শোকের ছায়া নিয়ে ঈদের চাঁদের অপেক্ষা


প্রকাশিত: ০৯:৪০ এএম, ০৫ জুলাই ২০১৬

আজ শাওয়ালের চাঁদ দেখা গেলে কাল ঈদ। আর আজ যদি চাঁদ না দেখা যায় তবে পরশু। ঈদের খুশিতে মাতবে সবাই, রেডিও-টিভিতে বাজবে, ‘রমজানের ওই রোজার শেষে এল খুশির ঈদ।’    

উৎসবপ্রিয় মানুষের ঈদটাও যাওয়ার কথা ছিল খুশি-আনন্দে। কিন্তু শুক্রবারের একটি নৃশংস ঘটনা দৃশ্যপট বদলে দিয়েছে। ঘরে ঘরে এখন ঈদের চাঁদের অপেক্ষা থাকলেও আর্টিজানের শোকের ছায়ায় ভাটা পড়ছে সেই উৎসবে।   

ঈদুল ফিতরের তারিখ নির্ধারণ ও শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখার সংবাদ পর্যালোচনা ও সিদ্ধান্ত নিতে আজ সন্ধ্যা ৭টায় বৈঠকে বসবে জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটি।  

বাংলাদেশের ইতিহাসে নৃশংসতম জঙ্গি হামলার পর ঈদের জামাত নিয়েও বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করছে পুলিশ। ডিএমপি কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া ইতোমধ্যে আহ্বান জানিয়েছেন, জাতীয় ঈদগাহে নামাজ পড়তে আসার সময় কেউ যেন ব্যাগ বা কেনো পোটলা না নিয়ে আসেন।

মৎস ভবন, দোয়েল চত্বর, ইবিএল ও জিরো পয়েন্টে চেক পোস্ট থাকবে বলেও জানিয়েছেন তিনি। অবশ্য নিরাপত্তা নিয়ে নির্দিষ্ট কোনো হুমকি নেই বলেও আশ্বস্ত করেছেন তিনি।

এদিকে শুক্রবারের হামলার পর ওই ঘটনায় সন্ত্রাস দমন আইনে একটি মামলা হয়েছে। ওই ঘটনায় দুই দিনের রাষ্ট্রীয় শোকও পালন করেছে বাংলাদেশ।

নৃশংসতার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে সরব হয়েছেন অনেকে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও বলেছেন, হামলাকারীদের শিকড় খুঁজে বের করা হবে।

গেল দু’বছরে বাংলাদেশে হামলার শিকার হয়েছেন একাধিক সমমনা ব্লগার, ধর্মীয় সংখ্যালঘু ও ভিন্ন মতাবলম্বী, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, তৃতীয় লিঙ্গের অধিকার আদায়ে সোচ্চার কর্মী, লেখক, প্রকাশক। এসব হামলার বেশিরভাগেরই দায় স্বীকার করে বিবৃতি এসেছে মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেটের (আইএস) নামে।

বাংলাদেশ সরকার অবশ্য বলে আসছে, এ দেশে আইএসের কোনো অস্তিত্ব নেই। দেশীয় বিভিন্ন জঙ্গি সংগঠন এসব হামলার সঙ্গে জড়িত।

তবে সর্বশেষ শুক্রবারের হামলা ছাপিয়ে গেছে আগের সবকটি হামলার ভয়াবহতা। এই হামলায় দেশি-বিদেশি মিলে সর্বমোট ২০ সাধারণ মানুষ ও দুই পুলিশ নিহত হয়েছেন। জিম্মি উদ্ধারে পরিচালিত সেনা কম্যান্ডো অভিযানে নিহত হয়েছেন হামলাকারী ছয় জঙ্গিও। এই হামলারও দায় স্বীকার করে আইএস।  

এদিকে একে একে হামলাকারীদের পরিচয় যত বেরিয়ে আসছে তত বিষ্মিত হচ্ছেন মানুষ। জঙ্গি কর্মকাণ্ডে শিক্ষিত তরুণদের জড়িয়ে পড়ার বিষয়টি ভাবিয়ে তুলছে সবাইকে। প্রশ্ন উঠছে অভিভাবকদের ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ভূমিকা নিয়ে।  

হামলায় নিহতদের কফিনে সোমবার ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর নিহতদের মরদেহ হস্তান্তর করা হয় স্বজনদের কাছে। এই হামলায় নিহত সাত জাপানির মরদেহ আজ ভোররাতে টোকিও পৌঁছেছে।  

এনএফ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।