ঢাকা আইনজীবী সমিতির নির্বাচন শুরু
ঢাকা আইনজীবী সমিতির নির্বাচন শুরু হয়েছে। এশিয়ার বৃহত্তম বার হিসাবে পরিচিত এই সমিতির নির্বাচন বুধবার সকাল ৯টায় শুরু হয়। দুই দিনব্যাপী (বুধবার ও বৃহস্পতিবার) এ নির্বাচন শেষ হবে বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টায়।
এই দু’দিন সকাল নয়টায় ভোটগ্রহণ শুরু হয়ে দুপুর একটায় মধ্যাহ্ন ভোজের বিরতির পর বেলা দুইটায় আবার শুরু হয়ে চলবে বিকাল পাঁচটা পর্যন্ত।
নির্বাচনে (২০১৫-২০১৬ বর্ষ) ২৫টি পদে মোট ৬১ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এর মধ্যে ১০টি সম্পাদকীয় পদের বিপরীতে ২৬ জন এবং ১৫টি সদস্য পদের বিপরীতে ৩৫ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এবারের নির্বাচনে ১৫ হাজার ৩৭২ জন ভোটার (আইনজীবী) তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন।
এ নির্বাচনে তিনটি প্যানেল থেকে প্রার্থীরা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। আওয়ামীলীগ সমর্থীত সাদা, বিএনপি-জামায়াত সমর্থীত নীল ও দল নিরপেক্ষ সবুজ প্যানেলের ব্যানারে প্রার্থীরা নির্বাচনে অবতীর্ণ হলেও মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে সাদা ও নীল দলের মধ্যে।
আওয়ামী লীগ সমর্থিত সাদা প্যানেলে সভাপতি পদে অ্যাডভোকেট সাইদুর রহমান মানিক এবং বিএনপি-জামায়াত সমর্থিত নীল প্যানেলে সভাপতি পদে অ্যাডভোকেট মাসুদ আহমেদ তালুকদার প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
সাধারণ সম্পাদক পদে সাদা প্যানেলে অ্যাডভোকেট আয়ুবুর রহমানের সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন নীল প্যানেলের অ্যাডভোকেট ওমর ফারুক ফারুকী।
এছাড়া সিনিয়র সহ-সভাপতি পদে সাদা প্যানেলে মোশাররফ হোসেন ও নীল প্যানেলে আফরোজা বেগম শেলী, সহসভাপতি পদে সাদা প্যানেলে তারিক হোসেন ও নীল প্যানেলে হারুন রশিদ খান, ট্রেজারার পদে সাদা প্যানেলে মকবুল হোসেন, নীল প্যানেলে আবু বক্কর সিদ্দিকী, সিনিয়র সহ-সাধারণ সম্পাদক পদে সাদা প্যানেলে আব্দুস সালাম খান ও নীল প্যানেলে হাফিজুর রহমান হাফিজ, সহ-সাধারণ সম্পাদক পদে সাদা প্যানেলে শাহাদাত হোসেন ভুইয়া ও নীল প্যানেলে তাহেরুল ইসলাম তৌহিদ, লাইব্রেরি সম্পাদক পদে সাদা প্যানেলে আলী আহমেদ ও নীল প্যানেলে মাজেদুর রহমান মামুন, সাংস্কৃতিক সম্পাদক পদে সাদা প্যানেলে আফরোজা ফারহানা আহমেদ অরেঞ্জ ও নীল প্যানেলে আকলিমা আক্তার আলো এবং দপ্তর সম্পাদক পদে আব্দুল হাই মামুন ও নীল প্যানেলে শেখ আলাউদ্দিন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
সদস্য পদে সাদা প্যানেলে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন আবু সাঈদ সিদ্দিকী, ফাতেমাতুজ জহুরা মনি, হাজেরা বেগম আজরা, লিলিয়া আক্তার লিলি, নাসিম জাহান রুবি, নুরজাহান আক্তার পারভীন, মরিয়ম বেগম তুলি, সাবিনা আক্তার দীপা, সাহিদা পারভীন নদী, তাহমিনা আহমেদ মিলি, বিল্লাল হোসেন লিজন পাটোয়ারি, নুর হোসেন, নুরুল ইসলাম তালুকদার, তাইবুর রহমান তুহিন ও তপো গোপাল ঘোষ।
অন্যদিকে সদস্য পদে নীল প্যানেলে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ফাতিমা ইয়াসমিন, রেহানা পারভীন, শাহনাজ পারভীন জোসনা, মিজানুর রহমান মিজান, মজিবর রহমান, মোস্তফা কামাল, শাহ আলম, মোহাম্মদ ইমদাদুল ইসলাম, মোহাম্মদ কামাল হোসেন, মোহাম্মদ রোকনুজ্জামান, মোহাম্মদ বিল্লাল হোসেন, মোহাম্মদ আব্দুল হান্নান খন্দকার, মোহাম্মদ আবুল কাশেম, মোহম্মাদ মাহবুব হাসান ও শফিকুল ইসলাম।
এদিকে নির্বাচনে সবুজ প্যানেল থেকে ২৫টি পদের বিপরীতে ১০টি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
এবারের নির্বাচনে প্রার্থীরা ব্যাপকভাবে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যবহার করেছেন। প্রায় এক মাসেরও বেশি সময় ধরে সাদা ও নীল প্যানেলের প্রার্থীরা প্রচারণা শুরু করেছেন।
এবারের নির্বাচনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার হিসাবে দায়িত্ব পালন করছেন ঢাকা বারের সাবেক সভাপতি, জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এসএম আলতাফ হোসেন। কমিশনার হিসাবে দায়িত্ব পালন করছেন, অ্যাডভোকেট রেজাউল করিম হিরন, অ্যাডভোকেট হাজী মো. মোহসীন, অ্যাডভোকেট আহমদ উল্লাহ আমান, অ্যাডভোকেট মাহমুদ হোসেন জাহাঙ্গীর, মো. শামসুজ্জামান ও মো. মতিউর রহমান ভুইয়া।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার এসএম আলতাফ হোসেন সাংবাদিকদের জানান, উৎসবমুখর পরিবেশে এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে এবং সবার সহযোগিতায় শান্তিপূর্ণভাবে নির্বাচন সম্পন্ন হবে বলে তিনি আশা করছেন।
উল্লেখ্য, গত ২০১৪ ও ২০১৫ বর্ষের নির্বাচনে অন্তর্দলীয় কোন্দলে আওয়ামী লীগ সমর্থীত সাদা প্যানেলের ব্যাপক ভরাডুবি ঘটে। ২৫টি পদের বিপরীতে তারা মাত্র ৬টি সদস্য পদ পায়। তবে সম্পাদকীয় পদের ১০টিসহ বিএনপি জামায়াত সমর্থীত নীল প্যানেল ১৯টি পদে জয়লাভ করে।
বিএ/এমএস