যানজট বৃষ্টিতে ঘরমুখো মানুষের দুর্ভোগ


প্রকাশিত: ১০:২৩ এএম, ০৫ জুলাই ২০১৬

আজ চাঁদ উঠলে আগামীকাল ঈদ। কিন্তু ঈদে ঘরে ফেরা মানুষের আনন্দ মাটি হতে বসেছে ঢাক-টাঙ্গাইল মহাসড়কে দীর্ঘ যানজটের কারণে। তার উপর রসিক বৃষ্টির বেরসিক আচরণ। রাজধানীতে বৃষ্টিতে ঘরমুখো যাত্রীদের বেহাল অবস্থা। বাস টার্মিনালে যত্রতত্র কাদায় ব্যাগ, লাগেজ টানাটানিতেও অসহনীয় দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে যাত্রীদের। অনেকে রিকশা কিংবা সিএনজি থেকে নেমে টার্মিনাল কিংবা কাউন্টার পর্যন্ত যেতে যেতেই ভিজে একাকার।

জানা গেছে, ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে তীব্র যানজটে চন্দ্রা ও আশপাশে ৫৫ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। আশুলিয়া-চন্দ্রা ও আব্দুল্লাহপুর-চন্দ্রা এই দুই রুটের যানজট বঙ্গবন্ধু সেতু পর্যন্ত গিয়ে ঠেকেছে। যানজট এতটাই তীব্র আকার ধারণ করেছে ১০-১২ ঘণ্টায় ৫০ কিলোমিটারও পথ অতিক্রম করতে পারেনি অনেকেই। এর প্রভাব পড়েছে বাস টার্মিনালে। যাত্রীরা এসে কাউন্টারে ভিড় জমালেও বাসের দেখা মিলছে না।

মঙ্গলবার দুপুরে গাবতলী আন্তঃজেলা বাস টার্মিনালে গিয়ে দেখা যায়, এক কোলে হাতে শিশু বাচ্চাদের কোলে নিয়েছেন মা অন্য হাতে লাগেজ। আবার স্বামী কিংবা অন্য সহযাত্রীর কাছেও লাগেজ ও ব্যাগ। বৃষ্টিতে ভিজতে ভিজতে এক রকম কাক ভেজা দশা যাত্রীদের। কাউন্টার গুলোতেও প্রচণ্ড ভীড় লক্ষ্য করার মতো।

মৌসুমী আক্তার নামে একযাত্রী বলছিলেন, ঈদ না হলে আর যেতামই না। সকাল তেকে বৃষ্টি নেই। যেমনি বাস ছাড়ার সময় হয়েছে ওমনি বৃষ্টি। যদিও বৃষ্টি পড়া বন্ধ কিংবা কমানোতে হাত নেই কারো তবুও ক্ষোভ তার।

শুধু ঠাকুরগাঁওয়ের যাত্রী মৌসুমী নয়, বৃষ্টি বাগড়ায় আজকের ঘরমুখো হাজারো যাত্রীর দশা একই। তবে বৃষ্টি বিড়ম্বনাকে উপেক্ষা করে পরিবারের সঙ্গে ঈদ আনন্দে মিলিত হতে রাজধানীর গাবতলী আন্তঃজেলা বাস টার্মিনালের কাউন্টার গুলোতে ভিড় করেছে ঘরমুখো হাজারো মানুষ।

dhaka-tangail

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, দেশের বিভিন্ন স্থানে যেতে মানুষ ভীড় করেছে গাবতলীতে। কাউন্টার-গুলোতে উপচে পড়া ভিড়। কাউন্টারের ভেতরে নির্ধারিত যানবাহনের জন্য অনিশ্চিত অপেক্ষায় রয়েছে অসংখ্য যাত্রী। তাদের মধ্যে নারী, শিশু ও বৃদ্ধদের অবস্থা শোচনীয়। ভ্যাপসা গরমে বাতাসও যেন গলদঘর্ম। মানুষ আর লাগেজে একাকার সব।

আকমল হোসেন নামে এক যাত্রী বলেন, ‘নওগাঁ যাবো। টিকিট আগে থেকেই কাটা আছে। যানজটের কথা চিন্তা করে দুই ঘণ্টা আগেই কাউন্টারে আসছি। কিন্তু এখানে এসে তো উল্টো বিড়ম্বনায় পড়েছি। রাস্তায় বাস। কখন আসবে বলা যাচ্ছে না। এখানে বসার ভালো জায়গা পাইনি। ভ্যাপসা গরমে বাচ্চার অবস্থা কাহিল।

হানিফ, শ্যামলি, এসআর, দেশ ট্রাভেলসসহ বেশ কয়েকটি কাউন্টারের সামনে যাত্রী সেবায় নাঙ্গানো হয়েছে সামিয়ানা। অতিরিক্ত চেয়ারও দেয়া হয়েছে। দূর থেকে যারা বাস কাউন্টারে এসে অপেক্ষা করছেন তাদের জন্যই মূলত সেবামূলক এমন পদক্ষেপ নিয়েছে পরিবহন মালিক কর্তৃপক্ষ।

শ্যামলি বাস পরিবহনের বাস কাউন্টার কর্মকর্তা আশরাফ আলী বলছেন, বৃষ্টি বিঘ্নিত আবহাওয়ায় যাত্রীদের বিড়ম্বনার কথা চিন্তা করেই কাউন্টারের সামনে অতিরিক্ত চেয়ার দেয়া হয়েছে। সামিয়ানা টাঙ্গানো হয়েছে। ঈদে যাত্রীদের চাপ সবচেয়ে বেশি থাকে। তাই সবার বসার স্থান সংকুলান হয় না। তাছাড়া বৃষ্টির কারণে ভোগান্তি একটু তো হচ্ছেই।

হানিফ পরিবহনের সহকারি ম্যানেজার গোপাল বাবু জানান, আমরা বিড়ম্বনা থেকে যাত্রীদের রক্ষা করতে আরও চেয়ারের ব্যবস্থা করছি। লম্বা করে অতিরিক্ত সামিয়ানা টাঙ্গানোর ব্যবস্থা চলছে।

এ ব্যাপারে এসআর ট্রাভেলসের গাবতলী শাখার ম্যানেজার মো. আমিন নবী জাগো নিউজকে বলেন, আমাদের বেশি রুটে বাস চলে না। ৩/৪টি রুটে বাস চলে। বাস সংখ্যাও সীমিত। কাউন্টারও ছোট। তাই একটু কষ্ট তো হচ্ছেই। তবে অতিরিক্ত চেয়ারের ব্যবস্থা করায় অনেক যাত্রী বসতে পারছেন।

জেইউ/জেএইচ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।