রাষ্ট্র পরিচালনাকারীরা জনবিচ্ছিন্ন : ড. কামাল হোসেন


প্রকাশিত: ১০:৪৫ এএম, ০২ জানুয়ারি ২০১৫

যারা রাষ্ট্র পরিচালনা করছে তারা জনবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিশিষ্ট আইনজীবী ও সংবিধানপ্রণেতা ড. কামাল হোসেন। শুক্রবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের কনফারেন্স লাউঞ্জে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।

তিনি বলেন, যারা রাষ্ট্র পরিচালনা করছে তারা জনবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। নাগরিকদের কথার কোনো মূল্য তাদের কাছে নেই। জনগণের কথা শোনার ক্ষমতা তারা হারিয়ে ফেলেছে।

মহান বিজয় দিবস- ২০১৪ উপলক্ষে `৪৩তম বিজয় দিবস এবং বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি শীর্ষক` এ আলোচনা সভার আয়োজন করে বাংলাদেশ মানবাধিকার পর্যবেক্ষণ পরিষদ।

ক্ষমতাসীনদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে কামাল হোসেন বলেন, আমি বলছি না আপনারা পদত্যাগ করুন। আমি বলছি আপনারা মুখ খুলুন। মুখ খুলে সমস্যার সমাধান করুন।

কামাল হোসেন বলেন, যারা ক্ষমতায় আছে তারা ব্যাংক ও শেয়ারবাজার লুট করে জনগণকে দুই আঙুল (ভি চিহ্ন) দেখাচ্ছে। সরকার মনে করে যেকোনো মূল্যেই হোক, আমরা ক্ষমতায় আছি। ঐতিহ্যের সবগুলো খাত নষ্ট করে হলেও তারা ক্ষমতায় থাকতে চায়। কেউ যদি মনে করে আজীবন ক্ষমতায় থাকবো, তবে তারা পাগলের স্বর্গে বসবাস করছে।

ড. কামাল বলেন, ক্ষমতার মালিক জনগণ। মালিক এমনি এমনি হয়নি। অনেক রক্তের বিনিময়ে এই মালিকানা পেয়েছে। তাদের অধিকার প্রতিষ্ঠা করা রাষ্ট্রের কাজ। যদি জনগণের স্বাধীনতা বিলীন করা হয়, তবে হাজার হাজার শহীদের আত্মাকে অবমাননা করা হবে। কেন রাষ্ট্র আজ মানবিকতা হারিয়েছে? যদি রাষ্ট্রের মালিকরা ঐক্যবদ্ধ থাকতো তবে তারা এটা করতে পারতো না। আমরা মালিকরাই বেহিসাবি হয়ে গেছি। তাই রাষ্ট্র আজ অমানবিক হয়ে গেছে।

সর্বসাধারণের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, আমাদের আর চুপ করে বসে থাকলে হবে না। গ্রামবাসী ভাই-বোনদের মনে রাখতে হবে আপনারাই রাষ্ট্রের মালিক। ছেলে-মেয়েদের এই ক্ষমতা সম্পর্কে বুঝাতে হবে। এই ক্ষমতার উৎস কি, মালিকের কাজ কি সেটা বুঝাতে হবে। আপনাদের অসহায় বোধ করে বসে থাকার কোনো কারণ নেই। ঘরে ঘরে মানবাধিকার রক্ষা করার চেষ্টায় দুর্গ গড়ে তুলতে হবে। রাষ্ট্রের যেখানে যে ধরনের সংস্কার প্রয়োজন সেটা আমাদেরই করতে হবে। আশা করছি বিজয় আমাদের হবেই।

ড. কামাল বলেন, আগামী ৫ তারিখের পর আদালত খুলবে। সেখানে জিহাদের বাবাকে অবমাননার জন্য যে শুনানি হবে, আমি সেই শুনানিতে যাব। শুধু এটা না আরো যতো অবমাননার শুনানি হবে আমি সবগুলোতে যাব। যারা এই অবমাননাকারীদের আশ্রয় দিয়েছে তাদেরও বিচার হোক, আমি তার জন্য আদালতে যাব।

আয়োজক সংগঠনের সভাপতি নুরুল হুদা মিলুর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন- মানবাধিকার পর্যবেক্ষণ পরিষদের উপদেষ্টা কাজী সিরাজ, বিএইচআরএমসির পরিচালক ব্যারিস্টার মেজর (অব.) সরোয়ার হোসেন, নির্বাহী পরিচালক তালুকদার মুনিরুজ্জামান মনির প্রমুখ।

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।