তদবির মুক্ত রাখতে হবে সরকারি চাকরিক্ষেত্র : ইনু


প্রকাশিত: ১১:৪১ এএম, ১৬ জানুয়ারি ২০১৫

দেশের উন্নয়নে সরকারি চাকরিক্ষেত্রকে তদবির সংস্কৃতি এবং রাজনীতিকে জঙ্গি ও সন্ত্রাস থেকে মুক্ত রাখতে হবে বলে জানিয়েছেন তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু। শুক্রবার সকালে রাজধানীর আগারগাঁও বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশন সচিবালয়ে সার্কভুক্ত দেশসমূহের পাবলিক সার্ভিস কমিশন প্রধানদের চতুর্থ সম্মেলন উপলক্ষে আয়োজিত শিশু-কিশোরদের চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, তদবির সংস্কৃতি মেধার অপচয় ঘটায়। তদবিরের ভিত্তিতে দেশ চলে না। তদবিরকে গণপ্রশাসন থেকে দূরে থাকতে হবে। তদবির সংস্কৃতি, দুর্নীতি, জঙ্গিবাদ, সাম্প্রদায়িকতা ও সন্ত্রাসকে রাজনীতি থেকে বাইরে রাখতে হবে এবং নির্মূল করতে হবে তবেই গণতন্ত্র নিরাপদ থাকবে, প্রশাসন মুক্ত থাকবে, আইনের শাসন ও সুশাসন প্রতিষ্ঠিত হবে। মুখের কথায় প্রশাসন চলে না। তদবির সংস্কৃতি চালু থাকলে প্রশাসন ও গণতন্ত্র দুর্বল থাকবে।

তিনি বলেন, গণতন্ত্রকে টিকিয়ে রাখতে হলে শক্তিশালী গণপ্রশাসন দরকার। শক্তিশালী গণপ্রশাসন না হলে গণতন্ত্রে সুশাসন নিশ্চিত হয় না। সামরিকতন্ত্র ও স্বৈরতন্ত্রের পথ বর্জন করে আমরা গণতন্ত্রের পথে যাচ্ছি।

ইনু বলেন, আমাদের রয়েছে হাজার বছরের একটি ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি। সাম্প্রদায়িকতা, জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাস কোনো সংস্কৃতির সাথেই যায় না, ইতিহাসের সাথেও নয়। আমাদের সংস্কৃতি আমাদের শিকড় আর সাম্প্রদায়িকতা হচ্ছে শিকড়বিহীন কচুরিপানা। এগুলো বাংলাদেশের জন্য বিপদ এবং বিপদ দক্ষিণ এশিয়ার জন্যও। কচুরিপানার ফুল দেখতে সুন্দর হলেও কেউ তা ফুলদানিতে রাখে না। কচুরিপানা দলবেঁধে ভেসে বেড়ায়, ফসলের ক্ষেতে ঢুকে ফসল নষ্ট করে। তেমনি আমাদের রাষ্ট্র ও সমাজের অভ্যন্তরে জঙ্গিবাদ ও সাম্প্রদায়িকতা প্রবেশ করে শান্তি বিনষ্ট করছে। ফসলের ক্ষেত থেকে কচুরিপানা যেমন উপড়ে ফেলতে হয়, আমাদের রাষ্ট্র ও সমাজ থেকেও তেমনি জঙ্গিবাদকে উপড়ে ফেলতে হবে। ধ্বংস করে দিতে হবে জঙ্গিবাদের জঞ্জালকে।

মন্ত্রী বলেন, কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নয়। হোক সে রাষ্ট্রপতি কিংবা প্রধানমন্ত্রী। অপরাধীর কোনো মান-সম্মান নেই। অপরাধীর কোনো জাত-পাত নেই। ’৭১-এর মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার প্রতিহিংসা নয়। মুক্তিযুদ্ধের সময় যারা নারীর গায়ে হাত দিয়েছে তাদের বিচার করা প্রতিহিংসা নয়। সরকার আইনের শাসনের পথে হাঁটছে।

তিনি উপস্থিত চিত্রাঙ্কণ প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারী শিশু-কিশোরদের উদ্দেশ্যে বলেন, রাজাকাররা বিশ্বাসঘাতক, খারাপ লোক। ’৭১-এর মহাযুদ্ধে পাকিস্তানিদের দালালি করেছে, মুক্তিযুদ্ধে তারা হত্যা, নারী নির্যাতন, লুণ্ঠন, অগ্নিসংযোগ করে অপরাধ করেছে।

অনুষ্ঠান শেষে মন্ত্রী শিশু-কিশোরদের চিত্রাঙ্কন ঘুরে ঘুরে দেখেন এবং আয়োজকদের তিনি ধন্যবাদ জানান। বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনের সদস্য ড. মোহাম্মদ সাদিক-এর সভাপতিত্বে চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে কমিশনের চেয়ারম্যান ইকরাম আহমেদ, সচিব শাহজাহান আলী মোল্লা বক্তব্য রাখেন।

আরএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।