কামারুজ্জামানের আপিলের পূর্ণাঙ্গ রায়ের কপি ট্রাইব্যুনালে


প্রকাশিত: ০৩:১৭ পিএম, ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৫

জামায়াত নেতা মোহাম্মাদ কামারুজ্জামানের আপিলের পূর্ণাঙ্গ রায়ের কপি মৃত্যু পরোয়ানা হিসেবে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে পৌঁছেছে। বুধবার রাত ৮টায় ট্রাইব্যুনালের রেজিস্ট্রার বরাবর আপিলের পূর্ণাঙ্গ এ রায়ের কপি পাঠানো হয়। ট্রাইব্যুনাল রেজিস্ট্রার মোস্তাফিজুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, বুধবার রাত ৮টার দিকে কামারুজ্জামানের পূর্ণাঙ্গ রায়ের কপি আমরা হাতে পেয়েছি। এখন রায়ের কপিটি বিশ্লেষণ করে দেখছি। আগামীকাল ট্রাইব্যুনাল বসার সঙ্গে সঙ্গেই এ রায়ের কপি বিচারপতিদের কাছে হস্তান্তর করবো। তারপর বিচারপতিরা এ রায়ের কপি দেখে পরবর্তী আদেশ দেবেন।

নিয়ম অনুযায়ী, ট্রাইব্যুনালের বিচারপতিরা স্বাক্ষর করে মৃত্যু পরোয়ানা জারি মাধ্যমে ঢাকা জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের জেল সুপার বরাবর পাঠাবেন। পূর্ণাঙ্গ রায়ের সার্টিফাইড কপি হস্তান্তরের পর থেকেই রায় কার্যকরের ১৫ দিনের সময় গণনা শুরু হল। ট্রাইব্যুনালের জারি করা মৃত্যু পরোয়ানা পাওয়ার পর ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার কর্তৃপক্ষ কামারুজ্জামানের কাছে রিভিউ অথবা প্রাণ ভিক্ষার আবেদন করবেন কিনা, জানতে চাইবে। কামারুজ্জামান রিভিউ করলে রিভিউ নিষ্পত্তি হওয়ার পর রায় কার্যকর করতে পারবে সরকার।

এর আগে, প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহাসহ চারজন বিচারপতির স্বাক্ষর শেষে বুধবার দুপুরে ৫৭৭ পৃষ্ঠার রায়ের কপি প্রকাশ করা হয়। রায়ে বলা হয়, রায়ের সার্টিফায়েড কপি তৈরির পর কামারুজ্জামান ১৫ দিন সময় পাবেন রিভিউ করার জন্য। যদি এই সময়ের মধ্যে কামারুজ্জামান রিভিউ করেন তাহলে রিভিউ নিষ্পত্তি হওয়ার পর রায় কার্যকর করতে পারবে সরকার। আর তিনি যদি রিভিউ না করেন তবে সরকারকে রায় কার্যকর করতে ১৫ দিন অপেক্ষা করতে হবে বলে আপিল বিভাগ বলেছেন।

মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হওয়া কাদের মোল্লার রিভিউয়ের আবেদনের রায়ে এ সব কথা উল্লেখ করেছেন আপিল বিভাগ। রায়ে আরও বলা হয়েছে, আপিল বিভাগ রুলসে রিভিউ দায়েরের ক্ষেত্রে যে সময়সীমার কথা বলা হয়েছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালস আইনের অধীনে রায়ের রিভিউর ক্ষেত্রে তা প্রযোজ্য নয়। এক্ষেত্রে ১৫ দিনের সময়সীমা অনুসরণ করতে হবে এবং অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে রিভিউ আবেদন নিষ্পত্তি হবে।

গত বছরের ৩ নভেম্বর তৎকালীন জ্যেষ্ঠ বিচারপতি ও বর্তমান প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বাধীন চার সদস্যের আপিল বিভাগের বেঞ্চ কামারুজ্জামানের ফাঁসির আদেশ বহাল রেখে চূড়ান্ত রায় ঘোষণা করেন। বেঞ্চের অপর তিন বিচারপতি হলেন— বিচারপতি মো. আবদুল ওয়াহহাব মিঞা, বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী ও বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী।

কামারুজ্জামানের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ সোহাগপুরে গণহত্যার দায়ে সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তিতে ফাঁসির রায় বহাল রাখে আপিল বিভাগ। রায়ে জ্যেষ্ঠ বিচারপতি ওয়াহহাব মিঞা বিভক্ত রায় দিয়েছেন বলে জানা গেছে। একই সঙ্গে কামারুজ্জামানের বিরুদ্ধে আনিত গোলাম মোস্তফাকে হত্যার অভিযোগে ট্রাইব্যুনালের দেওয়া মৃত্যুদণ্ডাদেশ কমিয়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আপিল বিভাগ। বিচারপতিদের সর্বসম্মতিক্রমে এ দণ্ড দেওয়া হয়েছে।

এএইচ/আরআই

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।