হামলাকারীদের সঙ্গে পাচক সাইফুলও আসামি


প্রকাশিত: ০১:৪৮ পিএম, ০৬ জুলাই ২০১৬

রাজধানীর গুলশান-২ এর হলি আর্টিসান রেস্টুরেন্টে হামলায় দায়েরকৃত মামলায় জড়িত জঙ্গি সদস্যসহ সেখানটার পাচক সাইফুল ইসলাম চৌকিদারকেও আসামি করে পুলিশ।

সন্ত্রাসবিরোধী আইনে করা ওই মামলায় উল্লেখিত ৬ জন হলেন- মীর সামেহ মোবাশ্বের(১৯), রোহান ইবনে ইমতিয়াজ(২০), নিবরাস ইসলাম (২০), খায়রুল ইসলাম পায়েল (২২), শফিকুল ইসলাম উজ্জ্বল(২৬) এবং রেস্টুরেন্টটির পাচক সাইফুল ইসলাম চৌকিদার।

গত সোমবার রাতে মামলা করার কথা জানানো হলেও মঙ্গলবারও আসামি কারা হচ্ছেন তা জানায়নি পুলিশ। তবে বুধবার সকালেও গুলশান থানার পরিদর্শক সালাউদ্দিন মিয়া জানান, পাঁচ হামলাকারীসহ অজ্ঞাত পরিচয় আরও অনেককে আসামি করা হয়েছে।

কিন্তু বুধবার মামলার এফআইআর নিম্ন আদালতে দাখিল করার পর দেখা যায় ছয়জনের নাম। এজাহারে মীর সামেহ মোবাশ্বেরকে এক নম্বর আসামি এবং সাইফুল চৌকিদারকে ৬ নম্বর আসামি করা হয়েছে। অথচ গত মঙ্গলবার সচিবালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীও পাঁচজনকে আসামি করে মামলার কথা বলেছিলেন।

প্রাথমিক তথ্য সংশোধন করে ওই সংবাদ সম্মেলনে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, “ছয়টি লাশ সন্ত্রাসীদের বলে প্রাথমিকভাবে অনুমান করা হলেও পরে এদের পাঁচজনের পরিচয় পাওয়া যায়। তাদের অভিভাবকগণ তাদের শনাক্ত করেছেন। তারা জঙ্গি বলে তথ্য প্রমাণ পাওয়া গেছে।”

এরপরও সাইফুলকে কেন আসামি করা হচ্ছে, তাকেও জঙ্গি হিসেবে সন্দেহ করা হচ্ছে কি না- তা জানতে মামলার বাদি রিপন কোনা মন্তব্য করতে রাজি হননি।

অন্যদিকে গুলশান হামলায় রাতেই আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংগঠন আইএস-ও দায় স্বীকার করে। সাইট ইনটেলিজেন্স ইউনিটও তাদের দেয়া খবরে ৫ জন হামলাকারীর ছবি প্রকাশ করে।

তবে আইজিপির বরাতে, সদর পুলিশ শনিবার রাতে পাঁচটি লাশের ছবি সাংবাদিকদের পাঠায়। হামলাকারীদের মধ্যে পাঁচজন চিহ্নিত জেএমবি সদস্য বলে উল্লেখ করা হয়। পাঁচজনের ছবির মধ্যে একজনকে পরে হলি বেকারির শেফ সাইফুল হিসেবে শনাক্ত করেন শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলায় থাকা তার পরিবারের সদস্যরা।

এরই মধ্যে মঙ্গলবার বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, অভিযানের সময় যারা ‘নিরাপত্তাবাহিনীর গুলিতে’ নিহত হয়েছেন, তাদের মধ্যে হয়তো ‘ভুলক্রমে’ একজন ‘জিম্মিও’ নিহত হয়েছেন।

সাইফুল ইসলাম নামে একজন পুলিশ কর্মকর্তাকে উদ্ধৃত করে প্রতিবেদনে বলা হয়, তিনি (সাইফুল চৌকিদার) ‘হয়তো জড়িত ছিলেন না’।

উল্লেখ্য, গত শুক্রবার রাতে কয়েকজন দুর্বৃত্ত সদস্য সশস্ত্র অবস্থান নিয়ে হলি আর্টিজান রেস্টুরেন্টে দেশি-বিদেশি নাগরিকদের জিম্মি করে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হওয়ে উদ্ধারের চেষ্টা করতে গেলেই গুলিতে ও গ্রেনেড বিস্ফোরণে ২ পুলিশ কর্মকর্তা খুন হন। সারা রাত উদ্ধার অভিযানের পরিকল্পনা শেষে সকালে সেনাবাহিনী গিয়ে নিয়ন্ত্রণ নেয় রেস্টুরেন্টের। তবে তার আগেই হামলাকারীরা ১৭ বিদেশিসহ ২০ জনকে ধারাল অস্ত্রের আঘাতে হত্যা করে।

এখানে আরও উল্লেখ্য যে, এ মামলার এফআইআর হাতে পাওয়ার পর বুধবার দুপুরে ঢাকার মহানগর হাকিম স্নিগ্ধা রানী চক্রবর্তী তদন্ত শেষে ২৪ আগস্টের মধ্যে পুলিশকে প্রতিবেদন দিতে বলেছেন।

জেইউ/জেএইচ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।