সরকারি চাকরির ক্ষেত্রে আর সত্যায়িত প্রয়োজন হবে না
চাকরি, বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি-জাতীয় নানা কাজে সদ্য তোলা কয়েকটি ছবি জমা দিতে হয়। বিস্ময়কর ব্যাপার হলো, প্রার্থীর নিজের রঙিন ছবিও অবিশ্বাস করা হয় উল্টো পাশে সরকারি কর্মকর্তার সিল-স্বাক্ষর না পড়লে। অথচ সব ক্ষেত্রেই সরাসরি ও স্বচক্ষে প্রার্থীর চেহারা ছবির সঙ্গে মিলিয়েই পরীক্ষা দেওয়া, চাকরিতে নিয়োগ বা অন্যান্য বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয় কর্তৃপক্ষ। একইভাবে শিক্ষাগত যোগ্যতার মূল সনদ যাচাই-বাছাই না করে কোনো শিক্ষার্থীকে ভর্তির সুযোগ দেয় না কোনো বিশ্ববিদ্যালয়। মৌখিক পরীক্ষার সময় চাকরিপ্রার্থীর মূল সনদগুলো যাচাই-বাছাই করে কয়েক জোড়া চোখ। তবু প্রতিটি জায়গায় আবেদনের সময় মূল সনদগুলো ফটোকপি করে তা সত্যায়িত করতে ঘুরতে হয় প্রথম শ্রেণির সরকারি গেজেটেড কর্মকর্তাদের পেছনে।
প্রার্থীদের মতো চাকরিদাতা বা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকেও এ জন্য কম ভোগান্তি পোহাতে হয় না। প্রতি আবেদনের সঙ্গে জমা দেওয়া কয়েক ফর্দ কাগজ আর ছবি উল্টেপাল্টে দেখতে হয় সত্যায়িত করা আছে কি না জানার জন্য। এতে তাদেরও কষ্ট যেমন হয়, তেমনি হয় সময়ক্ষেপণ। এসব বিবেচনায় নিয়ে সরকারি চাকরির আবেদনের সঙ্গে ছবি বা কাগজপত্র সত্যায়িত করার বিধান বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। নতুন নিয়মে সরকারের নির্ধারিত একটি ফরমে আবেদন করতে হবে প্রার্থীদের। সঙ্গে দিতে হবে শুধু দুই কপি ছবি। আর কোনো কাগজপত্র দিতে হবে না। তবে লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ প্রার্থীদের মৌখিক পরীক্ষার সময় ছবি ও মূল কাগজপত্র যাচাই করা হবে। এ বিষয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে একটি পরিপত্র জারি করা হয়েছে।
আবেদনের সঙ্গে কোনো কাগজপত্র দিতে না বলা হলেও আবেদনপত্রের অঙ্গীকারনামায় প্রার্থীকে স্বাক্ষর করতে হবে, যেখানে বলা থাকবে, `আমি এ মর্মে অঙ্গীকার করছি যে ওপরে বর্ণিত তথ্যাবলি সম্পূর্ণ সত্য। মৌখিক পরীক্ষার সময় উল্লিখিত তথ্যগুলো প্রমাণের জন্য সব মূল সার্টিফিকেট ও রেকর্ডপত্র উপস্থাপন করব। কোনো তথ্য অসত্য প্রমাণিত হলে আইনানুগ শাস্তি ভোগ করতে বাধ্য থাকব।`
পরিপত্রে বলা হয়েছে, `বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানের শূন্যপদে নিয়োগসংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তিতে প্রার্থীদের আবেদনপত্রের সঙ্গে নানা ধরনের কাগজপত্রের সত্যায়িত অনুলিপি চাওয়া হয়। নিয়োগপ্রক্রিয়ায় এসব কাগজপত্রের সত্যায়িত অনুলিপি সংরক্ষণ ও পর্যালোচনা অনেক শ্রম এবং সময়সাপেক্ষ। এর পরিবর্তে আবেদনপত্রে আবেদনকারীর ছবি এবং প্রয়োজনীয় তথ্যসংবলিত এক পাতার নির্ধারিত ফরমে আবেদন গ্রহণ ও মৌখিক পরীক্ষার সময় তথ্য যাচাই বাছাই করা হলে প্রার্থীদের ভোগান্তি কমবে এবং নিয়োগপ্রক্রিয়াকরণ সহজ হবে।`
এ বিষয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী বলেন, জনস্বার্থে সরকার এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এর মধ্য দিয়ে চাকরিপ্রার্থীদের ভোগান্তি ও জটিলতার অবসান হবে। সূত্র- কালের কণ্ঠ