সব দল অংশ না নিলেও ডিসিসি নির্বাচন : সিইসি
বিভক্ত ঢাকা সিটি করপোরেশন (ডিসিসি) নির্বাচনে সবার (সবদলের) অংশ গ্রহণে একটা গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করতে চায় ইসি। কিন্তু নির্বাচনে যদি সব দল অংশগ্রহণ নাও করে তাহলেও তাদেরকে ডিসিসি নির্বাচন সম্পন্ন করতে হবে বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী রকীবউদ্দিন আহমদ। রোববার দুপুরে শেরেবাংলা নগরস্থ নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিবালয়স্থ মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সিইসি এ কথা জানান।
তিনি বলেন, গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আমরা সবার অংশগ্রহণ চেয়েছিলাম। কিন্তু সবাই আসেনি। আমরা সবাইকে নির্বাচনে নিয়ে আসার চেষ্টা করবো। যদি তারা না আসে তাহলেও আমাদের নির্বাচন সম্পন্ন করতে হবে।
তিনি বলেন, এখন এসএসসি পরীা চলছে। সামনে এইচএসসি পরীক্ষা শুরু হবে। পরীক্ষার সময় শ্রেণীকক্ষগুলো একভাবে সাজানো থাকে। নির্বাচনের জন্য অন্যভাবে সাজাতে হয়। আবার সামনে রোজা রয়েছে। রোজার মধ্যে নির্বাচন অ্যাভয়েড করবো।
সিইসি আরো বলেন, পরীক্ষা ও রোজার মধ্যে কিছুদিনের ‘গ্যাপ’ দরকার। বড় না হলেও মাঝারি ধরনের একটা গ্যাপ যদি দেখিয়ে দেয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়, তার মধ্যে আমরা নির্বাচন করে ফেলার চেষ্টা করবো। আমরা শিগগিরই শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলে সব ঠিক করবো। কেননা, রোজার মধ্যে নির্বাচন করা যাবে না। আবার নির্বাচনের জন্য আমরা শিক্ষার্থীদেরও অসুবিধায় ফেলতে চাই না।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেন, চট্টগ্রাম সিটি নির্বাচন রোজার আগেই সম্পন্ন করার আইনি বাধ্যবাধকতা রয়েছে। আইন বাঁচিয়ে নির্বাচন করতে হবে। ১৮০ দিন সময়সীমা বেঁধে দেয়া আছে। ১৮০ দিনের মধ্যেই নির্বাচন করতে হবে। ২৬ জুলাই বৈঠক হয়েছিল, সে হিসেবে ২৫ জুলাইয়ের মধ্যে নির্বাচন করতে হবে। সে সময় রোজা থাকবে। তাই রোজার আগেই সিসিসি নির্বাচন অনুষ্ঠানের ছক করা হয়েছে।
তিনি বলেন, এখনও ডিসিসি ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) নির্বাচন একসঙ্গে করার ফাইনাল সিদ্ধান্ত নিইনি। কমিশন বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেব। তবে এর আগেও আমরা চার সিটি নির্বাচন একসঙ্গে করেছি।
সিইসি বলেন, ডিসিসি নির্বাচনের জন্য মাঠ পর্যায়ের কাজ আগামী ১০ মার্চের মধ্যে গুছিয়ে নিতে কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এরমধ্যে সীমানা অনুযায়ী ভোটার তালিকা বিন্যাসের কাজ শুরু করা হয়েছে। এছাড়া কেন্দ্র চূড়ান্ত করার কাজও শুরু হয়ে গেছে। বেশকিছু স্কুলের সামনে ওভারব্রিজ হওয়ায় কেন্দ্র পরিবর্তন হতে পারে। এ নিয়েও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সাথে বৈঠক করা হবে।
ডিসিসি নির্বাচনে সেনাবাহিনী ব্যবহার করা হবে কিনা জানতে চাইলে বলেন, স্থানীয় সরকার নির্বাচনের মতো ছোট নির্বাচনে এর আগে কখনও সেনাবাহিনী ব্যবহার করিনি। নরমাল আইনশৃঙ্খা বাহিনী দিয়েই নির্বাচন পরিচালনা করেছি।
তবে গত ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের মতো একই পরিস্থিতি সৃষ্টি হবে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেন, তখন আমরা সবাইকে নির্বাচনে অংশ নেয়ার জন্য বলেছিলাম। কিন্তু সব রাজনৈতিক দল অংশ নেয়নি। আশা করবো ডিসিসি ও চসিক নির্বাচনে সবাই অংশ নেবে। আশা করবো, সবার অংশ গ্রহণে একটা সুন্দর নির্বাচন হোক।
উল্লেখ্য, সর্বশেষ ঢাকা সিটি করপোরেশন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় ২০০২ সালে। ২০০৭ সালে মেয়াদ শেষ হওয়ার সময় তৎকালীন ফখরুদ্দিনের তত্বাববধায়ক সরকার নির্বাচনের উদ্যোগ নেয়নি। তখন থেকেই ঢাকা সিটি করপোরেশন চলছে প্রশাসক দিয়ে। পরে ২০১১ সালের ২৯ নভেম্বর ঢাকা সিটি করপোরেশনকে উত্তর ও দক্ষিণ দুই ভাগে বিভক্ত করা হয় নির্বাচন দেয়ার জন্য। কিন্তু এখনও দুই করপোরেশন চলছে প্রশাসক দিয়ে।
সংবাদ সম্মেলনে যুগ্ম-সচিব জেসমিন টূলী, জনসংযোগ পরিচালক এসএম আসদুজ্জামান উপস্থিত ছিলেন।
আরএস