পুড়লো ৩৮ লাখ টাকার ঘড়িটিও


প্রকাশিত: ০৮:৪২ এএম, ০৩ জানুয়ারি ২০১৭

‘আগুনে ভবন ধসে একটি দোকান পুরোই চাপা পড়ে গেছে। কসমেটিকসের দোকান ছিল সেটি। বাকি দুটি আগুনে জ্বলছে। ৩৮ লাখ টাকার ঘড়িটিও পুড়ে গেল। ভেতরে কী হচ্ছে, এখনও জানতে পারিনি। পথে বসা ছাড়া আর কোনো উপায় নেই। মন চাইছে আগুনে ঝাঁপ দিয়ে জ্বালা মেটাই।’

ষাটোর্ধ্ব বৃদ্ধ জাফর সরদার এভাবেই বিলাপ করছিলেন। চোখের সামনে সব পুড়ে যেতে দেখে প্রায় মানসিক ভারসাম্যহীন হয়ে পড়ছেন এই বৃদ্ধ। মঙ্গলবার দুপুরেও যখন গুলশান ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন মার্কেট থেকে আগুনের শিখা আর ধোঁয়া বের হচ্ছিল, তখন জাফর বুক চাপড়ে প্রলাপ বকছিলেন। অনেকে সামলে নেয়ার চেষ্টা করছেন। কেউ বাতাস করছেন কেউ আবার পানি খাওয়াচ্ছেন। কিন্তু কেউ-ই তাকে বুঝ দিতে পারছেন না।

কত টাকার মালামাল ছিল দোকানে- জিজ্ঞাস করতেই চোখের জলে বুক ভাসিয়ে দিলেন। চোখ মুছতে মুছতে বললেন, কসমেটিকস হলেও নামি-দামি নানা পণ্য ছিল দোকানে। গত সপ্তায় একটি ঘড়ি ইমপোর্ট করেছি ৩৮ লাখ টাকা মূল্যের। এখন বোঝেন, তিনটি দোকান মিলে কত কোটি টাকার পণ্য ছিল?

purlo

আশা ইনপেক্স নামের আরেক দোকানের মালিক আবু বকর বলেন, ‘খবর পেয়ে রাত পৌনে ২টায় এসেছি। এখনও ভিতরে প্রবেশ করতে পারিনি। ধোঁয়া ছাড়া আর কিছুই দেখতে পাইনি। কোনো মালই বের করতে পারি নাই। প্রায় কোটি টাকার মাল ছিল দোকানে।’

আবু বকরের পাশেই দাঁড়িয়ে চোখের জল মুছছিলেন আরেক দোকানি শহীদ। মার্কেটে দুটি কার্পেটের দোকান তার। দুটোই পুড়ে গেছে। রাত থেকে বাইরে দাঁড়িয়ে। কয়েকবার ভেতরে প্রবেশ করার চেষ্টা করলেও ফায়ার সার্ভিস আর পুলিশের সদস্যরা ভেতরে প্রবেশ করতে দেয়নি।

তিনি বলেন, ‘আমার সমস্ত বিনিয়োগ এই দোকানেই। এর বাইরে পুঁজি বলতে আর কিছুই নেই। শত চেষ্টা করেও মনকে শান্ত করতে পারছি না।’



এএসএস/জেডএ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।