গুলশান হামলা : একটি রুমালকে ঘিরে রহস্য


প্রকাশিত: ০১:৫২ পিএম, ১২ জুলাই ২০১৬

দেশ-বিদেশে তোলপাড় করা গুলশানের হলি আর্টিসান রেস্টুরেন্টে রোমহর্ষক হামলার ঘটনায় একটি রুমালকে ঘিরে রহস্য দেখা দিয়েছে। হামলায় পুরো রেস্টুরেন্ট রক্তাক্ত হলেও রক্তের দাগবিহীন একটি সাদা কাপড়ের রুমাল জব্দ করা হয়। ওই রুমালকে ঘিরেই রহস্য দেখা দেয়। কারণ রুমালটি সূত্রেই জানা গেছে হামলায় অংশগ্রহণকারী নতুন জঙ্গি প্লাটফর্মের নাম।
 
গত ১ জুলাই রাতে অস্ত্রধারী জঙ্গিরা ৭৯ নম্বর সড়কের ওই রেস্টুরেন্টে হামলা চালিয়ে জিম্মি করে দেশি-বিদেশি অতিথিদের। প্রায় ১২ ঘণ্টা পর কমান্ডো অভিযান চালিয়ে রেস্টুরেন্টটির নিয়ন্ত্রণ নেয় সেনাবাহিনী। তবে জঙ্গিদের হামলায় ১৭ বিদেশিসহ ২০ জন নির্মমভাবে নিহত হন। হামলায় মারা যান দুই পুলিশ সদস্য।
 
হামলার ওই রাতে আইএসের বরাতে গুলশান হামলাকে অভিনন্দন জানিয়ে ভিডিও বার্তা প্রচার করা হয়। বাংলাদেশি তিন যুবক ওই ভিডিও বার্তা প্রচার করে। সেখানেও দৌলাতুল ইসলামের কথা উল্লেখ করা হয়।
 
তুষার নামে এক যু্বক ভিডিও বার্তায় বলেন, বাংলাদেশে শরিয়া প্রতিষ্ঠায় দৌলাতুল ইসলামের আন্ডারে আপনারা দলে দলে যোগদান করুন।
 
গুলশান থানা পুলিশ ও কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট সূত্রে জানা গেছে, হলি আর্টিসান রেস্টুরেন্ট থেকে জব্দ করা রুমালে বাংলায় লেখা, ‘দৌলাতুল ইসলাম বাংলাদেশ টিকে থাকবে।’ গুলশান থানায় দায়ের করা মামলায় হামলার ঘটনাস্থল থেকে জব্দ তালিকার প্রথম স্থানেই ওই সাদা কাপড়ের রুমাল।
 
গোয়েন্দা সংশ্লিষ্টরা ধারণা করছেন, বাংলাদেশে সক্রিয় জঙ্গি সংগঠনগুলোর প্লাটফর্ম হিসেবে কাজ করছে দৌলাতুল ইসলাম। হিযবুত তাহরীর, জেএমবি ও আনসারুল্লাহ বাংলাটিম (এবিটি) সদস্যদের নতুন প্লাটফর্ম হিসেবে কাজ করতে পারে এ দৌলাতুল ইসলাম। হামলার পর নিজেদের অবস্থান জানান দিতেই ওই রুমালে দৌলাতুল ইসলামের নাম লিখে ফেলে দেয় গুলশানের হামলাকারীরা।

ফেসবুকেও দৌলাতুল ইসলাম বাংলাদেশ নামে অসংখ্য পেজ খোলা আছে। সিরিয়া ও ইরাকভিত্তিক অসংখ্য ভিডিও ফুটেজ সেখানে আপলোড করা হয়েছে। এছাড়া পাকিস্তানভিত্তিক বিশেষ করে পেশওয়ার ও কোয়েটাভিত্তিক দৌলাতুল ইসলামের অনেক কার্যক্রমের তথ্যচিত্র প্রচার করা হয়েছে। দৌলাতুল ইসলাম নামে টুইটার অ্যাকাউন্ট থেকেও টুইট বার্তা প্রচারের খবরও পাওয়া গেছে।
 
এ ব্যাপারে কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করে জানান, দৌলাতুল ইসলাম আদৌ রয়েছে কিনা তা আমরা খতিয়ে দেখছি। হামলাকারীরা কৌশলগত কারণেও রুমালটি ফেলে দিয়ে যেতে পারে। এখন পর্যন্ত মামলার যা অগ্রগতি তাতে জেএমবির কানেকশন বেশি পাওয়া যাচ্ছে।
 
উল্লেখ্য, দৌলাতুল ইসলাম নামে এ সংগঠনটি মূলত ইরাক, তুরস্ক, সিরিয়া, আফগানিস্তান, পাকিস্তান ও মিসরে বেশি সক্রিয়। বাংলাদেশে এর কোনো ভিত্তি রয়েছে কিনা তা এখনো নিশ্চিত নয় গোয়েন্দা সংশ্লিষ্টরা। তবে বাংলাদেশে সক্রিয় উপস্থিতি থাক বা না থাক, গুলশান হামলার ঘটনায় নতুন করে দৌলাতুল ইসলামের নাম আসায় রহস্য থেকেই যাচ্ছে।

জেইউ/এসএইচএস/এবিএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।