কুষ্টিয়া কারাগারে অতিরিক্ত বন্দির চাপ : খাবার পাচ্ছেনা বন্দিরা
কুষ্টিয়া জেলা কারাগারে বন্দির চাপে মানবিক বিপর্যয়ের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। নতুন বন্দিদের ভিড়ে ঠাসা জেলা কারাগার। রাজনৈতিক ধরপাকড় আর গণগ্রেপ্তারে কারাগারগুলোতে প্রতিদিনই নিত্যনতুন বন্দি আসছে। ফলে সেখানে বন্দিদের মধ্যে মানবিক বিপর্যয়ের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
সূত্রমতে, এখানে মোট বন্দি ধারণ ক্ষমতা ৬০০ জন। এর মধ্যে পুরুষ ৫৯০ জন ও মহিলা ১০ জন। অথচ বর্তমানে এখানে বন্দি রয়েছে ৯৪০ জন। এ সংখ্যা প্রতিদিনই বাড়ছে। মাত্রাতিরিক্ত বেশি বন্দি সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছে কারা কর্তৃপক্ষ। এ কারণে নানা ধরনের সমস্যা দেখা দিচ্ছে। তীব্র শীতে কারা অভ্যন্তরে বন্দীদের দুর্দশা প্রতিনিয়তই বাড়ছে।
কুষ্টিয়া অঞ্চলে কয়েক দিন ধরে শীতের প্রকোপ বৃদ্ধি পেয়েছে। এখানকার কারাবন্দিরা ঠাণ্ডাজনিত নানা রোগব্যধিতে আক্রান্ত হলেও যথাযথ চিকিৎসা মিলছে না। ফলে কারা অভ্যন্তরে মানবিক বিপর্যয়ের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
ভুক্তভোগী বন্দিরা জানান, কারাগারে নেয়ার পর প্রথম ২-৩ দিন ঘুমানোর কোন সুযোগ জুটে না। দুবেলা খাবারও পাওয়া যায় না। পরে পরিবারের সদস্যদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে মিয়াসাবদের দাবিকৃত টাকা পরিশোধ করার পরই কিছুটা শান্তি আসে। আর টাকা না দিতে পারলে কারারক্ষীরা খুবই নির্যাতন করে। এর প্রতিবাদ করলে নির্যাতনের পরিমাণ আরো বেড়ে যায়। বর্তমানে সব কারাগারের পরিবেশই অত্যন্ত নাজুক হয়ে পড়েছে। অতিরিক্ত বন্দির ঠাসাঠাসিতে স্বভাবতই সৃষ্টি হয়েছে মারাত্মক অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ। এ অবস্থায় কারাবিধি অনুযায়ী বন্দিরা বিশেষত ভিআইপি বন্দি এবং আদালত থেকে ডিভিশনপ্রাপ্তরা তাদের প্রাপ্য সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ উঠেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, মাসাধিককাল ধরে ধরপাকড় ও গ্রেপ্তারের মাত্রা বেড়ে যাওয়ায় কারাগারে বন্দির সংখ্যাও বাড়ছে। তবে এ বন্দির বেশির ভাগই বিরোধী দলের নেতাকর্মী। কারাগারের নির্ধারিত সেলগুলোতে এখন বন্দিদের ঠাঁই হচ্ছে না। ফলে বাধ্য হয়েই কারা কর্তৃপক্ষ কারাগারের ভেতরে বিভিন্ন গোডাউন, বড় সেলের বারান্দা, এমনকি যেসব সেলের বাথরুমগুলো বড় সেগুলোকেও সেল বানিয়ে বন্দি রাখার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। আর এসবের মধ্যেই গাদাগাদি করে থাকতে হচ্ছে বন্দিদের। আর ভারসাম্য রক্ষার্থে মাঝেমধ্যে এক কারাগার থেকে আরেক কারাগারে বন্দি অদল-বদল করা হচ্ছে।
এমএএস