রাজধানীতে বেড়েছে মৌসুমী ভিক্ষুক


প্রকাশিত: ০৭:৪৪ এএম, ০৩ জুলাই ২০১৬

রমজান মাসে জাকাত-ফিতরা ও ঈদ উপলক্ষে দান-খয়রাত সংগ্রহে রাজধানীতে বেড়েছে মৌসুমি ভিক্ষুকের সংখ্যা। দেশের অন্যান্য শহরের তুলনায় ঢাকা শহরে জাকাত-ফিতরার টাকা তুলনামূলক বেশি পাওয়া যায়, আর এ কারণে রমজানের সময় বেড়ে যায় মৌসুমি ভিক্ষুকের সংখ্যা। রাজধানীর প্রধান প্রধান সড়কসহ অলিগলি, ফুটপাত, ট্রাফিক সিগন্যাল, বিপণিবিতান, বিভিন্ন হোটেল-মোটেলের সামনে, রেস্তোরাঁ, বাস টার্মিনাল, লঞ্চ ও রেল স্টেশন, অফিস পাড়া, মসজিদ-মাজার, কবরস্থান এমনকি বাসা-বাড়িতে নানা ভঙ্গিমায় ভিক্ষা করে তারা।

মৌসুমি একাধিক ভিক্ষুকের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তাদের মধ্যে বেশির ভাগই এসেছেন ময়মনসিংহ, কিশোরগঞ্জ, নেত্রকোনা, টাঙ্গাইল, জামালপুর, রংপুর, গাইবান্ধা, কুড়িগ্রাম, ফরিদপুর, মাদারীপুর, মানিকগঞ্জ ও সিরাজগঞ্জ জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে।

রাজধানীর ধানমন্ডি ২৭ নম্বর রোডে ভিক্ষা করছিলেন সিদ্দিকুর রহমান নামের এক বয়স্ক ভিক্ষুক। তিনি জানান, ঢাকায় এসেছেন গাইবান্ধা থেকে। রমজানের শুরুতে এলাকার তিনজন মিলে ভিক্ষা করতে ঢাকায় এসেছেন।

beggar

সিদ্দিকুর রহমান জাগো নিউজকে বলেন, গতবার রোজায় ভালোই টেকা (টাকা) পাইছিলাম। এবারও রোজগার ভালোই, প্রতিদিন গড়পড়তা পেরায় (প্রায়) ৮০০ থ্যাইক্যা এক হাজার টেকা (টাকা) পাই। রমজান মাস শেষে ঈদের আগের দিন বাড়িতে চইলা যামু।

আক্কাস আলী নামের আরেক মৌসুমী ভিক্ষুক প্রথমে কথা বলতে রাজি না হলেও পরে জানান, সে আসলে প্রকৃত ভিক্ষুক নন। সিরাজগঞ্জে দিনমজুরের কাজ করেন। রমজান মাসে ঢাকার মানুষ অনেক টাকা-পয়সা ভিক্ষা দেয় বলে এসেছেন।

তবে আক্কাস আলী অভিযোগের সুরে বলেন, সব জায়গা বা রাস্তায় ভিক্ষা করা যায় না। যে রাস্তায় বা জায়গায় আগে থেকে ফকিররা ভিক্ষা করে, সেখানে গেলেই তারা তাড়িয়ে দেয়। আবার সেসব ভিক্ষুকের সর্দারগো টাকা দিলে ভিক্ষা করতে দেয়।

রাজধানীর নিউমার্কেট এলাকায় ফুটপাতে ভিক্ষুককে টাকা দিচ্ছিলেন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী নাইমুল ইসলাম। সে সময় তার সামনে আরো তিন-চারজন ভিক্ষুক জড়ো হয়ে ভিক্ষা আবদার করতে থাকে।

নাইমুল ইসলাম বলেন, আগের তুলনায় রাজধানীতে ভিক্ষুকদের সংখ্যা অনেক বেড়েছে। একজনকে টাকা দিতে গেলে আরো অনেকজন এসে হাজির হয়। কে যে প্রকৃত ভিক্ষুক তা বোঝাই কঠিন।

beggar

উল্লেখ্য, ভিক্ষাবৃত্তির অভিশাপ থেকে হতদরিদ্র মানুষকে মুক্তি দিতে পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে সরকার। এ পরিকল্পনার আওতায় ভিক্ষুকদের চিহ্নিত করে পুনর্বাসন করা হবে।

সম্প্রতি ঢাকাকে ভিক্ষুকমুক্ত করতে কূটনৈতিক ও দূতাবাসসহ ছয়টি এলাকাকে প্রাথমিকভাবে ভিক্ষুকমুক্ত ঘোষণা করেছে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন। এসব এলাকা ভিক্ষুকমুক্ত রাখতে নিয়মিত ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান পরিচালিত হবে। অভিযান চলাকালে কোনো ভিক্ষুককে ভিক্ষারত অবস্থায় পাওয়া গেলে আটক করে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়াধীন বিভিন্ন সরকারি আশ্রয়কেন্দ্রে পাঠিয়ে দেয়া হবে।

এএস/আরএস/আরআইপি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন jagofeature@gmail.com ঠিকানায়।