দেখা হচ্ছে না খালেদা-মমতার
পশ্চিমবঙ্গের মূখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ৩৩ সদস্য বিশিষ্ট সরকারী-বেসরকারী প্রতিনিধি দল নিয়ে বাংলাদেশে আসছেন। মমতা তিন দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে রাষ্ট্রপিতি ও প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করলেও বাদ থাকছেন বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া।
চেয়ারপারসনের মিডিয়া উইং কর্মকর্তা শায়রুল কবির খান জাগো নিউজকে জানিয়েছেন, মমতার সঙ্গে খালেদা জিয়ার সাক্ষাৎতের কোন সিডিউল নেই। অন্যদিকে মমতার পক্ষ থেকেও খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎতের কোন সিডিউল রাখা হয়নি।
তবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. নুরুল আমিন ব্যাপারী মনে করেন, মমতা খালেদা জিয়ার সঙ্গে কথা বললে ভাল হতো। তিস্তার দাবি নিয়ে যদি সম্মিলিতভাবে মমতাকে চাপ প্রয়োগ করা গেলে দেশ উপকৃত হতো। কেননা তারা আমাদের প্রতিবেশি। মমতা ও আমরা একই ভাষায় কথা বলি। সেক্ষেত্রে সাক্ষাৎ হলে প্রাণভরে অভিযোগের কথা বলা যেতো। তবে ভারতের ২৮টি রাজ্যের মধ্যে মাত্র একটি রাজ্যের মূখ্যমন্ত্রী হিসেবে মমতা যদি খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ না করেন তাহলে বিএনপির বড় ধরনের কোন ক্ষতি হবে বলে মনে করার কোন কারণ নেই।
উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় মমতাকে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে স্বাগত জানাবেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম। ঢাকা সফরকালে মমতাকে ভিভিআইপি মর্যাদায় এসএসএফ-এর নিরাপত্তা দেয়া হবে। সফরকালে তিনি রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন।
এছাড়া শুক্রবার রাতে তিনি ভারতীয় হাইকমিশন আয়োজিত এক সংবর্ধনা সভায় যোগ দেবেন। এদিন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী আয়োজিত চা-চক্রে অংশ নেবেন।
মমতা ব্যানার্জি ভাষা আন্দোলনের বীর শহীদদের প্রতি প্রদ্ধা জানাতে শুক্রবার মধ্য রাতে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আয়োজিত অমর একুশে উদযাপন অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন। শনিবার তিনি বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘর পরিদর্শন করবেন। এ দিনই তিনি ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার্স অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফবিসিসিআই) ও ইন্ডিয়ান চেম্বার অব কমার্স কলকাতার (আইসিসি) সহযোগিতায় ফেডারেশন অব ইন্ডিয়া-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অব ইন্ডাস্ট্রি (আইবিসিসিআই) নেতৃবৃন্দের উদ্দেশে ভাষণ দেবেন।
সূত্র জানায়, মমতা ব্যানার্জি বাংলাদেশের ব্যবসায়ীদের পশ্চিমবঙ্গের রিয়াল এস্টেট ব্যবসা ও পর্যটন শিল্পে বিনিয়োগের আমন্ত্রণ জানাবেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে তিস্তার পানি বন্টন, স্থল সীমান্ত চুক্তি, ইলিশ রপ্তানির বিষয়ে কথা বলবেন। কবিগুরু রবীন্দ্রনাথের স্মৃতি বিজড়িত শান্তিনিকেতনে বিশ্বভারতী চত্বর সংলগ্ন অঞ্চলে গড়ে তোলা হচ্ছে বাংলাদেশ ভবন। মমতা ব্যানার্জি প্রধানমন্ত্রীকে অনুরোধ করবেন সেই ভবনটির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের। পাশাপাশি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধুর নামাঙ্কিত চেয়ারটিও প্রধানমন্ত্রীকে উদ্বোধনের আমন্ত্রণ জানাবেন।
৩৩ সদস্য বিশিষ্ট প্রতিনিধি দলের মধ্যে মমতার সফরসঙ্গী হিসেবে থাকছেন, অভিনেতা ও এমপি দেব, অভিনেত্রী ও এমপি মুনমুন সেন, অভিনেতা প্রসেনজিত, গায়ক ইন্দ্রনীল সেন, পশ্চিমবঙ্গের পর্যটন মন্ত্রী ব্রাত্য বসু, পৌর ও নগরউন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম, শিল্পপতি হর্ষ নেওটিয়া, কবি সুবোধ সরকার, গৌতম ঘোষ, সুবোধ সরকার, কল্যাণী কাজী, নচিকেতা চক্রবর্তী, অরিন্দম শীল প্রমুখ।
এমএম/এএইচ/আরআই