সেলফি নিয়ে আলোচনায় এমপি সাবিনা
জীবন-মরণের সন্ধিক্ষণে লাইফ সাপোর্ট নিয়ে হাসপাতালের বেডে অচেতন অবস্থায় পড়ে আছে আহত খাদিজা। সেই খাদিজাকে দেখতে গিয়েই তাদের সেলফি তোলার প্রতিযোগিতা। তাও আবার পরক্ষণেই নিজের ফেসবুকে পোস্ট দেয়া।
এমন কাণ্ড ঘটিয়ে এখক ব্যাপক সমালোচনার মুখে আওয়ামী লীগের সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য সাবিনা আক্তার তুহিন। তুহিনের সেলফি তোলা এবং তা ফেসবুকে পোস্ট করা নিয়ে গণমাধ্যম ও সামাজিক মাধ্যমে সমালোচনার ঝড় বইছে। অনেক বলছেন, রাজনীতির চরম অবক্ষয় হওয়ার কারণেই এমন কাণ্ড ঘটানো সম্ভব।
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগ নেতার চাপাতির উপর্যুপরি হামলায় আহত খাদিজা আক্তার নার্গিস (২৩) এখন রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে লাইফ সাপোর্টে। চিকিৎসকরা বলছেন, তিনি জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে অবস্থান করছেন।
সেই খাদিজাকে দেখতে গিয়ে তোলা সেলফি বুধবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে নিজের ফেসবুক ওয়ালে পোস্ট করেন সংসদ সদস্য সাবিনা আক্তার তুহিন। ফেসবুকে পোস্ট করা ওই ছবিতে দেখা যায়, নারী এমপির ঠোঁটে গাঢ় লিপস্টিক ও গায়ে আইসিইউ গাউন। পেছনে নাকে-মুখে নল লাগানো অচেতন খাদিজা বেগম নার্গিস।
আরেকটি ছবিতে দেখা যায় এমপি তুহিনের সঙ্গে যুবমহিলা লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সংসদ সদস্য অপু উকিলসহ আরেকজন নারী। এদের দুইজনের ঠোটেও রাঙা লিপিস্টিক আর কপালে টিপ।
আইসিইউয়ের মতো স্পর্শকাতর জায়গায় জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে থাকা খাদিজাকে দেখতে গিয়ে এমপি তুহিনের তোলা এসব সেলফি সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। খাদিজার ওপর নৃশংসতায় ক্ষুব্ধ মানুষ তাদের ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছে, ভর্ৎসনা করেছে।
আবু তালহা শামীম নামের এক ফেসবুক ব্যবহারকারী তার দেয়ালে লিখেছেন, ‘এও সম্ভব। দেখে মনে হচ্ছে আওয়ামী লীগের তিন নারী নেত্রী কোনো বিউটি পার্লারে গিয়ে পোজ দিয়ে ছবি তুলছেন। একজন আহত মানুষকে দেখতে গিয়ে এমন নোংরা রাজনীতি করা যায়!
উল্লেখ্য, গত সোমবার বিকেলে দ্বিতীয় বর্ষের পরীক্ষা দিতে এমসি কলেজ ক্যাম্পাসে গিয়েছিলেন সিলেট সরকারি মহিলা কলেজের ডিগ্রির (পাস) ছাত্রী খাদিজা। পরীক্ষা দিয়ে বেরিয়ে আসার সময় ধারালো অস্ত্র দিয়ে তাকে কুপিয়ে জখম করেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র ও বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক বদরুল আলম (২৭)।
বর্তমানে রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে খাদিজা চিকিৎসাধীন। অপারেশনের পর চিকিৎসকরা তাকে ৭২ ঘণ্টার পর্যবেক্ষণে রেখেছেন। এ ঘটনায় বদরুলকে একমাত্র আসামি করে সিলেটের শাহপরান থানায় খাদিজার চাচা আব্দুল কুদ্দুস বাদী হয়ে একটি হত্যাচেষ্টা মামলা করেছেন।
এএসএস/বিএ