ধর্ষণ-নির্যাতন : বছরের প্রথম দিনেই ওসিসিতে চার নারী


প্রকাশিত: ০৯:০৮ এএম, ০২ জানুয়ারি ২০১৭
প্রতীকী ছবি

জীবিকার সন্ধানে মোহাম্মদপুর তাজমহল রোডের জেসিকা নামে একটি বিউটি পার্লারে প্রশিক্ষণ নিচ্ছিলেন ২৩ বছর বয়সী তরুণী অনামিকা (ছদ্মনাম)।

পার্লারের মালিক রুপা তাকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, তিন মাসের প্রশিক্ষণ শেষে দেয়া হবে চাকরি। গেল বছরের ৩১ ডিসেম্বর রাতে রুপা তার এক ছেলেবন্ধুকে বিউটি পার্লারে ডেকে আনেন। রুপার বন্ধু চাকরি দেয়ার ব্যাপারে অনামিকার সঙ্গে আলাপ করবেন এমন কথা বলে তাকে একটি কক্ষে পাঠান। সেখানে রুপার বন্ধু তাকে ধর্ষণ করেন। এরপর ইংরেজি নতুন বছরের প্রথম দিনই অনামিকা ভর্তি হন ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি)।
 
নতুন বছরের প্রথমদিন শুধু অনামিকাই নন, ধর্ষণ ও পারিবারিক নির্যাতনের শিকার হয়ে ঢামেক ওসিসিতে ভর্তি হয়েছেন আরো চার নারী। তাদের মধ্যে দুই নারী ধর্ষণের শিকার ও অপর দুই নারী শারীরিক নির্যাতনের শিকার। এসব ঘটনায় পৃথক মামলা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ওসিসি কো-অর্ডিনেটর ডা. বিলকিস বেগম।

সোমবার সকালে সরেজমিন পরিদর্শনে দেখা গেছে, ফরেনসিক মেডিসিনের একজন নারী চিকিৎসক ধর্ষণের শিকার দুই নারীকে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে অপেক্ষা করছেন।

নতুন বছরের প্রথম দিনই নির্যাতনের শিকার হয়ে কোনো নারী বা শিশু ভর্তি হয়েছে কি না- জাগো নিউজের এ প্রতিবেদক ওসিসি কো-অর্ডিনেটর ডা. বিলকিস বেগমের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, নববর্ষের প্রথমদিন নির্যাতনের শিকার হয়ে কোনো নারী ও শিশু যেন ভর্তি না হয় মনে মনে তা চাইছিলাম। কিন্তু প্রথমদিন শুধু ঢামেক ওসিসিতেই চার নারী ধর্ষণ ও শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়ে ভর্তি হয়েছেন। সারা বছরটি কেমন যায় সে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন বলে তিনি মন্তব্য করেন।

অনামিকা গত ৩১ ডিসেম্বর রাত আনুমানিক সাড়ে ৮টায় ধর্ষণের শিকার হন। অনামিকা রাজধানীর মোহাম্মদপুরের তাজমহল এলাকার ‘জেসিকা বিউটি পার্লার’ নামে একটি বিউটি পার্লারে কাজ করতেন।

এছাড়া ৩১ ডিসেম্বর রাতে রাজধানীর পশ্চিম মালিবাগ ডাক্তার গলির বাসিন্দা সালমা নামের এক নারী স্বামীর নির্যাতনের শিকার হন। সালমা ওসিসি চিকিৎসকদের জানান, তার স্বামী রাসেল আলম আগেও তাকে নির্যাতন করেছেন। তার বিরুদ্ধে থানায় একাধিক মামলা করা হয়েছে। ৩১ ডিসেম্বর রাতে তাকে মামলা তুলে নিতে চাপ সৃষ্টি করেন। রাজি না হওয়ায় ফের তার ওপর নির্যাতন চালানো হয়।

নববর্ষের প্রথমদিন পটুয়াখালীর বাউফল থানার আইলা গ্রামের সুফিয়া (৩৮) নামে এক নারী ভর্তি হন। মাস ছয়েক আগে সরকারিভাবে গৃহকর্মীর কাজ নিয়ে সুফিয়া সৌদি আরব গিয়েছিলেন। তিনি যে বাড়িতে কাজ করতেন সে বাড়ির মালিক কাজের নানা ভুল ধরে তাকে নির্যাতন করতেন। ছয় মাস কাজ করলেও তাকে মাত্র তিন মাসের বেতন দেয়া হয়। নির্যাতনের শিকার সুফিয়া গত মাসে পালিয়ে পুলিশে রিপোর্ট করেন। পরে বাংলাদেশ দূতাবাসের সহায়তা ২৪ ডিসেম্বর দেশে ফিরে মামলা করেন তিনি।

গত ২৪ ডিসেম্বর মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখানের রুনা (ছদ্মনাম) নামের এক তরুণীকে ধর্ষণ করেছেন রন্টি নামে তার এক বন্ধু।  

এমইউ/এনএফ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।