাস্ট গঠনের প্রস্তাব করে তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বিলটি উত্থাপন করেন। পরে বিলটি পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য সংসদীয় কমিটিতে পাঠানো হয়।

স্থায়ী কমিটি গত ১৯ মে বৈঠক করে বিলটির পর্যালোচনা করে দুটি দফায় সংশোধন এনে তা চূড়ান্ত করে। এরপর গত ৮ জুন সেটি সংসদের বৈঠকে উপস্থাপন করেন কমিটির সভাপতি একেএম রহমাতুল্লাহ।

পাস হওয়া আইনে, সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের কার্যালয়, সাধারণ পরিচালনা, প্রশাসন, ট্রাস্টের কার্যাবলী, ট্রাস্টের তহবিল, বাজেট, হিসাবরক্ষণ ও নিরীক্ষা, বোর্ড গঠন, বোর্ডের সভা, ব্যবস্থাপনা পরিচালক, কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগসহ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে সুনির্দিষ্ট বিধানের প্রস্তাব করা হয়েছে। বিলে ট্রাস্ট পরিচালনার জন্য তথ্যমন্ত্রীর নেতৃত্বে ১৩ সদস্যের ট্রাস্টি বোর্ড গঠনেরও প্রস্তাব করা হয়েছে।

এ বোর্ডে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন মনোনীত দুইজন এবং সরকার মনোনীত তিনজন সাংবাদিক প্রতিনিধি রাখার কথা বলা হয়েছে।

এই বিলটি পাস হওয়ার পর সরকার দ্রুত সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্ট নামের একটি ট্রাস্ট স্থাপন করবে। যার প্রধান কার্যালয় থাকবে ঢাকায়। আর ট্রাস্ট পরিচালনার জন্য একটি ট্রাস্টি বোর্ড গঠন করা হবে। তথ্যমন্ত্রী এই বোর্ডের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পাবেন। ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে সরকার একজনকে নিয়োগ করবেন। এই বোর্ডের সদস্য থাকবেন-তথ্যসচিব, প্রধান তথ্য অফিসার, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মনোনীত মহাপরিচালক পদমর্যাদার একজন প্রতিনিধি, অর্থ বিভাগের যুগ্ম সচিব পদমর্যদার একজন প্রতিনিধি, পিআইবি মহাপরিচালক, তথ্য মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব (প্রেস), বিএফইউজের দুজন প্রতিনিধি এবং সরকার মনোনীত তিনজন সাংবাদিক।

বিলে বলা হয়েছে, ট্রাস্ট স্থাপনের পর সরকার অনুদান হিসেবে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ প্রদান করবে। সরকার প্রদত্ত অনুদান ছাড়াও স্থানীয় কর্তৃপক্ষ প্রদত্ত অনুদান, গৃহীত ঋণ, ট্রাস্ট পরিচালিত প্রতিষ্ঠান ও সম্পদ হতে আয়, ট্রাস্টের সম্পত্তি বিক্রি করে পাওয়া অর্থ এবং দেশি-বিদেশি অন্যান্য উৎস হতে পাওয়া অর্থে ট্রাস্টের তহবিল গঠন করা হবে।

আরো বলা হয়েছে, দুস্থ ও অস্বচ্ছল সাংবাদিকদের কল্যাণের জন্য এই ট্রাস্টের লক্ষ্য হবে অক্ষম ও অসমর্থ সাংবাদিকদের আর্থিক সাহায্য প্রদান, অসুস্থ সাংবাদিকদের সুচিকিৎসা নিশ্চিত করা এবং সাংবাদিক ও তাদের সন্তানদের বৃত্তি প্রদান করা। সংসদীয় কমিটি এখানে নিহত ও আহত সাংবাদিকদের পরিবারকে অন্তর্ভুক্ত করার সুপারিশ করেছে।

বিলে সাংবাদিকের সংজ্ঞায় বলা হয়েছে, সাংবাদিক অর্থ কোনো ব্যক্তি যিনি একজন সার্বক্ষণিক সাংবাদিক এবং যিনি প্রিন্ট অথবা ইলেট্রনিক মিডিয়ায় কাজে নিয়োজিত আছেন এবং কোনো সম্পাদক, সম্পাদকীয় লেখক, সংবাদ সম্পাদক, উপ-সম্পাদক, ফিচার লেখক, রিপোর্টার, সংবাদদাতা, কপি টেস্টার, কার্টুনিস্ট, সংবাদ চিত্রগ্রাহক, ক্যালিগ্রাফিস্ট এবং প্রুফ রিডারও এর অন্তর্ভুক্ত হবে।

বিলের উদ্দেশ্য ও কারণ সংবলিত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের অসুস্থ, অসচ্ছল ও আহত সাংবাদিকদের মধ্যে এবং নিহত সাংবাদিক পরিবারের সদস্যদের অনুকূলে নিয়মিত সহায়তা ভাতা, অনুদান প্রদান এবং তাদের কল্যাণের জন্য একটি স্থায়ী প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো প্রয়োজন।

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।