বাসে অতিরিক্ত ভাড়ায় শেষ মুহুর্তের বাড়ি ফেরা
প্রিয়জনের সান্নিধ্যে ঈদ উদযাপনে শেষ মুহুর্তে বাড়ি ফিরতে বাসে কয়েকগুণ অতিরিক্ত ভাড়া গুণতে হচ্ছে যাত্রীদের। যদিও বাস মালিকরা ভাড়া না বাড়ানোর বিষয়ে সরকারকে কথা দিয়েছিলেন। কিন্ত বাস ভাড়ার উপর কর্তৃপক্ষের কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই। বাধ্য হয়ে সোমবার অতিরিক্ত ভাড়ায়ই টিকেট সংগ্রহ করতে হচ্ছে ঘরমুখো মানুষকে। যাদের বেশিরভাগই শ্রমজীবী মানুষ। সোমবার সায়েদাবাদের বিভিন্ন বাস কাউন্টার ঘুরে এ চিত্র পাওয়া গেছে।
তবে বাস মালিকরা জানিয়েছেন, যাত্রীর সংখ্যা বেশি হওয়ায় এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। সায়দাবাদ বাস টার্মিনালের নিয়মিত বাসগুলো চলে যাওয়ায় বাইরের কিছু বাস এসে অতিরিক্ত ভাড়ায় যাত্রী পরিবহন করছে বলেও দাবি করেছেন তারা।
মেঘনা ট্রাভেল প্রাইভেট লিমিটেডের প্রায় সব রুটেই বাস ভাড়া বেড়েছে। পটুয়াখালীর দশমিনা যাওয়ার অগ্রিম টিকেট চাইলে সায়েদবাদে কাউন্টারে দায়িত্ব পালনকারী কর্মচারী জানান, টিকেট ৫০০ টাকা পড়বে। অন্যান্য সময় ভাড়া ৩০০ টাকা নিলেও এখন এত বেশি নেয়ার কারণ জানতে চাইলে বলেন, সারা বছর আমরা কম ভাড়া নেই। ঈদের সময় তো আর তা নিতে পারি না।
সুন্দরবন বাস মিনিবাস সার্ভিস প্রাইভেট লিমিটেডের কাউন্টারে খুলনার ভাড়া ৫০০ টাকা নেওয়া হচ্ছে। অন্যান্য সময় এ রুটে ৩৫০ টাকা ভাড়া নেয়া হয় বলে জানান যাত্রীরা। সুন্দরবন কাউন্টারের সামনে কথা হয় গার্মেন্টস কর্মী ফাতেমা আক্তারের সঙ্গে। তিনি খুলনা যাবেন। ভাড়া নিয়ে প্রশ্ন করলে বলেন, ভাই ভাড়া অনেক বেশি। দুইটা টিকেট কিনছি এক হাজার টাকা দিয়ে। আমাগো উপায় নাই, আইজই ছুটি পাইছি।
এশিয়া পরিবহনে মাইজদী যাবেন রং মিস্ত্রী মাহবুব হোসেন। তিনি বলেন, অন্যান্য সময় ৩২০ টাকা দিয়ে যাই, আজ (সোমবার) টিকেট কিনলাম ৫৫০ টাকা দিয়ে। উত্তরবঙ্গে চলাচলকারী সকল বাসের ভাড়াও কয়েকগুণ বাড়িয়ে নেওয়া হচ্ছে। উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় যাতায়াতকারী বোরাক পরিবহনের টিকেট বিক্রিকারী জাহাঙ্গীর হোসেন জানান, রংপুরে যাওয়ার টিকেট ৭০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সাধারণ ভাড়া থেকে এটা বেশি বলেও স্বীকার করেন তিনি।
ঢাকা থেকে সড়ক পথে সিলেট যেতে সাধারণ বাসের ভাড়া ৩৫০ টাকা। বাস কোম্পানিগুলো ভাড়া ৪০০ থেকে ৫৫০ টাকা নিচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন যাত্রীরা। ঢাকা-রায়পুর-নোয়াখালী রুটে চেয়ার কোচের ভাড়া ৩২০ টাকা। এখন এই ভাড়া ৫০০ টাকায় পৌঁছেছে।
বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্যাহ বলেন, গার্মেন্টস ছুটি হওয়াসহ বিভিন্ন কারণে সোমবার যাত্রীর চাপ অনেক বেড়ে গেছে। কিন্তু সায়দাবাদের নিয়মিত বাসগুলো ইতোমধ্যে গন্তব্যে চলে গেছে। নিয়মিত বাস বাসগুলোর মধ্যে কেউ কেউ অতিরিক্ত ভাড়া নিচ্ছে, তা আমি অস্বীকার করছি না। ভাড়া না বাড়ানোর জন্য মালিকদের প্রতি নির্দেশনা রয়েছে জানিয়ে খন্দকার এনায়েত বলেন, যাত্রী বেশি থাকায় এ মুহুর্তে বাইরের কিছু বাস এসে অতিরিক্ত ভাড়ায় যাত্রী পরিবহন করছে। বিষয়টি দেখার জন্য আমরা পাঠিয়েছি, তারা কাজ করছে।