ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে মাতৃভাষায় শিক্ষা দেয়ার আহবান সংস্কৃতিমন্ত্রীর
দেশের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে মাতৃভাষায় শিক্ষা দেয়ার আহবান জানিয়েছেন সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর। শনিবার সকালে জাতীয় জাদুঘরে দিনব্যাপী ‘সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও ভাষা বিনিময় মেলা ২০১৫’র উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ কথা বলেন। মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে।
অভিভাবকদের সন্তানকে বিদেশী ভাষায় শিক্ষা দেয়ার আগ্রহের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, এতে শিশুদের মানসিক বিকাশ বাধাগ্রস্ত হয়। তারা নিজ সংস্কৃতি ও ভাষার প্রতি কোন টান অনুভব করেন না।
সংস্কৃতিমন্ত্রী বলেন, রাস্তায় বের হলে অনেক সাইনবোর্ডই দেখা যায় ইংরেজিতে লেখা। অভিভাবকরা সন্তানদের ইংরেজি ভাষায় শিক্ষা দিচ্ছেন। কেন এ হীনমন্যতা?
তিনি বলেন, বর্তমানে কিন্ডারগার্ডেন থেকেই শিশুদের এমনভাবে ইংলেসাইজ করা হচ্ছে, যার ফলে শিশুটির মধ্যে ভিনদেশী একটি দর্শন ঢুকে যাচ্ছে, যে কারণে তার মনে নিজের সংস্কৃতি, ভাষা ও কৃষ্টির সঙ্গে ওই দর্শনের একটি সাংর্ঘষিক রূপ তৈরি হচ্ছে। যা তার মানসিক বিকাশকে বাধাগ্রস্ত করছে।
নূর বলেন, আমাদেরকে এ থেকে বের হয়ে এসে সন্তানদের মাতৃভাষায় শিক্ষা দিতে হবে। প্রয়োজনে দ্বিতীয় ভাষা হিসেবে অন্য যে কোন ভাষা শেখানো যেতে পারে। কারণ ভাষার অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য আমরা সংগ্রাম করেছি, রক্ত দিয়েছে। সে লড়াই আমাদের এগিয়ে নিয়ে গেছে মুক্তিযুদ্ধের দিকে। ৩০ লাখ শহীদ আর ২ লাখ মা-বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে অর্জন করেছি স্বাধীন বাংলাদেশ। তাই দেশ ও জাতির মর্যাদা রক্ষায় বাংলা ভাষার চর্চা সঠিকভাবে করতে হবে।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- সংস্কৃতি সচিব ড. রণজিৎ কুমার বিশ্বাস, বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের সভাপতি অধ্যাপক আব্দুল্লাহ আবু সায়ীদ ও জাতীয় জাদুঘরের বোর্ড অব ট্রাস্টির সদস্য অধ্যাপক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম।
এছাড়া জাতীয় জাদুঘরের বোর্ড অব ট্রাস্টির সভাপতি এম আজিজুর রহমানের সভাপতিত্বে আরো বক্তৃতা করেন- সুইডেনের রাষ্ট্রদূত জোয়ান ফ্রিজেল, ফিলিপাইনের রাষ্ট্রদূত টি বান্দেলো, ভূটানের রাষ্ট্রদূত প্রেমা চোহেন, ইরানী দূতাবাসের কালচারাল কাউন্সিলর আজগর খোশরাবাদী ও রাশিয়ার কালচারাল সেন্টারের মহাপরিচালক আলেকজান্ডার পি ডেমি। স্বাগত বক্তৃতা দেন আয়োজক জাতীয় জাদুঘরের মহাপরিচালক ফয়জুল লতিফ চৌধুরী।
আরএস/এমএস