আমাদের কষ্ট কেউ বোঝে না


প্রকাশিত: ০৬:৩৮ এএম, ০৩ জানুয়ারি ২০১৭

রাত সোয়া ২টায় আগুন নেভাতে গুলশান এসেছি। এরপর ঘুম তো দূরের কথা, খাওয়াও হয়নি। নিরবিচ্ছিন্নভাবে কাজ করে যাচ্ছি। একবারও মনে হয়নি আমার বিশ্রাম নেয়া দরকার। খেতে যাওয়া দরকার। আগুন নেভাতে হবে এটাই এখন লক্ষ্য। অথচ আমাদের কথা কেউ আর পরে মনে রাখে না। আমাদের কষ্ট বুঝি শুধু আমারাই। কেউ বোঝে না।

এভাবেই নিজের অব্যক্ত কষ্ট আর অভিমানের কথা বলছিলেন ফায়ার ফাইটার নুরুল হক।

তিনি বলছিলেন, এখন ব্যবসায়ীরা গালিগালাজ করছেন। আমাদের কাছে পানি নেই কেন, সারাটা রাত ধরে দাঁড়িয়ে থেকে পানি দিচ্ছি, একবারও পানির অভাব হয়নি। পাঁচটি পাইপে পানি যাচ্ছে। ডিসিসি মার্কেট ধসে পড়ায় আগুন এখনো নিয়ন্ত্রণ করা যায়নি। নিচে আগুন থাকায় ধোঁয়া উড়ছে উপরে।

koshto

তিনি বলেন, আমাদের চেষ্টা ছিল, চেষ্টা এখনো চলছে। তাই গুলশান শপিং কমপ্লেক্স/গুলশান কমার্স মার্কেটে এখনো আগুন ভেতরে যায়নি। বাইরে থেকে ধোঁয়া ঢুকে কুণ্ডুলি আকারে বেড়িয়ে যেতে দেখা যাচ্ছে। নতুন এই মার্কেটে আগুন লাগার আতঙ্কে ব্যবসায়ীরা ছুটাছুটি করছেন।

‘যতো মানুষ এখানে এসেছে তার ১ শতাংশ মানুষও এখানে সহযোগিতা করছে না ফায়ার সার্ভিসকে। বরং ডিস্টার্ব করছেন। আমার মতো এখানে অর্ধশত ফায়ার ফাইটার কর্মী কাজ করছেন। সবারই একই অবস্থা । বিশ্রামহীন, খাওয়াহীন অবস্থায় সবাই কাজ করছেন।’- বলে উল্লেখ করেন তিনি।

koshto

সরেজমিনে দেখা যায়, আগুন নেভাতে তৎপর ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। একটার পর একটা পানির বিশেষ যানবাহন যাচ্ছে আসছে। পাইপ দুজন করে ধরে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ভবনের উপরে উঠে পানি দিতে দেখা গেছে।

শামসুল ইসলাম নামে অপর ফায়ার কর্মী কলা আর রুটি মুখে নিয়ে বলছিলেন- মাত্র খাওয়ার সুযোগ হলো, আমি হয়তো খাওয়ার সুযোগ পেলাম অন্যরা এখনো সে সুযোগও পাননি। ফায়ার সার্ভিসের কাজটা নেশার মতো। সেবার নেশা। যতক্ষণ আগুন না নেভে ততক্ষণ যেন নেশার মতো কাজে লেগে থাকতে ইচ্ছে করে।

জেইউ/জেডএ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।