যুক্তরাজ্যে বৈধতা হারিয়েছে তারেকের পাসপোর্ট
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বড় ছেলে ও যুক্তরাজ্যে অবস্থানরত বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পাসপোর্ট বৈধতা হারিয়েছে। তার পাসপোর্টের মেয়াদ ২০১৩ সালেই শেষ হয়ে গেছে বলে নিশ্চিত করেছে লন্ডন ও ঢাকার একাধিক সূত্র। যুক্তরাজ্যে তিনি এখন শরণার্থী স্ট্যাটাসে আছেন বলে জানা গেছে।
দু’মাস আগে ছোট ভাই আরাফাত রহমান কোকো’র মৃত্যুতেও মালয়েশিয়া যেতে না পারার পেছনে এই পাসপোর্টের বৈধতা না থাকাই কাজ করেছে বলেও সূত্রগুলো জানায়।
তারেক ২০০৮ সালের সেপ্টেম্বরে লন্ডনে যাওয়ার পর ওই বছরের ডিসেম্বরে তার পাসপোর্ট সর্বশেষ নবায়ন করেন। তার মেয়াদ ২০১৩ সালে শেষ হওয়ার পর তিনি পাসপোর্ট নবায়ন করতে আর লন্ডনে বাংলাদেশ দূতাবাসে যোগাযোগ করেননি বলে ঢাকায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে জানিয়েছে সেখানকার দূতাবাস।
তারেক ব্রিটিশ পাসপোর্টও পাননি বলে লন্ডনে বাংলাদেশ হাই কমিশন নিশ্চিত করেছে। ছয় বছর ধরে যুক্তরাজ্যে অবস্থানরত তারেককে ফিরিয়ে আনতে অনেক দিন ধরেই তৎপরতা চালাচ্ছে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকার।
চিকিৎসাকেই অবস্থানের কারণ হিসেবে দেখালেও তারেককে ফিরিয়ে আনতে বাংলাদেশ সরকারের বার বার নেওয়া উদ্যোগকে এবার যুক্তরাজ্য সরকার গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছে বলেও জানা গেছে।
লন্ডনে বাংলাদেশ হাই কমিশন তারেকের বিষয়টি নিয়ে যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্র দপ্তরসহ সংশ্লিষ্ট সব কার্যালয়ে তদ্বির চালিয়ে যাচ্ছে। দেশটির পররাষ্ট্র দপ্তরে চিঠিও দেওয়া হয়েছে। ১৯৫৮ সালে গৃহীত শরণার্থী সনদের ওপর ভিত্তি করে তারেকের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণের কথা যুক্তরাজ্যের কাছে তুলে ধরেছে বাংলাদেশ সরকার।
তবে যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্র দপ্তর কোনো আনুষ্ঠানিক উত্তর না দিলেও তারেকের বিষয়টি সম্পর্কে হাই কমিশনকে জানিয়েছে। তারা বলেছে, আইনগত বাধা থাকায় কোনো ব্যক্তির ব্যক্তিগত তথ্য তারা দিতে পারছে না।
লন্ডন হাই কমিশন থেকে ঢাকাকে জানানো হয়েছে, গত দুই মাসে তারেক তার চলাফেরা সীমাবদ্ধ রেখেছেন। কোকোর গায়েবানা জানাজা ছাড়া আর কোথাও তাকে দেখা যায়নি। সূত্র বলেছে, “সম্ভবত আমাদের চিঠির পর ব্রিটিশ সরকার তারেককে রাজনৈতিক কর্মসূচিতে অংশ নিতে বারণ করেছে।”
২০০৮ সালে জরুরি অবস্থার সময় গ্রেপ্তার তারেক জামিনে মুক্তি পেয়ে ২১ অগাস্টের গ্রেনেড হামলাসহ ডজন খানেক মামলা মাথায় নিয়ে চিকিৎসার জন্য লন্ডন পাড়ি দিলেও সেখানে বিএনপির বিভিন্ন কর্মসূচিতে তিনি অংশগ্রহণ করে আসছিলেন।
পলাতক থাকা তারেকের বিভিন্ন বক্তব্যে বিতর্কের ঝড় বইলে এক পর্যায়ে বাংলাদেশের আদালত তার বক্তব্য-বিবৃতি প্রচারে নিষেধাজ্ঞা দেয়। বাংলাদেশ সরকার তারেকের ব্যাপারে যুক্তরাজ্য সরকারের জবাবের জন্য এখন অপেক্ষা করছে।
এসআরজে