বাংলাদেশকে সন্ত্রাসবিরোধী চুক্তির প্রস্তাব ভারতের
বাংলাদেশের সঙ্গে একটি সন্ত্রাসবিরোধী চুক্তি করার প্রস্তাব দিয়েছে ভারত। দেশটির স্বরাষ্ট্রসচিব এল সি গয়াল এই প্রস্তাব দিয়েছেন। সম্প্রতি নয়াদিল্লিতে ভারত-বাংলাদেশ স্বরাষ্ট্রসচিব পর্যায়ের বৈঠকে এ প্রস্তাব দেন তিনি।
বর্ধমান বিস্ফোরণে জামায়াতুল মুজাহিদিন বাংলাদেশের (জেএমবি) সংশ্লিষ্টতার বিষয়টি সামনে চলে আসার কয়েক মাস পর ভারত এমন প্রস্তাব দিল। দুই দেশের মধ্যে সন্ত্রাসী সংগঠনগুলোর তথ্য আদান-প্রদানের জন্য চুক্তিটি করতে চায় দেশটি।
একই সাথে বাংলাদেশের ভূখণ্ডে ভারতের জঙ্গি সংগঠনগুলোর ৩৯টি ঘাঁটি রয়েছে জানিয়ে তার তালিকা দিয়েছেন গয়াল। ভারত চায় বাংলাদেশ উলফা, এনডিএফবি, ন্যাশনাল লিবারেশন ফ্রন্ট অব ত্রিপুরা এবং ইউনাইটেড ন্যাশনাল লিবারেশন ফ্রন্ট (মনিপুর)-এর ঘাঁটিগুলো নির্মূল করবে।
ইকোনমিক টাইমস জানিয়েছে, গত ১৬ ও ১৭ ফেব্রুয়ারি নয়াদিল্লিতে ভারত-বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রসচিব পর্যায়ের বৈঠকে এসব বিষয়ে আলোচনা হয়। মূলত চট্টগ্রাম অঞ্চলে কেন্দ্রীভূত এসব ঘাঁটির ব্যাপারে বাংলাদেশকে বিস্তারিত তথ্য দেওয়া হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
প্রস্তাবিত সন্ত্রাসবিরোধী চুক্তির মাধ্যমে ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদি হুমকি সম্পর্কে গোয়েন্দা তথ্য আদান-প্রদান, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের ওপর যৌথ তদন্ত, প্রশিক্ষণ আদান-প্রদান ও সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে অভিযানে সমন্বয়ের মাধ্যমে দুই দেশের মধ্যে নিরাপত্তা সম্পর্ক আরো জোরদার হবে। আনুষ্ঠানিকভাবে এই চুক্তি সম্পন্ন হওয়ার পর জঙ্গিদের অর্থ জোগান ও জাল মুদ্রা ছড়িয়ে পড়া ঠেকাতে ভারত ও বাংলাদেশের বিভিন্ন সংস্থার মধ্যে সহযোগিতা বৃদ্ধির পথ খুলে যাবে।
ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা গতকাল বৃহস্পতিবার টাইমস অব ইন্ডিয়াকে বলেন, বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রসচিব ভারতের সঙ্গে সন্ত্রাসবিরোধী সহযোগিতার প্রয়োজনীয়তার কথা স্বীকার করেছেন এবং বলেছেন, বিষয়টি এগিয়ে নিতে তিনি প্রস্তাবটির ব্যাপারে শেখ হাসিনার সরকারকে জানাবেন।
বৈঠকে মোজাম্মেল হককে ভারত-বাংলাদেশ স্থল সীমান্ত চুক্তি অনুমোদনের ইস্যুটির অগ্রগতি সম্পর্কে জানান গয়াল। বিলটি ভারতের পার্লামেন্টে অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে। পার্লামেন্টের আগামী অধিবেশনে একটি সংবিধান সংশোধনী বিল আনা হবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন গয়াল।
বাংলাদেশের মধ্যে ভারতীয় ছিটমহলে বসবাস করা তিন হাজার ৫০০ ভারতীয়কে ফিরিয়ে নিয়ে পুনর্বাসনের কাজ শুরু করেছে দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
এএইচ/পিআর