ভেজাল ওষুধ উৎপাদনকারী ২০ কোম্পানির লাইসেন্স বাতিলের সুপারিশ


প্রকাশিত: ০৪:৩২ পিএম, ১২ জুন ২০১৬

ভেজাল ওষুধ উৎপাদনকারী ২০ কোম্পানির লাইসেন্স বাতিলের প্রক্রিয়া দ্রুত করার তাগিদ দিয়েছে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি। কমিটির বৈঠকে ওষুধ প্রশাসন অধিদফতরের কার্যক্রম নিয়ে অভিযোগ উত্থাপন করা হয়।

আলোচনা শেষে ভেজাল ওষুধ প্রস্তুতের সঙ্গে জড়িত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রয়োজনে আইন ও বিধিমালা সংশোধনের সুপারিশ করা হয়েছে।

রোববার দুপুরে জাতীয় সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন কমিটির সভাপতি শেখ ফজলুল করিম সেলিম। বৈঠকে কমিটির সদস্য এবং স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম, প্রতিমন্ত্রী জাহিদ মালেক, ডা. আ ফ ম রুহুল হক, ডা. মো. ইউনুস আলী সরকার ও সেলিনা বেগম এবং সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

কমিটি সূত্র জানায়, বৈঠকে ভেজাল ওষুধ উৎপাদনকারী কোম্পানিগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের অগ্রগতি সম্পর্কে জানতে চাইলে মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়, সুপারিশ কার্যকর করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। কিন্তু আইনি কিছু জটিলতা থাকায় সময় লাগছে। কমিটির পক্ষ থেকে প্রয়োজনে আইন সংশোধন করে দ্রুত সুপারিশ করার তাগিদ দেয়া হয়।

বৈঠকে কমিটির সুপারিশ সত্ত্বেও অভিযুক্ত কোম্পানির পক্ষে ওকালতি করে অধিদফতরের বিবৃতি পাঠানোর কারণ জানতে চাওয়া হয়। কিন্তু অধিদফতরের কর্মকর্তা এই অভিযোগ অস্বীকার করেন। তখন সভাপতি অধিদফতরের বিবৃতি ছাপানো পত্রিকার কাটিং বৈঠকে উত্থাপন করেন।

এসময় কমিটির সদস্যরা দাবি করেন, অধিদফতরের অর্থলোভী ও দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের কারণেই ভেজাল ও নিম্নমানের ওষুধ প্রস্তুত প্রতিরোধ করা যাচ্ছে না। তারা প্রস্তুতকারী ব্যাক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার পাশাপাশি এসব দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিতের দাবি জানান।

উল্লেখ্য, গত ২০ এপ্রিল অনুষ্ঠিত সংসদীয় কমিটির বৈঠেকে বিশেষজ্ঞ তদন্ত প্রতিবেদনের আলোকে ভেজাল ওষুধ উৎপাদনের সঙ্গে জড়িত ২০টি ওষুধ কোম্পানির ওষুধ উৎপাদনের লাইসেন্স বাতিলের সুপারিশ করা হয়। আর ১৪টি কোম্পানির সব ধরনের এন্টিবায়োটিক (নন-পেনিসিলিন, পেনিসিলিন ও সেফালোস্পোরিন গ্রুপ) উৎপাদনের অনুমতি বাতিল এবং ২২টি কোম্পানির পেনিসিলিন ও সেফালোস্পোরিন গ্রুপের এন্টিবায়েটিক উৎপাদনের অনুমতি স্থগিত করতে বলা হয়।

এছাড়া দু’টি কোম্পানির মানবদেহে বাহ্যিকভাবে ব্যবহার্য ওষুধ, একটিকে প্রাণিসম্পদে ব্যবহার্য ওষুধ এবং অপর একটিকে সেফালোস্পোরিন বাদে অন্যান্য গ্রুপের ওষুধ উৎপাদনের অনুমতি অব্যাহত রাখার সুপারিশ করা হয়।

ভেজাল ওষুধ উৎপাদনকারী কোম্পানিগুলো হলো- এক্সিম ফার্মাসিউটিক্যাল, এভার্ট ফার্মা, বিকল্প ফার্মাসিউটিক্যাল, ডলফিন ফার্মাসিউটিক্যাল, ড্রাগল্যান্ড, গ্লোব ল্যাবরেটরিজ, জলপা ল্যাবরেটরিজ, কাফিনা ফার্মাসিউটিক্যাল, মেডিকো ফার্মাসিউটিক্যাল, ন্যাশনাল ড্রাগ, নর্থ বেঙ্গল ফার্মাসিউটিক্যাল, রিমো ক্যামিকেল, রিদ ফার্মাসিউটিক্যাল, স্কাইল্যাব ফার্মাসিউটিক্যাল, স্পার্ক ফার্মাসিউটিক্যাল, স্টার ফার্মাসিউটিক্যাল, সুনিপুন ফার্মাসিউটিক্যাল, টুডে ফার্মাসিউটিক্যাল, ট্রপিক্যাল ফার্মাসিউটিক্যাল এবং ইউনিভার্সেল ফার্মাসিউটিক্যাল লিমিটেড।  

এইচএস/এসকেডি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।