ঢাকার সঙ্গে আমার পরিবারের আবেগের সম্পর্ক : সাঈদ খোকন
ঢাকা নগরের সঙ্গে আমাদের পারিবারিক সম্পর্ক। প্রায় ৬০/৬৫ বছর ধরে এই নগরের সঙ্গে আবেগের সম্পর্ক তৈরি হয়েছে আমাদের। নানা ছিলেন এক সময় এই নগরের সর্দার। বাবা মোহাম্মদ হানিফ ছিলেন প্রথম নির্বাচিত মেয়র। আমাদের পরিবারের প্রতিটি মানুষ নগরকে ভালোবাসেন নিজের শহর হিসেবে নয়, নিজের পরিবারের সদস্যদের মতো।
এভাবেই কথাগুলো বলছিলেন আসন্ন ঢাকা সিটি করপোরেশন নির্বাচনের দক্ষিণের মেয়র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন প্রত্যাশী সাঈদ খোকন। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী হিসেবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাকে চুড়ান্ত করেছেন। সাঈদ খোকন ঢাকার প্রথম নির্বাচিত মেয়র মোহাম্মদ হানিফের এক মাত্র ছেলে।
মঙ্গলবার সকালে পৈত্রিক বাড়িতে জাগোনিউজকে সময় দেন খোকন। জানালেন, আসন্ন নির্বাচন ও সিটি করপোরেশনকে ঘিরে নিজের পরিকল্পনার কথা। তার সঙ্গে কথা বলেছেন জাগোনিউজের জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক সাইদ আরমান
‘দেখুন, ঢাকা নগরী, নগরীর মানুষ, ঢাকা সিটি করপোরেশন, ঢাকা সিটি করপোরেশনের নাগরিকরা যেন আমাদের পরিবারের সদস্য। তাদের সুখ-দুঃখ নিয়ে আমার নানা কাজ করে করেছেন। বাবাও কাজ করেছেন। ফলে এর প্রতিটি ক্ষেত্রে একটি আবেগ তৈরি হয়েছে। আবেগের সম্পর্ক তৈরি হয়েছে। প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম সেই আবেগ বহমান থাকছে। তারই ধারাবাহিকতায় আমার পথ চলা শুরু হয়েছে।’ আমার বিশ্বাস নগরের মানুষ সেটি মূল্যায়ন করবেন। বলছিলেন তরুণ রাজনীতিক সাঈদ খোকন।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ নেতা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাকে দলীয় প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করে কাজ করতে বলেছেন। এটা আমাদের আবেগের সম্পর্কের স্বীকৃতি। আমি ওনার সম্মান রক্ষা করতে নিজেকে উৎসর্গ করতে রাজি থাকবো। একইভাবে ঢাকাবাসীর জন্য নিজেকে উৎসর্গ করতে চাই।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মন্ত্রীসভার বৈঠকে প্রসঙ্গ টেনে বলেছেন, ‘নির্বাচনের কথা হলেই কেবল আমাদের খোকনকে দেখা যায়, এই বার্তাকে কীভাবে দেখছেন।
জাগোনিউজের পক্ষে জানতে চাইলে হাসতে হাসতে বলেন, মা সন্তানকে তো কতো কথাই বলেন। প্রধানমন্ত্রী আমার কাছে সে রকম মানুষ। আমি তার কাছে আদরের সন্তানের মতো। আমি তার নির্দেশনা মেনেই রাজনীতি করবো। নিজেকে উৎসর্গ করবো, যেটি আমি শুরুতে বলেছি।
দলীয় রাজনীতি আর নির্বাচনের রাজনীতি, কোনোটিতেই আপনি খুব বেশি সক্রিয় নয়, আবার অভিজ্ঞতাও নেই। কীভাবে মোকাবেলা করবেন, নির্বাচনের রাজনীতির এই চ্যালেঞ্জ।
‘হ্যা, এটা ঠিক, দলীয় রাজনীতি আর নির্বাচনের রাজনীতিতে কিছুটা পার্থক্য আছে। তবে আপনি যেটি বলেছেন, আমি দলীয় রাজনীতিতে সক্রিয় নই, এটা ঠিক না। আমি ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক। সভাপতি বা সাধারণ সম্পাদক নই। তাই আমার সম্পৃক্ততা খুব বেশি দৃশ্যমান হয়না। সংবাদ মাধ্যমেও আসে না। তবে আমি সক্রিয়ভাবে কাজ করছি। দলের কর্মী হিসেবে কাজ করে যাচ্ছি।
আর নির্বাচনের রাজনীতি নিয়ে আমার চিন্তা আছে। এখানে অন্য দল ও মতের মানুষের সমর্থনও আদায়ের চেষ্টা থাকবে। তাদেরকে আমি সম্মান করে যাবো। কাউকে আঘাত করবো না। এটা আমার পারিবারিক আদর্শ। আমি আমার হয়ে যারা মাঠে থাকবে, তাদেরও এই নির্দেশনা দিয়ে যাচ্ছি।’ বলছিলেন সাবেক মেয়র মোহাম্মদ হানিফের ছেলে।
ঢাকার উন্নয়নে বাবার কোন আর্দশ মেনে চলবেন, এক কথায় বললেন, নগরের উন্নয়ন। নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হলে নগরবাসীর জন্য নিজের প্রতিশ্রুতির কথা জানাবেন খোকন। সেখানে ঢাকাকে একটি বাসযোগ্য নগরী করার প্রতিশ্রুতি থাকবে। তবে সেটি কতটা বাস্তবায়ন যোগ্য প্রতিশ্রুতি, নাকি ভোটের রাজনীতির প্রতিশ্রুতি এমন প্রশ্নে বলেন, চেষ্টা তো করতে হবে, কাউকে না কাউকে উদ্যোগ নিতে হবে।
সিটি করপোরেশনে দুর্নীতি বড় একটি সমস্যা, এর জন্য কি কোনো জাদুর কাঠি আছে, জানতে চাইলে তরুণ এই মেয়র প্রার্থী বললেন, দুর্নীতিতে জিরো টলারেন্স দেখাবো। এখানে কোনো ছাড় নয়। এটি দূর করতে হবে, নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।
আওয়ামী লীগের যারা মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন, তাদের পাশে পাবেন কিনা, খোকনের প্রত্যাশা, তারা ভালোবাসা নিয়ে আমার পাশে থাকবে।
বিএনপির অংশ গ্রহণ প্রসঙ্গে বলেন, বিএনপি অসুস্থ রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েছে। আমি চাই, তারা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে অংশ নিয়ে সুস্থ রাজনীতিকে ফিরে আসবে। এটা নগরের মানুষেরও প্রত্যাশা।
এসএ/বিএ/আরআইপি